- একটা গোটা বছর হাত পড়েনি আলমারিতে, জুতোর র্যাকে। ফের লকডাউন ঘোষণা হয়েছে, এর পর সব কিছু স্বাভাবিক হতে যে আর কত সময় লাগবে কে জানে? একটা কথা বলুন তো, সব ঠিক হলেই কি আপনি নিশ্চিন্তে সেজেগুজে ফের বিয়েবাড়ি বা পার্টিতে যেতে পারবেন?
এই যে বার বার পাখি পড়ার মতো করে বলা হচ্ছে, ভিড়ে যাবেন না, বাড়িতে থাকুন, সোশাল ডিসট্যান্সিং মেনে চলুন – তা না হলেই ভাইরাসের খপ্পরে পড়বেন – এর ফলে আপনার মনের জোর আগের চেয়ে কমেছে না? বহু মানুষের এখন মনে হচ্ছে, কোনওক্রমে প্রাণটা বাঁচিয়ে টিকে যেতে পারলে হয় এ যাত্রা!
ফলে আগের বারের মতোই এ বছরেও আপনার ভালো জামাকাপড় বা জুতো ব্যবহারের কোনও প্রশ্নই নেই! সুতির ম্যাক্সি ড্রেস, ভারতীয় ধাঁচের ঘেরওয়ালা স্কার্ট, টপ, পালাজো বাড়িতেই পরে ফেলছেন অনেকে – খামোকা ঘরে পরার জন্য নতুন পোশাক কিনে হবেই বা কী? ছেলেরাও মায়া না করে আরামদায়ক টি শার্ট, লিনেন শার্ট পরে ফেলুন বাড়িতেই।
এই প্ল্যানটা আপনিও নিজের জীবনে কাজে লাগাতে পারেন, তাতে খরচ কমবে এবং জামাকাপড় ব্যবহার হবে। ভালো সুতির শাড়ি, যেগুলো আপনি বা মা আর পরবেন না সেগুলো আলাদা করে রাখুন – ইন্টারনেটে ডিজাইন দেখে লং ড্রেস বানিয়ে নেবেন পুজোর আগে! অল্প ছেঁড়াফাটা শাড়িতেও অসুবিধে নেই – আপাতত তো সবাই আমরা বাড়িতেই থাকছি!
পোশাকের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় বর্ষাকালের স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায়। সিন্থেটিক ফ্যাব্রিকের গায়ে ব্যাক্টেরিয়া বা ফাঙ্গাস জন্মায় না। কিন্তু সিল্ক, সুতি বা তসর অনেকদিন নাড়াচাড়া না হয়ে পড়ে থাকলে তার তন্তুর গায়ে জীবাণু জন্মাবে। সবচেয়ে তাড়াতাড়ি সিলভার ফিশ লাগে সিল্কের গায়ে, কারণ সিল্ক তন্তু প্রাণিজ প্রোটিন, সেগুলি আবার ওই পোকার প্রিয় খাদ্য। তাই বর্ষা শুরুর আগে আর পরে জামাকাপড় রোদে দিন। রোদের আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মি পোশাক জীবাণুমুক্ত রাখতে সাহায্য করে।
যে কোনও দামী পোশাকের ভাঁজ বদলে দেওয়া দরকার, কারণ ভাঁজের মাঝে মাঝে ধুলো বাসা বাঁধে এবং সেই বরাবর ফ্যাব্রিক চিড় খেয়ে যায়। তাই সময় সু্যোগ পেলেই পোশাক বের করে ফেলুন আলমারি থেকে। ভাঁজ খুলে ভালো করে ঝেড়ে নিন নরম কোনও ব্রাশ দিয়ে। তার পর রোদে রাখুন। রোদ থেকে তুলে ভাঁজ বদলান এবং একেবারে ঠান্ডা করে নিয়ে ফের আলমারিতে তুলুন। সেই সঙ্গে আলমারিতে রাখুন জীবাণুনাশক ওষুধপত্র।
পোশাকের মধ্যে কোথাও খাবারের টুকরো লেগে নেই তো? অনেক সময় বিয়েবাড়িতে বা পার্টিতে পরে যাওয়ার শাড়ি-পাঞ্জাবিতে খাবার লেগে থাকে – আলমারি থেকে জামাকাপড় নামিয়ে দেখে নিন তেমন কোনও দাগ ধরেনি তো পোশাকে? তা হলে সেই জায়গাতা পরিষ্কার করে রাখতে হবে – তা হলে কিন্তু পোশাক নষ্ট হবেই!
জুতোর র্যাক নিয়ম করে সাফ করুন, একটার উপর আরেকটা জুতো চাপিয়ে রাখবেন না। আলাদা আলাদা ব্যাগে ভরে জুতো রাখতে পারলে খুব ভালো হয়।