পশ্চিমবঙ্গের Housing Industry Regulation Act (HIRA) বাতিল বলে গতকাল রায় দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। কেন্দ্রের Real Estate Regulation Act (RERA) সারা দেশের আবাসন ব্যবসায় অভিন্ন মানদণ্ড হিসেবে কার্যকর হবে আজ থেকেই।
২০১৬ সালে কেন্দ্রীয় সরকার সারা দেশে অভিন্ন আবাসন বিধি চালু করার জন্যই RERA পাশ করিয়েছিল। কিন্তু ২০১৭ সালে এ রাজ্যের সরকার HIRA প্রবর্তন করে। গতকাল সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, দু’টি আইনের মধ্যে অনেক মিল আছে, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে রাজ্যের আইন কেন্দ্রীয় আইনের অবমাননা করেছে। সংসদীয় শাসব্যবস্থায় লোকসভায় পাশ হওয়া আইনের বিরোধিতা করা যায় না, তাই কেন্দ্রের আইন মানতে বাধ্য থাকবে রাজ্য সরকার।
বাড়ির ক্রেতাদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখার উদ্দেশ্যে গঠিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ফোরাম ফর পিপলস কালেকটিভ ফোরাম’ রাজ্যের HIRA আইনটিকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে মামলা করেছিল। এদের অভিযোগের তির ছিল রাজ্য সরকারের দিকে, অভিযোগ উঠেছিল, এক শ্রেণির অসাধু প্রমোটারকে বাড়তি সুবিধে পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে এই আইনের মাধ্যমে।
সর্বোচ্চ আদালতের মনে হয়েছে যে, কেন্দ্রের RERA আইন হিসেবে অনেক সুরক্ষিত, কার্পেট এরিয়ার ভিত্তিতে সম্পত্তির দাম দিতে হয় ক্রেতাকে এবং একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই তাঁর হাতে ফ্ল্যাটের চাবি তুলে দিতে বাধ্য থাকেন নির্মাতা। তুলনায় HIRA-য় ফাঁকফোকর অনেক বেশি এবং সাধারণ মানুষের ঠকে যাওয়ার আশঙ্কাও আছে।
২০১৭ থেকে একেবারে সাম্প্রতিক সময়ে যাঁরা কোনও আবাসন বা স্ট্যান্ড অ্যালোন বিল্ডিংয়ে ফ্ল্যাট কিনেছেন, তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও এমআর শাহের বেঞ্চ। এক ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে রায় দিতে গিয়ে এঁরা বলেছেন, বাতিল হয়ে যাওয়া আইনের জেরে ক্রেতাদের কোনও অসুবিধে হবে না। নাকচ হবে না এই সময়ের মধ্যে কেনা কোনও সম্পত্তির রেজিস্ট্রেশনও।
RERA সেকশন ৮০ (২) এর আওতায় কোনও আইনভঙ্গকারী নির্মাতার বিচার হবে অন্ততপক্ষে মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট পদমর্যাদার কোনও বিচারপতির কাছে, HIRA-য় এ সংক্রান্ত কোনও স্পষ্ট নির্দেশিকা ছিলই না। শোনা যায় এই দুই আইনের দ্বন্দ্বে নাকি বহু বড়ো নির্মাতা গোষ্ঠী কাজ স্থগিত রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন এতদিন, ফায়দা তুলেছেন অসাধু পদ্ধতি অবলম্বন করা নির্মাতারা। আশা করা যায় এর পর আবার গতি আসবে আবাসন শিল্পে।