কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ফের বাড়তে আরম্ভ করেছে কলকাতা এবং উত্তর চব্বিশ পরগনায়। গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় আক্রান্ত হয়েছে ১২৭ জন, উত্তর চব্বিশ পরগণায় ১২৯ জন। ব্যাপারটা এখনও হাতের বাইরে যায়নি, তবে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা রয়েছে বলেই ডাক্তাররা বার বার সাবধান হতে বলছেন।
জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে ধীরে ধীরে স্বাভাবিকতার দিকে ফেরার চেষ্টা করছে প্রশাসন, শিথিল হচ্ছে নিয়মকানুন। ট্রেন চলাচল পুরো স্বাভাবিক না হলেও আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। এই অবস্থায় কোভিড বিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে উদাসীনতা দেখালে একেবারেই চলবে না।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, কোভিড পজিটিভিটি রেট গত ২৪ ঘণ্টায় ১% থেকে বেড়ে ১.৮৫% হয়ে গিয়েছে এক লাফে। মৃত্যু হয়েছে মোট ১৪জনের, তার মধ্যে কলকাতার বাসিন্দা পাঁচজন, উত্তর চব্বিশ পরগণার তিন।
ডাক্তার ও স্বাস্থ্য আধিকারিকরা গত কয়েকদিন ধরে বার বার একটাই কথা বলছেন – সাধারণ মানুষ সচেতন না হলে তৃতীয় ওয়েভের ভয়াবহতা ঠেকিয়ে রাখা যাবে না। আর এই জায়গাটাতেই অদ্ভুত উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে। পুজোয় বেড়াতে যাওয়ার বুকিং চলছে, রেস্তোরাঁ, বাজারে ভিড় প্রায় আগের মতোই এবং সবচেয়ে চিন্তার বিষয় হচ্ছে মাস্ক পরছেন না অনেকেই। কমেছে স্যানিটাইজারের ব্যবহারও।
এত তাড়াতাড়ি ক্লান্তি এসে গেলে কিন্তু মুশকিল! কোভিড চট করে যাবে না, তার সঙ্গে লড়াই জারি রাখতে হবে। পুজোর পরে ছাত্রদের স্কুল-কলেজে ফেরানোর ভাবনাচিন্তা চলছে। তার মধ্যে থার্ড ওয়েভ এসে গেলে ফের ব্যাপারটা পিছোতে পারে। তাই ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেও সাবধানে থাকা খুব জরুরি।
আর একটা ব্যাপার খেয়াল রাখবেন – বাড়িতে বাচ্চা থাকলে তাদের একটু সাবধানে রাখুন। আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় তারা ভুগছে সবচেয়ে বেশি – ভাইরাল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে অনেকেই। সাধারণত নিউমোনিয়া ভাইরাস শীতকালে সক্রিয় হয়ে ওঠে, এবার সে নিয়মের স্পষ্টই ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে।
তবে শিশুর জ্বর, সর্দি-কাশি হলেই কোভিড হয়েছে বলে ধরে নেবেন না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন। গোড়ার দিকে কোভিডের থেকে নিউমোনিয়ার লক্ষণ আলাদা করা মুশকিল, বিশেষ করে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে। ফ্লু ভ্যাকসিন দিতে দেরি করবেন না।
গায়ে ঘাম বসলে, বৃষ্টিতে ভিজলে বা খুব ঠান্ডা এসিতে থাকলে কিন্তু বাচ্চার শরীর খারাপ হতে পারে। স্নগে নজর রাখুন তার ডায়েটের দিকেও। হালকা, সহজপাচ্য, পুষ্টিকর খাবার খাওয়ান। সেই সঙ্গে প্রচুর জল খাওয়ানোও জরুরি।