নাম শুনেই বুঝতে পারছেন নিশ্চয়ই যে সিম সোয়্যাপ বলতে সিম কার্ডের পরিবর্তন বোঝায়। সিম পালটে এক নতুন জালিয়াতি শুরু হয়েছে। কান্ডটি চলাকালীন যদি কোনও কাজের সূত্রে ফোন ব্যবহার করতে চান, ব্যর্থ হবেন হয়তো। তা ছাড়া বিন্দুবিসর্গ টেরটি পাবেন না। কারণ তখন আপনার সিম কার্ড কাজ করবে না, তার ক্লোন করে হ্যাকাররা হাতিয়ে নেবে সব তথ্য।
তার পর আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে সেখান থেকে টাকা ট্রান্সফার করে নেওয়া হবে। কিছুদিন আগেই টুইটারের অন্যতম আবিষ্কর্তা ও সিইও জ্যাক ডরসির অ্যাকাউন্টও এভাবেই হ্যাক করা হয়েছিল। তবে বড়োসড়ো কোনও ক্ষতি হওয়ার আগেই তিনি ও তাঁর টিম প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করে – আর্থিক ক্ষতি হয়নি।
ঠিক কীভাবে ফাঁদে ফেলে প্রতারকরা?
তার আগে আরও জরুরি একটি বিষয় জানা দরকার। সিম কার্ডে কোনও সমস্যা হলে আপনি কী করেন? সার্ভিস প্রোভাইডারের দ্বারস্থ হন, তাই তো? সার্ভিস প্রোভাইডার আপনার আগের সিমটি ব্লক করে দেন, নতুন সিম ইস্যু করা হয় এবং খানিকক্ষণের মধ্যেই তা কার্যকর হয়েও যায়। তার মধ্যে পুরোনো কার্ডের সমস্ত তথ্য জমা থাকে।
জালিয়াতির ক্ষেত্রে পিশিং বা ভিশিংয়ের মাধ্যমে প্রথমে আপনার কাছে ফোন আসবে, সার্ভিস প্রোভাইডারের তরফ থেকে সিম কার্ড আপডেট করার অছিলায় প্রতারকেরা নানা তথ্য জানতে চাইবে। তার মধ্যে আধার নম্বর আর সিম কার্ডের নম্বরটা পেয়ে গেলেই তাদের কাজ হাসিল হয়ে যাবে।
এবার তারা আপনার সিম অকেজো করে ফের নতুন একটির আবেদন জানাবে সার্ভিস প্রোভাইডারের কাছে। সেই সংস্থা বৈধ তথ্য দেখে সন্দেহ প্রকাশ না করেই নতুন সিমের ব্যবস্থা করবে। আর সেটি কার্যকর হলেই আপনার সমস্ত ব্যক্তিগত তথ্য চলে যাবে তৃতীয় পক্ষের হাতের মুঠোয়, ফলে অ্যাকাউন্ট ফাঁকা করে ফেলতেও সময় লাগবে না।
এর কোনওটাই কিন্তু আপনি জানতেও পারবেন না। তার কারণ সিম কাজ করছে না বলে কোনও এসএমএস ঢুকবে না। যখন আপনার সিম আবার কাজ করতে আরম্ভ করবে, তখনই বিপর্যয়ের আস্তিত্ব টের পাওয়া যাবে।
কীভাবে নিজেকে বাঁচানো সম্ভব এই ধরনের প্রতারণা থেকে?
. আপনার ফোন নম্বর সোশাল মিডিয়ায় দেবেন না, অচেনা কারও সঙ্গে আধার ডিটেল শেয়ার করবেন না।
. ফোনে অ্যান্টি পিশিং আর অ্যান্টি ম্যালওয়্যার প্রোটেকশন লাগিয়ে রাখুন।
. ব্যাঙ্ক যদি আপনাকে প্রতিটি আদানপ্রদানের এসএমএস বা মেল পাঠাতে চায়, তা হলে সে সুবিধে নেওয়া উচিত।
. সাধারণত ব্যাঙ্ক বা মোবাইল সার্ভিস প্রোভাইডারের তরফে ফোনে কোনও কাজ করা হয় না। তাই ‘ব্যাঙ্ক থেকে বলছি’ বা ‘ফোন কোম্পানি আপনাকে বিশেষ সুবিধে দিচ্ছে’ বলে ফোন এলেই বিশ্বাস করবেন না, সাবধান হোন।
. সব সময় চেষ্টা করুন অরিজিনাল সফটওয়্যার ব্যবহারের, ফোন এবং কম্পিউটার – দু’টি ডিভাইসের ক্ষেত্রেই।
. ফোনের সিকিউরিটি সেটিং ঘাঁটবেন না। অ্যান্টি ভাইরাস প্রোটেকশন নেওয়াও খুব দরকারি।
. সিম আপডেট বা বদল সংক্রান্ত কোনও মেল পেলেও খুলবেন না, তা ম্যালওয়্যার হতে পারে।