আপনি হয়তো ভাববেন যে আপনি যে মহার্ঘ্য হেয়ার কালার ব্যবহার করেন, তা মোটেই চুলের ক্ষতি করে না। কিন্তু সেটা একেবারেই ভুল ধারণা। কালার কোম্পানি কী বলছে, তাতে বেশি গুরুত্ব দেবেন না – ভালো ভালো কথা না বললে তারা নিজেদের প্রোডাক্টের মার্কেটিং করবে কীভাবে?
. চুলে রং করলেই একটা কেমিক্যাল রিঅ্যাকশন হবে। রাসায়নিক দিয়ে (সাধারণত অ্যামোনিয়া) আপনার হেয়ার শ্যাফটকে খোলা হবে প্রথমে। সেই রাস্তায় প্রবেশ করবে ডাই বা রঙের পিগমেন্ট। তারপর তা আপনার চুলের স্বাভাবিক রংকে বদলে দেবে এমনভাবে যাতে জল বা শ্যাম্পু লেগেও তা ফিকে না হয়ে যায়।
. বুঝতেই পারছেন, কোনও ‘ন্যাচরাল’ হেয়ার কালারের পক্ষে এতটা কেরামতি দেখানো সম্ভব নয়? যদি আপনার চুলের রং অ্যামোনিয়া ফ্রি হয়, তা হলেও নিশ্চিন্ত হওয়ার কিছু নেই – অ্যামোনিয়ার মতোই কড়া অন্য কোনও রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়েছে তা জেনে রাখুন।
. অ্যামোনিয়া আপনার চুলের বাইরের লেয়ারটাকে আলগা করে, প্যারক্সাইডের প্রভাবে তাতে রং ধরে। আর এই দুইয়ের যৌথ আক্রমণে দুর্বল হয়ে পড়ে আপনার চুল। তার মসৃণতা হারায়, চুল ভেঙে যায়, স্নানের সময়ে চুল পড়েও যায় অনেক। অনেকেই এসব ঝামেলা এড়াতে চুল ছেঁটে ফেলেন ছোটো করে।
. ড্যামেজ এড়াতে আপনি যত বেশি কেমিকাল ট্রিটমেন্ট করবেন, তত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে চুলের স্বাস্থ্য। বার বার সালোনে যেতে হবে, করাতে হবে হেয়ার স্পা, ডিপ কন্ডিশনিং। ব্যবহার করতে হবে বিশেষ ময়েশ্চরাইজারযুক্ত শ্যাম্পু। তা না হলেই চুলের স্বাস্থ্য ক্রমশ খারাপ হবে আরও।
. যদি একান্তই হেয়ার কালার করাতে চান, সাহায্য নিন প্রফেশনাল সার্ভিসের। বাড়িতে নিজের হাতে সব করতে পারবেন না, চেষ্টা করলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা থাকবেই।
. যাঁরা অ্যালার্জি বা কোনও সোরিয়াসিসে ভোগেন, তাঁদের অতি অবশ্যই হেয়ার কালার ব্যবহার করার আগে একটা প্যাচ টেস্ট করিয়ে দেখে নেওয়া উচিত। তা না হলে কিন্তু কনট্যাক্ট ডারমাটাইটিস বাড়তে পারে।
. এড়িয়ে চলুন পার্মানেন্ট হেয়ার কালার – তা বেশিদিন টিকলেও ক্ষতির আশঙ্কা বেশি। তুলনায় সেমি পার্মানেন্ট বা টেম্পোরারি হেয়ার কালার অনেক ভালো অপশন। তবে তা বেশিদিন টিকবে না।
সবচেয়ে ভালো হয় চুলের রং নিয়ে বিশেষ সচেতন না হলে। নিজেকে সুস্থ রাখার উপর বেশি জোর দিন। তাতে সময়ের আগে চুল পাকবে না। আর পাকলেই বা কী? কাঁচাপাকা চুলের সৌন্দর্যই আলাদা!