আমরা এমন এক দেশে থাকি, যেখানে ভেজাল খাবার খাওয়াটাই দস্তুর হয়ে দাঁড়িয়েছে। অতিমারিতে ইমিউনিটি বাড়ানোর জন্য মানুষ স্বাস্থ্য সচেতন হয়েছে আগের চেয়ে, অনেকেই চিনি খাওয়া কমিয়ে আস্থা রাখতে আরম্ভ করেছে মধুর উপর। হাজার হলেও মধু প্রাকৃতিক, তার মধ্যে নানা এনজাইম থাকে যা সুস্থতা নিশ্চিত করে। কিন্তু যেই না মধুর শুদ্ধতা যাচাই করা আরম্ভ হয়েছে, অমনি মাথায় হাত পড়েছে মানুষের।
জানা গিয়েছে, এ দেশে যে সব ব্র্যান্ডের মধু পাওয়া যায়, তার বেশিরভাগটাই অশুদ্ধ। সামান্য মাত্রায় মধু হয়তো আছে, কিন্তু বেশিটাই মেপল সিরাপ বা বিদেশ থেকে আমদানি করা রাসায়নিক মিষ্টি রস মিশিয়ে তৈরি। তা খেলে আপনার লাভ তো কিছু হবেই না, উলটে বাড়বে সুগার ও মেদ। তা ছাড়া লাগাতার কৃত্রিম রাসায়নিক পেটে গেলেও তো আখেরে ক্ষতিই হয়!
এই পরিস্থিতিতে কী করবেন? দুটো রাস্তা খোলা আছে আপনার সামনে। এক, মধু খাওয়া কমাতে পারেন। সকালের গ্রিন টিতে হয়তো খানিকটা মেশালেন, কিন্তু বাকি যে সব রান্নায় সামান্য মিষ্টি দেবেন ভেবেছিলেন, সেখানে চিনি বা গুড় ব্যবহার করুন। আর দুই, কেনার সময়েই পরখ করে নিন মধু খাঁটি কিনা। সাধারণত সরকারি উদ্যোগ থেকে কেনা মধু মানের দিক থেকে ভালোই হয়। কিনতে পারেন বিশ্বস্ত ব্র্যান্ড দেখেও। অনেক সংস্থার মধুর শিশিতে ‘র’, ‘অরগ্যানিক’, ‘ফরেস্ট হানি’ লেখা থাকে – সেগুলিও ভালো হয় সাধারণত।
খাঁটি মধু ঘন হয়: এক ফোঁটা মধু হাতে ফেলুন। অশুদ্ধ মধু গড়িয়ে পড়ে যাবে, শুদ্ধ মধু সাধারণত ঘন হয়। তা ছাড়া অশুদ্ধ মধুতে মিষ্টির পরিমাণও অনেক বেশি।
জলে মেশান: খাঁটি মধু যদি এক গ্লাস জলে মেশান, তা চট করে গুলবে না, নিচের দিকে থিতিয়ে থাকবে। নকল মধু কিন্তু ঝটপট জলে গুলে যাবে। তা ছাড়া ব্লটিং পেপারে ফেলে দেখতে পারেন – মধু আসল না হলে কাগজ তা শুষে নেবে।
খাঁটি মধু খেলে গলায় বা জিভে সামান্য চিড়বিড়ানি অনুভব করতে পারেন: খাঁটি মধুতে নানা ধরনের ফুলের নির্যাস থাকে, তাই তা থেকে সামান্য রিঅ্যাকশন হওয়া বিচিত্র নয়। নকল মধুতে কিন্তু এ সব সমস্যা হয় না।
মধুতে তাপ দিয়ে দেখতে পারেন: খানিকটা মধু নিয়ে গরম করতে বসান, ভালো মানের মধু ঝটপট ক্যারামেলাইজ করবে। কিন্তু চিনির রস বা মেপল সিরাপ মেশানো থাকলে তা থেকে ফেনা উঠবে।