ইমিউনিটি বাড়াতে ও শরীর ভিতর থেকে সুস্থ রাখতে ভিটামিন সি যে একান্ত প্রয়োজনীয়, তা ইতিমধ্যে জেনে গিয়েছেন সারা দুনিয়ার মানুষ। দেদার বিকোচ্ছে ভিটামিন সি ট্যাবলেট, বাজারের ফর্দের একেবারে উপরের দিকেই স্থান পাচ্ছে পাতিলেবু ও আমলকী। কিন্তু ভিটামিন সি আপনার শরীরে যথাযথভাবে কাজ করছে তো?
এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে চাইলে মেনে চলতে হবে কয়েকটি বিশেষ নিয়ম। তবে তার আগে এই ভিটামিনটি সম্পর্কে কয়েকটি বিষয় জেনে নেওয়া একান্ত জরুরি।
প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকলে ঠান্ডা লাগে না, নানা ক্রনিক অসুখবিসুখ সেরে যায় – গত শতকের সাতের দশকে এমন একটি মতের প্রচলন হয়েছিল দু-দু’বার নোবেল পুরস্কারজয়ী বিজ্ঞানী লিনাস পলিংয়ের দৌলতে। তাঁর বাতলে দেওয়া ডোজ ছিল দিনে ১২-২৪টি কমলার রস!
তবে তার অনেক আগেই বোঝা গিয়েছে এই ভিটামিন খাদ্যতালিকায় রাখলে ঠেকিয়ে রাখা যায় স্কার্ভির মতো অসুখ। একটা সময়ে লম্বা সমুদ্রযাত্রায় গিয়ে ভিটামিন সি-এর অভাবে এই রোগ হত বহু নাবিকের।
কিন্তু দেখা গেল, লেবুজাতীয় ফল আর তাজা শাকসবজি রোজ খেলেই প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি-এর জোগান পাওয়া যাচ্ছে এবং স্কার্ভি হচ্ছে না। পাশাপাশি এর অ্যান্টিঅক্সিডান্ট ফ্রি-র্যাডিকালসের বাড়বাড়ন্ত ঠেকিয়ে রাখে, বাড়ায় কোলাজেনের উৎপাদন। ফলে তারুণ্যের দীপ্তি ধরে রাখা যায় বেশিদিন।
তবে সেই সঙ্গে মনে রাখতে হবে যে, ভিটামিন সি জলে দ্রবীভূত হয়, তাই শরীরে কিন্তু তা বেশিক্ষণ থাকবে না। খাওয়ার পর যখন সেটির পরিপাক হচ্ছে, তখনই শরীর বেশিরভাগটা শোষণ করে নেবে, বাকিটা বেরিয়ে যাবে মূত্রের মাধ্যমে। তাই রোজের খাবারের মাধ্যমে শরীরে ভিটামিন সি-র জোগান বজায় রাখতে হবে।
লেবুজাতীয় ফল, ক্যাপসিকাম, কিউয়ি, পেয়ারা, আম, টোম্যাটো, আমলকীতে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে। রান্না করলে আগুনের তাপে কিন্তু ভিটামিন সি-এর গুণ নষ্ট হয়ে যায়। তাই তাজা ফল বা ভালো করে ধুয়ে নেওয়া সবজির স্যালাড থেকে এর জোগান পাবেন সবচেয়ে বেশি।
পাকা আম, বাতাবি বা আনারসেও প্রচুর ভিটামিন সি মেলে। বাঁধাকপি, ব্রকোলির মতো সবজি সতে করে নিন হালকা আঁচে, পুষ্টিগুণ অটুট থাকবে।
এই ভিটামিনে সমৃদ্ধ সবজি রান্নার সময় বাইরে থেকে বেশি জল ব্যবহার করবেন না, তাহলে জলেই সবটুকু ভিটামিন দ্রবীভূত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
ভিটামিন সি-তে টকভাব থাকে। যাঁদের দাঁতে সেনসিটিভিটির সমস্যা থাকে, তাঁরা সরাসরি টক ফল খেতে পারেন না। সেক্ষেত্রে আমলকী বা পাতিলেবুর মতো ফলের রস খেলেও উপকার পাবেন।