কোভিড ও তার ভ্যাকসিন সম্পর্কে শেষ কথা বলার জায়গায় এখনও আসিনি আমরা – রোজই নিত্যনতুন তত্ত্ব ও ধারণা উঠে আসছে। তারই মধ্যে একেবারে সাম্প্রতিকতমটির জোগান দিয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা।
দেখা গিয়েছে, অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ প্রথমটির চেয়ে ৪৫ সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়ার পর যদি ছ’ মাসের মাথায় তিন নম্বর ডোজ দেওয়া যায়, তা হলে টি সেল ও অ্যান্টিবডি ইমিউন রেসপন্সের মাত্রা অনেক ভালো হয়। তবে এই গবেষণাপত্রটি এখনও প্রকাশিত হয়নি, প্রি-প্রিন্ট স্টেজে রয়েছে। কিন্তু তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে সর্বস্তরে।
ব্রিটিশ সরকার ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে যে তারা তিন পঞ্চমাংশ সাবালক নাগরিককে দু’টি ডোজই দিয়ে দিয়েছে, সামনের শীতের আগেই সম্ভবত সেখানে তৃতীয় বুস্টার শটের ব্যবস্থা করা হবে। সরকারের ধারণা, তাতে হাসপাতালগুলির উপর অতিরিক্ত চাপ পড়বে না। কিন্তু দুনিয়ার বহু দেশে যেখানে টিকার চরম আকাল চলছে, সেখানে একটি দেশের বাসিন্দাদের তিনটি ডোজ দেওয়াটা কতটা নৈতিক হবে, তা নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত প্রধান বিজ্ঞানী অ্যান্ড্রু পোলার্ড বলেছেন, “যে সব দেশে ভ্যাকসিনের আকাল চলছে, তাঁদের ক্ষেত্রে আমাদের গবেষণা নিশ্চিতভাবেই আশার আলো দেখাবে। তার কারণ আমরা বেশ বুঝতে পারছি, ১০ মাসের ব্যবধানে আমাদের টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিলেও শরীরে প্রচুর অ্যান্টিবডি তৈরি হবে। তৃতীয় বুস্টার শটের সাফল্যের হারও খুব ভালো, তা সব ভ্যারিয়ান্টের বিরুদ্ধে কাজ করছে। তবে তৃতীয় শট আদৌ লাগবে কিনা, সেটা প্রশ্ন।”
একটা সময়ে হয়তো নানা ভ্যারিয়ান্টের বিরুদ্ধে দীর্ঘকালীন ঢাল হিসেবে ব্যবহারের জন্য বুস্টার শট দিতে হতে পারে – তবে তার আগে গোটা পৃথিবীর মানুষকে টিকাকরণের আওতায় নিয়ে আসা সবচাইতে জরুরি কাজ – এমনটাই মনে করেন অনেকে।
পাশাপাশি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং জনসন অ্যান্ড জনসনের ভ্যাকসিনের বিরুদ্ধে মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার অভিযোগ ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। নির্মাতাদের বক্তব্য, যত মানুষ এই ভ্যাকসিন নিয়েছেন, তার এক অতি ক্ষুদ্র অংশের ব্লাড ক্লটের সমস্যা হয়েছে, তা বিরাট সাইড এফেক্ট নয়। যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের সবারই কিছু না কিছু কো-মর্বিডিটি ছিল। তা নিয়ে জলঘোলা না করে ভ্যাকসিনেশনের কাজে গতি আনাটাই লক্ষ্য হওয়া উচিত।