একটা সার কথা তো বুঝেই গিয়েছেন গত একটা বছরে – হাতে টাকাপয়সা না থাকার বিপদ অনেক! রোজগার যাই হোক না কেন, কিছু টাকা মাসের শেষ সরিয়ে রাখাটা খুব দরকার। তাতে আচমকা কোনও বিপদ আপদ বা মেডিক্যাল এমার্জেন্সি হলে সামাল দিতে পারবেন। একটা খুব সহজ কুইজের মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক আপনার প্রকৃতি ঠিক কেমন!
১. অনলাইন শপিং ওয়েবসাইট দেখতে গিয়ে একটা শার্ট খুব পছন্দ হয়েছে। কিন্তু জিনিসটা কিনলে আপনার হাত খালি হয়ে যাবে। কী করবেন?
ক. কতদিনের শখ ছিল এমন একটা শার্টের – বেশি চিন্তা না করে কিনেই ফেলবেন!
খ. আপাতত কার্টে রাখবেন, মাইনে পাওয়ার পর কেনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।
গ. নিজেকে বোঝাবেন যে আবার একটা শার্ট কেনার কোনও দরকারই নেই! বিশেষত আজকাল তো কোথাও যাওয়াই হয় না সাজগোজ করে।
২. ছুটির দিন মানেই বাইরে খেতে যাওয়ার প্ল্যান – বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে মন খুলে আড্ডাও দেওয়া যায়!
ক. এ সব ব্যাপারে খরচ করতে ক্রেডিট কার্ডই ভরসা। হাতে ক্যাশ না থাকলেও চাপ হয় না।
খ. বেশিরভাগ দিন আড্ডা আর খাওয়াদাওয়ার জন্য বন্ধুদের বাড়িতেই ডেকে নেন। সবাই মিলে খরচ ভাগাভাগি করে নিলে পকেটের উপর চাপও পড়ে না তেমন!
গ. বাইরে খাওয়া? কোনও মানেই হয় না! এ সব প্ল্যান থেকে নিজেকে বের করে নেন নানা অজুহাত দেখিয়ে।
৩. আপনার স্বপ্নের মোবাইল ফোন লঞ্চ করেছে। তবে দামটা একটু বেশি।
ক. দাম? দাম দিয়ে কী হবে? জীবন অনিত্য – ভোগ করে নিতে হবে সময় থাকতে।
খ. আপনি দীর্ঘদিন ধরে অল্প অল্প করে টাকা জমিয়ে রেখেছেন, কিনলেও পকেটের উপর বাড়তি চাপ পড়বে না।
গ. হ্যাঁ, কেনার তো ইচ্ছে আছেই, পুরোনো ফোনটা গড়বড় করছেও। কিন্তু… থাক কটাদিন, কোনও ওয়েবসাইট সেল দিলে না হয় দেখা যাবে!
৪. অনেকদিন ধরে একটা এমার্জেন্সি ফান্ড তৈরি করছেন, খানিকটা টাকা জমেও গিয়েছে। এর মধ্যেই বন্ধুরা আচমকা সপ্তাহান্তে পুরুলিয়া ট্রিপ প্ল্যান করছে, কিন্তু হাতে তো বাড়তি ক্যাশ নেই!
ক. তাতে কী? এমার্জেন্সি ফান্ডে পরে টাকা রেখে দেওয়া যাবে! আপাতত হইচই করে আসা যাক!
খ. আগে মাথাপিছু খরচের হিসেব চাইবেন, যদি ম্যানেজ করা সম্ভব হয় তবেই যাবেন।
গ. অফিস থেকে ছুটি না পাওয়ার বাহানা তো এই সময়গুলোতেই ব্যবহার করতে হয়!
৫. মাসের শেষ সপ্তাহে আপনার পার্সের অবস্থা কেমন থাকে?
ক. ট্যাক্সি নয় বাস। কফি শপ নয় পাড়ার মোড়ের চায়ের দোকান। বাজার নয় অনলাইন শপিং করে কার্ডে পেমেন্ট। আর মাঝে মধ্যে মায়ের কাছে হাত পাতা।
খ. কোনও কোনও মাসে চাপ হয়ে যায়, বিশেষ করে যে সব মাসে বিমার পেমেন্ট থাকে বা ট্যাক্স কেটে যায় বেশি করে। না হলে মাইনে পাওয়ার আগে অ্যাকাউন্টে তলানিটুকু পড়ে থাকে।
গ. বন্ধুরা মাসের শেষ আপনাকে ভগবান মানে, কারণ আপনার কাছেই ধার চাইলে পাওয়া যায়।
৬. আপনার কাপড় ধুতে গেলেই কি পকেট থেকে কিছু টাকা পয়সা মেলে?
ক. সব সময়। কত বকুনি শুনতে হয় এ জন্য!
খ. নেহাত কখনও বেভুল হলে কাচতে দেওয়ার আগে পকেট দেখা হয় না – তবে থাকলেও ছোটো নোট বা খুচরো থাকে।
গ. বাইরে থেকে ফিরে সব টাকাপয়সা বের করে রাখাটাই আপনার প্রথম কাজ।
৭. জামাকাপড় বা জুতো কেনার আগে আপনি সেলের জন্য অপেক্ষা করেন।
ক. কখনও না, কারণ সেলে সব সময় পুরোনো লটের জিনিস পাওয়া যায়, হাল ফ্যাশনের কিছুই থাকে না।
খ. প্রায়ই। আবার কখনও দরকার পড়লে অন্য সময়েও কেনা হয়।
গ. ভালো ব্র্যান্ডের জিনিস কেউ সেল ছাড়া কেনে নাকি?
৮. নিজের শখ আহ্লাদের পিছনে করচ করার জন্য একটা ফান্ড আছে আপনার।
ক. আরে, আলাদা ফান্ডের কী দরকার? পুরো মাইনেটাই তো শখের পিছনে খরচ করার জন্য।
খ. আছে। তবে সব মাসে পুরোটা খরচ হয় না। আবার কোনও কোনও মাসে একটু বেশিও হয়ে যায়।
গ. না নেই। শখ আহ্লাদের পিছনে টাকা না উড়িয়ে জমিয়ে রাখলে কাজে দেবে।
৯. মাঝে মাঝেই কি আপনার নতুন কোনও নেশা চাপে?
ক. হ্যাঁ। তখন তার পিছনে টাকা খরচ করতেও বাধে না।
খ. মাঝে মাঝে বলাটা ভুল। হ্যাঁ, কিছু হবি আছে, তার জন্য খরচও হয়। তবে রোজ নতুন নেশা চাপে না।
গ. না।
সিদ্ধান্ত:
যাঁদের বেশিরভাগ উত্তর ‘ক’, তাঁরা একটু সাবধান হোন। টাকাপয়সার ব্যাপারে আপনাকে আরও সচেতন হতেই হবে। না হলে নিজেই বিপদে পড়বেন একদিন।
যাঁদের বেশিরভাগ উত্তর ‘খ’, তাঁদের আলাদা করে কিছু বলার নেই। আপনারা জানেন টাকা সামলে রাখা দরকার, সেভাবে এগোচ্ছেন। অভিনন্দন!
যদি আপনি ‘গ’-এর দলে পড়েন, তা হলে খেয়াল রাখবেন — টাকা পয়সা জরুরি তো বটেই, কিন্তু জীবনটাকে উপভোগ করাও জরুরি। নিজের যত্নআত্তি করুন, ভালো থাকবেন।