বিয়েবাড়ি মানেই লাল বেনারসি — এই একটা ট্র্যাডিশন কখনও পুরোনো হওয়ার নয়! হ্যাঁ, আজকাল অনেক কনেই বিয়ের দিন লাল না পরে গোলাপি, মেরুন, পেঁয়াজের খোসার রং বেছে নিচ্ছেন বটে, কিন্তু বিয়ের সাজ মানেই লাল বেনারসি আর সোনার গয়না – ব্যস!
কিন্তু কেন এমন নিয়ম? নিয়ম না বলে এটাকে সংস্কারও বলা যায় – ভারতে বিবাহের সঙ্গে, প্রেম ও দাম্পত্যের সঙ্গে, শুভ কাজের সঙ্গে লাল রঙের অবিচ্ছেদ্য যোগ আছে। লাল একদিকে যেমন শক্তির প্রতীক, তেমনই আবার মঙ্গল গ্রহেরও প্রতিনিধিও। জ্যোতির্বিজ্ঞান মতে, বিবাহকার্য সম্পন্ন করতে মঙ্গল অনুকূল থাকা প্রয়োজন বলে মনে করা হয়। সে কারণেও লাল রং বিবাহ অনুষ্ঠানের অপরিহার্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে। অনেকে মনে করেন যে নারীর উর্বরতার প্রতীক হচ্ছে লাল রং, আর বিবাহের মূল উদ্দেশ্য ছিল সন্তান উৎপাদন — তাই লাল পোশাক।
কিন্তু যাঁরা লাল রং পছন্দ করেন না, তাঁরা কী করবেন? এখানে একটা জরুরি কথা বলা প্রয়োজন – যাঁরা ভাবছেন যে গায়ের রং শ্যামলা বলে লাল পরবেন না, তাঁরা প্লিজ পুরোনো, বস্তাপচা ধারণা থেকে বেরিয়ে আসুন। ভারতীয়, বিশেষ করে বাঙালিদের শ্যামলা রঙে খুব ভালো মানায় লাল রং। তা ছাড়াও লালের অজস্র শেড আছে – কোনওটা মেরুন ঘেঁষা, কোনওটা গোলাপি। কোনওটা ফিকে লাল, কোনওটা কালচে বা ইটের মতো – আপনার পছন্দমতো কোনও না কোনও শেড পেয়েই যাবেন!
তাও যদি লাল পছন্দ না হয়? সেক্ষেত্রে আপনি লাল ব্লাউজ, লাল ওড়না বা লাল ফুলের মালা পরুন – তাতে একটা অ্যাকসেন্ট থাকবে, কিন্তু লাল রঙের বাড়াবাড়িটা থাকবে না। সঙ্গে টিপ আর লিপস্টিকের অপশনটা তো রইলই।
বেনারসি শাড়ি একটু ভারী হয়। তাই যাঁরা নিয়মিত শাড়ি পরেন না, তাঁরা বেনারসি থেকে একটু দূরত্ব বজায় রাখতে চান। চিন্তা করবেন না – বেনারসি হরেক রকমের হয়। আজকাল বিভিন্ন ডিজাইনার হাউস চমৎকার লাইটওয়েট শাড়ি বোনাচ্ছে উইভারদের দিয়ে। মিহি সিল্ক শাড়িতে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে অনুপম নকশা। জর্জেট, শিফন, টিস্যু বেনারসিও খুব সুন্দর এবং হালকা হয়।
জানেন কি, এমন অনেক ডিজাইনার আছেন, যাঁরা আপনার মা-ঠাকুমার পুরোনো বেনারসি শাড়িতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করে তাকে আবার নতুন করে দিতে পারবেন? করিনা কাপুর খান নাকি তাঁর বিয়ের অনুষ্ঠানে শাশুড়ির বিয়ের পোষাক পরেছিলেন — তেমন কিছুও ট্রাই করে দেখতে পারেন কিন্তু!