রাষ্ট্রপুঞ্জের মহিলা শাখার তরফে ২৫ নভেম্বর দিনটি মহিলাদের বিরুদ্ধে ঘটে চলা হিংসা থামানোর উদ্দেশে উৎসর্গ করা হয়েছে। কিন্তু খাতায় কলমে হিসেব করতে গিয়ে চোখ কপালে উঠেছে এই আন্তর্জাতিক সংস্থার। গত কয়েক মাসে সমস্যা এতটাই বেড়েছে যে রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুয়েতেরেস তাঁর সাম্প্রতিক বার্তায় বলেছেন, নারী ও শিশুর উপর হিংসা ‘শ্যাডো প্যানডেমিক’-এর আকার নিয়েছে।
তৃতীয় বিশ্বের গরিব দেশগুলিতেই যে কেবল এ সমস্যা আছে, তা কিন্তু নয়। বাড়ির বাইরে থাকলে যে সব সাংসারিক অশান্তি ঢেকে রাখা যেত, তা বিরাট আকার ধারণ করছে অতিমারির কারণে বাড়ির চার দেওয়ালের মধ্যে আটকে থাকার ফলে। কাজ হারিয়েছেন অসংখ্য মানুষ, আর্থিক অনিশ্চয়তাও গলায় ফাঁসের মতো চেপে বসছে ক্রমশ। এই পরিস্থিতিতে নারী আর শিশুর উপর অত্যাচার করেই যাবতীয় হেরে যাওয়ার শোধ তুলছে উন্নত বিশ্বের পুরুষও।
গুয়েতেরেস তাঁর টুইটার বার্তায় পৃথিবীর সব মানুষ, সব সংগঠন ও সরকারের কাছে এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরির আবেদন জানিয়েছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে আগামী ১৬ দিন সর্বস্তরে হিংসা বিরোধী কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। আপাতত একেবারে তৃণমূল স্তরে কিছু সংগঠনকে বেছে নেওয়া হবে, তার পর তাদের আর্থিক ও অন্য সহায়তা দিয়ে গড়ে তোলা হবে এমনভাবে যাতে অসহায় নারী ও শিশুদের পাশে দাঁড়ানো যায়।
টুইটার এ বিষয়ে সাহায্যের জন্য লঞ্চ করছে বিশেষ কিছু ইমোজি। #GenerationEquality, #OrangeTheWorld, #16Days, #HumanRightsDay হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে বার্তা টাইপ করলেই দেখতে পাবেন সেই ইমোজিগুলি। সেই সঙ্গে চলবে আরও নানা ক্যাম্পেন।
করোনা অতিমারি ঠেকাতে সবচেয়ে বেশি সচেতন হওয়ার কথা ব্যক্তি মানুষের। আপনাকে মাস্ক পরতে হবে, আপনাকে বার বার ধুয়ে হাত সাফ করতে হবে, আপনাকেই মানতে হবে সামাজিক দূরত্ব। অন্য কেউ আপনার সমস্যা দূর করতে পারবে না। এই ছায়া অতিমারির হাত থেকে বাঁচার রাস্তাও কিন্তু আত্ম-সচেতনতাই। প্রতিটি মানুষকে ভিতর থেকে বিশ্বাস করতে হবে নারী-পুরুষের সমানাধিকারে। মেনে নিতে হবে যে সংসার সুখে থাকবে তখনই, যখন স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই পরস্পরের পাশে এসে দাঁড়াবেন। যে দুর্বল, তাকে আঘাত করলেই জীবন সুখের হয়ে উঠবে না। যতদিন না এই সচেতনতা তৈরি হবে, ততদিনে সমাধানে পৌঁছনো অসম্ভব!