লকডাউন ও তার পরবর্তী সময়ে এ দেশে কাজ হারিয়েছেন বহু মানুষ। এমন বেশ কিছু ক্ষেত্র আছে, যেখানে অবস্থা এখনও সঙ্গীন। কিন্তু তাও আশার আলো দেখা যাচ্ছে একটু একটু করে – এর চেয়ে খারাপ কিছু হওয়া সম্ভব নয় – এটুকু অন্তত পরিষ্কার।
নানা সংস্থা এবং বাজারের হাল হকিতত সম্পর্কে কিছু সমীক্ষা হয়েছে, তাতে প্রকাশ, আগামী এপ্রিল-মে মাস থেকে কিছু সংস্থায় ফের নিয়োগ শুরু হতে পারে। গত বছরের এই সময়ে কোভিডজনিত লকডাউনের কারণে থমকে গিয়েছিল সব ধরনের রিক্রুটমেন্ট, উলটে ছাঁটাই হয়েছিলেন বহু মানুষ।
এখনও পর্যন্ত অধিকাংশ সেক্টরেই নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু হয়নি, বাজারও মোটামুটি ধুঁকছে। এ বছর শেষ হওয়ার আগে তা স্বাভাবিক জায়গায় ফেরার কোনও আশা নেই। অনেক চাকরিজীবীর মাইনে কাটা গিয়েছে বিপুলভাবে। তাঁদের মনে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, এ বার কি মাইনেপত্র বাড়ার আশা আছে?
যে সব সেক্টর লাভের মুখ দেখেছে, সেখানে কিছু স্যালারি বাড়লেও বাড়তে পারে। কিছু ক্ষেত্র এখনও লাভের কড়ি ঘরে তুলতে পারেনি, আপনি তেমন কোনও পেশার সঙ্গে যুক্ত হলে বিশেষ আশা না রাখাই ভালো। তবে একটা কথা ঠিক, কম-বেশি সব সংস্থাই আপাতত আরও বেশ কিছুদিন বাড়ি থেকে কাজ করার সুবিধে দেবে, হয়তো মাঝে মাঝে অফিস যেতে বলা হবে। তাই মাইনে না বাড়লেও আপনার যাতায়াতের খরচ বাঁচবে।
যাঁদের ডিজিটাল ক্ষেত্রে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে, তাঁরা বাড়তি সুবিধে পাবেন। কারণ স্কুলশিক্ষা থেকে আরম্ভ করে চিকিৎসা – সব ক্ষেত্রেই ডিজিটাইজেশনের গুরুত্ব বাড়বে। যাঁরা কোনও সংস্থার কাজকর্মকে অনলাইনে সুচারুভাবে ট্রান্সফার করিয়ে দিতে পারবেন, তাঁদের চাকরি পাওয়ার সুযোগও বেশি।
আপনি যে ফিল্ডেই কর্মরত হোন না কেন, একটা ব্যাপার মেনে নিতেই হবে – গত কয়েক বছরে আপনার কাজের ক্ষেত্রে অজস্র পরিবর্তন এসেছে। মানবসম্পদ বলুন বা ব্যাঙ্কিং, সর্বত্র আপনাকে কাজ করতে হবে মূলত ডেটা নিয়ে। তাই ডেটা সায়েন্টিস্ট বা অ্যানালিস্টদের প্রয়োজন এখন সব চাইতে বেশি।
অতিমারি আরও একটা জিনিস শিখিয়েছে সবাইকে, যে কোনও পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকা জরুরি। সেই সঙ্গে বিপদের মধ্যে মাথা ঠান্ডা রেখে এগিয়ে যেতে হবে। লড়াইয়ের মানসিকতা ছাড়লে চলবে না। আপনিও এই আশাতেই কোমর বাঁধুন।
যাঁরা এখনও চাকরি পাননি, তাঁরা কিন্তু ভেঙে পড়বেন না। নিজের সিভি রেডি রাখুন, এই সময়ে কি কি পজিটিভ কাজ করলেন, তার হিসেব রাখুন। রোজগার না করলেও যে আপনি মানুষ হিসেবে অনেক কিছু শিখেছেন, তা নিয়ে তো কোনও সন্দেহ নেই? নিজের এই দিকগুলো তুলে ধরবেন পরের নিয়োগকর্তার সামনে।