. ভারতের বেশিরভাগ রাজ্যেই কোভিড সংক্রমণের হার আগের চাইতে অনেকটা কমেছে। পশ্চিমবঙ্গসহ বেশ কিছু রাজ্যে পজিটিভিটি রেট কমে গিয়েছে ৩%-এ। গোটা দেশের অবস্থাই প্রায় তাই। কিন্তু কেরল, রাজস্থান, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম আর মণিপুরে কিছুতেই সংক্রমণ কমছে না।
. খুব পিছনে থাকবে না মিজোরাম আর মহারাষ্ট্রও। সাপ্তাহিক পজিটিভিটি রেট সেখানেও ১০%-এর বেশি। কেন্দ্রের আশঙ্কা, এখনই খুব কড়াভাবে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন ঘোষণা করে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না হলে এই রাজ্যগুলি থেকেই কোভিডের তৃতীয় ওয়েভ শুরু হবে এবং তা পুরো দেশে ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় নেবে না। কেরলে পজিটিভিটি রেট ১১ শতাংশের নিচে ছিল বেশ কয়েক সপ্তাহ, তা বেড়ে ১৩% শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে এ সপ্তাহে। মহারাষ্ট্রেও দৈনিক সংক্রমণ রোজ বাড়ছে।
. পাশাপাশি অজস্র রোগী পোস্ট কোভিড সমস্যা নিয়ে হাসপাতালের দ্বারস্থ হচ্ছেন রোজ। সেকেন্ড ওয়েভ মোটামুটি শেষ হলেও তার রেশ চলছেই। সংসদের বাদল অধিবেশনে এক প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্র জানিয়েছে, গত দু’ মাসে আন্দাজ ৪৫,০০০ ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণ রেজিস্টার্ড হয়েছে। ইদানীং আবার দিল্লিতে বাড়ছে লিভারের সংক্রমণ – বহু মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন লিভার অ্যাবসেসে।
. এইমস-এর ডিরেক্টর, ডা. রণদীপ সুরজেওয়ালার বক্তব্য, ভাইরাস ঠিক কীভাবে পরের আক্রমণ শানাবে, তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে খুব বড়োমাপের কোনও মিউটেশন হবে না বলে আশা করা যায়। আর সাম্প্রতিক সেরো সার্ভের রিপোর্ট বলছে, এদেশে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬৮ শতাংশের শরীরেই কোভিড অ্যান্টিবডি পাওয়া গিয়েছে। তার মধ্যে যদি আমরা কোভিডবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র শিথিলতা না দেখাই, এবং বাড়ির বাইরে সব সময় মাস্ক ব্যবহার করি, তা হলে থার্ড ওয়েভ নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হবে।
. যে হারে ভ্রমণ বাড়ছে, তাতেও কিন্তু বিপদ হতে পারে। কিছুদিন যাবত উত্তরাখণ্ড আর হিমাচলে প্রচুর ট্যুরিস্ট সমাগম হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় ট্যুরিস্ট স্পটেও ভিড় জমতে আরম্ভ করেছিল। স্থানীয় প্রশাসন কোভিড বিধি লাগু করার ব্যাপারে কঠোর হয়েছে। এমনটা চলতে থাকলে কেসের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আনা ক্রমশ কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। হ্যাঁ, ট্যুরিজমের ভরসায় যাঁদের চলত, তাঁদের হাল খুব খারাপ। কিন্তু এই অতিমারি পরিস্থিতিতে খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে অনেকেই যাচ্ছেন। এখনও বেড়ানোর সময় আসেনি, এ কথা মেনে নেওয়াই ভালো।
. ভ্যাকসিনেশনেও গতি আনা প্রয়োজন। এখন যে হারে টিকাকরণের কাজ চলছে, তাতে তৃতীয় ওয়েভ ঠেকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। আবার স্বাভাবিক নিয়মে ফিরতে চাইলে নিয়ম মেনে চলার ব্যাপারে কোনও শিথিলতাকে প্রশ্রয় দিলে চলবে না একেবারেই। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, পুরো পরিবারের টিকাকরণ করিয়ে নিন।