স্যার ডেভিড অ্যাটেনবরো। যাঁরা পরিবেশ নিয়ে বিন্দুমাত্র আগ্রহী, তাঁদের কাছে এর পর ভদ্রলোক সম্পর্কে আলাদা করে আর কিছু বলার থাকে না।
যদি আপনি এখনও এই ৯৪ বছরের তরুণ মানুষটির নাম না শুনে থাকেন, তা হলে জেনে নিন, এই পরিবেশবিদ যেভাবে পৃথিবীর প্রতি কোনায় ছড়িয়ে থাকা প্রাণীজগতের নানা তথ্য সামনে এনেছেন বিগত অর্ধ শতকের বেশি সময় ধরে, তার কোনও তুলনা হয় না।
গত বৃহস্পতিবার ইনস্টাগ্রাম জয়েন করেন স্যার ডেভিড, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাঁর ফলোয়ারের সংখ্যা ১.৫ মিলিয়ন ছাড়ায় – এটি সোশাল মিডিয়ার ইতিহাসে এক রেকর্ড নিঃসন্দেহে। তাবড় খেলোযাড় বা চিত্রতারকার ভক্তসংখ্যাও এই হারে বাড়তে দেখা যায় না!
স্যার ডেভিড অবশ্য তাঁর প্রথম পোস্টেই স্বীকার করে নিয়েছেন যে, তিনি সোশাল মিডিয়ায় সেই অর্থে স্বচ্ছন্দ নন এখনও। তাঁর টিমের দুই সদস্য তাঁর পরামর্শমতো অ্যাকাউন্ট হ্যান্ডেল করবেন। তবে এতদিনের অভ্যেস ভেঙে প্রকাশ্যে আসার কারণটাও জানিয়েছেন তিনি।
“গত ৬০ বছর ধরে আমি রেডিও ও টেলিভিশনে প্রচুর অনুষ্ঠান করেছি। কিন্তু ইনস্টাগ্রামে এই প্রথমবার পা রাখলাম। কারণটা আমার নিজের কাছে খুব পরিষ্কার — আমি আরও বহু মানুষের কাছে পৌঁছতে চাই, তাই যোগাযোগের এই নতুন মাধ্যমে যাত্রা শুরু করলাম। পৃথিবী মোটেই ভালো নেই। মহাদেশগুলো জ্বলে-পুড়ে খাক হচ্ছে, হারিয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার বন্যপ্রাণী। মাছের বহু প্রজাতি বিলুপ্ত। গলে যাচ্ছে হিমবাহ। আমরা জানি কী করা উচিত। কিন্তু করছি কী?”
আআত্মপ্রকাশেই তাঁর বার্তায় সাড়া দিয়েছেন বহু মানুষ। আপাতত নিয়মিতভাবে নানা রেকর্ডেড বার্তার মাধ্যমে পরিবেশরক্ষার জন্য জনচেতনা গড়ে তুলতে চান এই বর্ষীয়ান মানুষটি। তাঁর রিসার্চের বিপুল সম্ভার থেকে পোস্টও করা হবে।
প্রতি বছর নিয়ম করে আগুন লাগছে পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা বনভূমিতে। অতিরিক্ত মাত্রায় শিকারের ফলে নদী ও সমুদ্রে থাকা বহু মাছের প্রজাতি লুপ্ত হয়ে গিয়েছে। স্রেফ খাবার উৎপাদনের জন্য নষ্ট করে ফেলা হয়েছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য। বিশেষজ্ঞরা দাবি করেন যে, তার পরেও আমরা খাদ্যের অন্ততপক্ষে ৪০ শতাংশ নষ্ট করে ফেলি।
তবে কী ভাগ্যিস এখনও স্যার ডেভিডের মতো মানুষ আছেন এই দুনিয়ায়, যাঁরা সব শেষ হওয়ার আগে আশা হারাতে রাজি নন। বরং আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে গিয়ে তাঁদের পরিবেশরক্ষায় উদ্বুদ্ধ করে তুলতে চান। একেই বলে স্পিরিট!
ফোটো: ইনস্টাগ্রাম