এক কথায় এ প্রশ্নের উত্তর চাইলে আমরা অভয় দিয়ে বলতে পারি, হ্যাঁ আছে। তবে তার জন্য আপনাকে ত্বকের প্রকৃতি বুঝতে হবে এবং মেনে চলতে হবে কিছু জরুরি নিয়ম। সেই সঙ্গে মেনে নিতে হবে যে একটা বয়সের পর প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম মেনেই ত্বকে বয়সের ছাপ পড়বে, ক্রমশ তা শিথিল হয়ে আসবেই। সেটা মাথায় রেখেই পরিচর্যা শুরু করুন।
বয়স বাড়লে ঘাটতি পড়ে কোলাজেন আর ইলাস্টিনের উৎপাদনে। এই দু’টিই আপনার ত্বক টানটান রাখে। মহিলাদের ক্ষেত্রে মেনোপজের পরে এই সমস্যাটা বাড়ে। তার উপর যদি ডায়াবেটিস, থাইরয়েড, হাইপারটেনশনের মতো ক্রনিক কোনও সমস্যা থাকে, তা হলে ত্বক খুব তাড়াতাড়ি খারাপ হবে। তাই ভিতর থেকে সুস্থ থাকার ব্যাপারে জোর দিন কম বয়স থেকেই, রোজ খানিকটা ব্যায়াম করতে পারলে ভালো হয়। কিছু না হলে অন্তত সকাল বিকেল আধ ঘণ্টা করে হাঁটার অভ্যেস রাখতে হবে।
চড়া রোদ্দুর ত্বকের স্বাস্থ্যহানির অন্যতম কারণ। সকাল ৯টার পর থেকে বিকেল ৩টে পর্যন্ত রোদ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন, একান্ত বেরোতে হলেই ভালো স্পেকট্রামের সানস্ক্রিন মাখা জরুরি। কোন সানস্ক্রিন আপনার ত্বকের জন্য সবচেয়ে ভালো, সেটা বলতে পারবেন পেশাদার অ্যাস্থেটিশিয়ান। এ বাবদে খরচ করার ইচ্ছে না থাকলে অবশ্য আপনাকে নিজেই ত্বকের প্রকৃতি বুঝে আদর্শ সানস্ক্রিন বেছে নিতে হবে। বাড়িতে যাঁরা জানলার পাশে বসে কাজ করেন, তাঁরা সানস্ক্রিন মাখতে ভুলবেন না।
প্রচুর জল খান, যে কোনও হলুদ বা কমলা রঙের ফল/সবজি খান অবশ্যই – তা ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে। চা খেতে পারেন, চায়ে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডান্ট থাকে, পালং, কড়াইশুঁটি, ক্যাপসিকাম, আমলকী ইত্যাদির মধ্যে ভিটামিন সি থাকে – মরশুমে সেগুলিও খেতে হবে নিয়ম করে। হিসেব পরিষ্কার – ত্বক রুক্ষ হতে দেওয়া যাবে না কোনওভাবেই। শরীর ভিতর থেকে আর্দ্র রাখতে হবে। তা হলে বলিরেখা পড়বে না নতুন করে। আপনি বাইরে থেকে যে ক্রিমই লাগান না কেন, তার মূল কাজ হচ্ছে ভিতরের আর্দ্রতা ধরে রাখা।
খুব ভালো মানের ময়েশ্চরাইজার আর ক্লেনজার বাছুন। মেকআপ তুলতে হবে যত্ন নিয়ে। সবার ত্বকে একই প্রডাক্ট কাজ করে না – তাই অন্য কাউকে অনুসরণ করতে যাবেন না। ত্বক টানটান লাগলেই ময়েশ্চরাইজার অ্যাপ্লাই করুন। আজকাল ত্বকের যত্নে তেলের ব্যবহার বেড়েছে, মুখ পরিষ্কারের পর বেস হিসেবে কোনও ফেস অয়েল ব্যবহার করতে পারেন – নারকেল বা অলিভ তেল ভালো কাজ দেয়। তার পর ত্বকের প্রকৃতি বুঝে লোশন বা ময়েশ্চরাইজার লাগাতে হবে।
বেশি মিষ্টি বা ভাজাভুজি খেলে, ধূমপান বা অতিরিক্ত মদ্যপানের অভ্যেস থাকলেও কিন্তু ত্বকে তার ছাপ পড়বে, সময়ের আগেই তা বুড়িয়ে যেতে আরম্ভ করবে। সেই সঙ্গে ঠিকমতো ঘুমের প্রয়োজন। বালিষে মুখ চেপে ঘুমোবেন না, তাতে ত্বকের স্বাস্থ্যহানি হয়, বলিরেখার সংখ্যা বাড়ে।