কোভিডের সংখ্যা কী হারে বাড়ছে, তা নিশ্চয়ই খবরে চোখ রাখলেই বুঝতে পারছেন? আপাতত আমরা এই অসুখটি সম্বন্ধে কী জানি? জ্বর-গলাব্যথার মতো প্রাথমিক কিছু সমস্যা হচ্ছে গোড়ায়, তার পর টেস্ত করালে ধরা পড়ছে যে রোগী করোনা ভাইরাসের আক্রমণে কাবু।
ভাইরাল ইনফেকশন ও অন্যান্য উপসর্গের চিকিৎসা চলবে, সেই সঙ্গে রোগীকে ১৪ দিন আইসোলেশনে থাকতে হবে। ফের কোভিড পরীক্ষার ফল নেগেটিভ হলে তবেই আবার তিনি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন।
অনেকের ক্ষেত্রেই কিন্তু এখানেই শেষ হচ্ছে না গল্প। নেগেটিভ রিপোর্ট আসার মাস দুয়েক পরেও এঁরা সুস্থ জীবনে ফিরতে পারছেন না, কারও কারও ক্ষেত্রে আরও বেশি সময় লাগছে। ক্লান্ত থাকছে কারও, কারও মাথাব্যথা, বমি বা পেট খারাপের সমস্যা যাচ্ছেই না। অল্পেই হাঁফ ধরে যাচ্ছে – কারণ ফুসফুস আগের ক্ষমতা ফিরে পাচ্ছে না কিছুতেই।
কাদের এই সমস্যা বেশি হচ্ছে?
যাঁদের রোগ সিরিয়াস হয়ে গিয়েছিল এবং হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল, তাঁদের তো হচ্ছেই। তা ছাড়া অ্যাসিমটোম্যাটিক বা খুব হালকা লক্ষণ দেখা গিয়েছিল এমন অনেক রোগীও লং কোভিড-এর শিকার হচ্ছেন। সবচেয়ে বড়ো সমস্যা হচ্ছে, এর কোনও চিকিৎসা নেই এখনও। ডাক্তাররা নিজেরাই আন্দাজমতো উপসর্গ দেখে নিদান দিচ্ছেন। যাঁদের ভ্যাকসিন নেওয়া হয়ে গিয়েছে, তাঁদের কারও কারও এই সমস্যা হওয়ার আশঙ্কাও থাকছে।
কীভাবে এড়াবেন এই সমস্যা?
সাবধান হোন, সচেতন হোন। ডাক্তারদের ধারণা, আমাদের নিজেদের হঠকারিতার ফলেই রোগ বাড়ছে। এখনই মুক্তকচ্ছ হয়ে বেড়াতে বেরিয়ে পড়বেন না। অনেকেই বলবেন, ‘এই তো আমরা কেমন সিকিম ঘুরে এলাম, কী সস্তায় হোটেল মিলছে – কিচ্ছু হবে না, অত ভয় পেও না তো!’ এ সব তত্ত্বে জাস্ট কান দেবেন না। একটা বছর যদি যে যেখানে আছেন, সেখানেই থাকা যায়, তা হলে রোগের ছড়িয়ে পড়াটা ঠেকানো সম্ভব।
মাস্ক ব্যবহার করুন, কোনও সারফেস স্পর্শ করার পর হাত ধুয়ে ফেলুন, স্যানিটাইজ করুন। নাকে বা মুখে হাত দেওয়ার অভ্যেস থাকলে সচেতন হয়ে সেটা করবেন না। রেস্তোরাঁর খাবার না খেয়ে বাড়িতেই হালকা, সহজপাচ্য খাবার বানিয়ে নিন। ভিড় এড়িয়ে চলতেই হবে। যতক্ষণ আপনি পাবলিক ট্রান্সপোর্টে যাতায়াত করছেন, ততক্ষণ সাবধানে থাকতেই হবে। বাড়ি ফিরে হাত-মুখ ধুয়ে নিন, জামাকাপড় কেচে ফেলুন।
ভ্যাকসিন নিলেই কিন্তু লং কোভিড হওয়ার আশঙ্কা নির্মূল হচ্ছে না। এ রোগের প্রকৃত ক্ষমতা আজও জানা যায়নি, চিকিৎসাব্যবস্থাও নিশ্ছিদ্র নয়। আগামী অন্তত দুটো বছর খুব সাবধানে থাকতে হবে।