কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের জয়রথ থামাতে নতুন কিছু বিধিনিষেধের তালিকা দিয়েছে সরকার। এগুলি মেনে চললে যদি সংক্রমণ খানিকটা কমে, তা হলে হয়তো পূর্ণ লকডাউন ঠেকানো সম্ভব হবে। তাই নিজের দায়িত্বেই তা পালন করা উচিত। পরিসংখ্যান সাক্ষ্য দেবে যে যাতায়াত কমিয়ে দিতে পারলেই সংক্রমণের হার অনেকটা কমে যায়।
. লোকাল ট্রেন বন্ধ রাখা হয়েছে আপাতত ১৪ দিনের জন্য। সেই সঙ্গে বাস, মেট্রোকে ৫০ শতাংশের বেশি যান চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়নি। খুব সম্ভবত অ্যাপ ক্যাবেও ২ জনের বেশি যাত্রী নেওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি হবে কিছুদিনের মধ্যেই।
একান্ত প্রয়োজন না হলে বাড়ির বাইরে বেরনোর দরকার নেই, কারণ গণ পরিবহন ব্যবস্থার উপর চাপ বাড়বে এই সব নিষেধাজ্ঞার ফলে। আপনার বাড়ির কাজের সহায়ক যদি ট্রেনের যাত্রী হন, তা হলে তিনি যাতায়াত করতে পারবেন না – তাঁকে আপনাদের সঙ্গে থাকার প্রস্তাব দিয়ে দেখতে পারেন।
. অনেকেই বুঝতে পারছেন না ট্রেন বন্ধ হলে খোলা বাজারে মাছ-আনাজ ইত্যাদির ঘাটতি তৈরি হবে কিনা – কারণ শহরতলি থেকেই কাঁচাবাজার নিয়ে অজস্র বিক্রেতা রোজ শহরে আসেন।
এবার খুচরো বা পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা অনেক সচেতন – তাঁরা নিজেদের মতো করে সাপ্লাই চেন অক্ষত রাখার চেষ্টা করছেন। তাই এখনই পাগলের মতো বাজার কিনে রাখার দরকার নেই। বাজার খোলা রাখা হবে সকাল ৭টা থেকে ১০টা আর বিকেল ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত।
. শপিং মল, জিম, রেস্তোরাঁয় ডাইন-ইন, পার্লার, সিনেমা হল, স্পা, সুইমিং পুল ইত্যাদি পরিষেবা পুরোপুরি স্থগিত। তবে হোম ডেলিভারি চালু থাকছে। যে কোনও অনলাইন পরিষেবা জোগানোর ক্ষেত্রে বাড়তি উৎসাহ দেওয়া হবে।
. স্বাস্থ্য, দমকল, আইন-শৃঙ্খলা, বিদ্যুৎ, টেলিফোন, মিউনিসিপ্যালিটি/ কর্পোরেশনের কাজ জরুরি পরিষেবার আওতায় পড়ে – তাই আগের মতোই চালু থাকবে। ওষুধের দোকান, মুদিখানা, মিষ্টির দোকান, দুধের বুথ বা বিক্রেতার ক্ষেত্রেও কোনও নিষেধাজ্ঞা থাকছে না।
. ব্যাঙ্ক খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত, শনি আর রবিবার পুরো ছুটি।
. সমস্ত সরকারি আর বেসরকারি অফিস, কারখানা, চা বাগান, উৎপাদন ক্ষেত্রে রস্টার তৈরি করতে হবে, ৫০ শতাংশের বেশি কর্মী যেন অফিসে না থাকেন। রোজ কারওই আসার দরকার নেই।
. গয়নার দোকান খোলা থাকবে দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টে পর্যন্ত।
. কোনও জায়গায় ৫০ জনের বেশি একজোট হওয়া যাবে না, উপলক্ষ রাজনৈতিক হোক বা সামাজিক অথবা ধর্মীয় – আইন ভাঙলে কড়া পদক্ষেপ নেবে সরকার। সমস্ত জমায়েতের জন্য আগে অনুমোদন নিতে হবে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি বিবেচনা করে তবেই অনুমতি দেবেন। সব ক্ষেত্রেই সামাজিক দূরত্ববিধি ও কোভিড প্রোটোকল মেনে চলা বাধ্যতামূলক।
. বিয়েবাড়িতে ৫০ জনের বেশি নিমন্ত্রিত অনুমোদিত হবে না। শবানুগমনের সময় সঙ্গে থাকতে পারেন সর্বোচ্চ ২০ জন।
. ভিন রাজ্য থেকে স্থল, জল বা আকাশপথে পশ্চিমবঙ্গে ঢোকার আগে কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট সঙ্গে রাখতেই হবে। পরীক্ষার ফল যেন ৭২ ঘণ্টার চেয়ে বেশি পুরোনো না হয়। যদি কোনও যাত্রী কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট দেখাতে না পারেন, তা হলে তাঁকে কোয়ারান্টাইন করে রাখা হলে ১৪ দিনের জন্য – এর খরচও তাঁর থেকেই আদায় করা হবে।
. মাস্ক না পরলে বা কোভিড নিয়মবিধি লঙ্ঘন করে ধরা পড়লে আইনরক্ষকরা কড়া ব্যবস্থা নেবেন।