খবরের কাগজ, টেলিভিশনের সংবাদ, সোশাল মিডিয়ার নিউজ ফিড – যেখানেই চোখ রাখুন না কেন, হিংসার ছবিই নজর কেড়ে নিচ্ছে আজকাল। সমাজের যে কোনও স্তরের মানুষের মধ্যেই বেড়েছে অসহিষ্ণুতা – যেন-তেন প্রকারে নিজেরটুকু দখল করতে ব্যস্ত সবাই। এর কালো ছায়া কি কোনওভাবে আপনার পরিবারকে গ্রাস করছে?
চারপাশের ঘটনাক্রমের প্রভাব থেকে আপনি-আমি কেউ বাদ নেই। আমাদের অজান্তেই মনের মধ্যে বাসা বাঁধছে হিংসার জাল। টিভির সিরিয়াল, খবর, বাচ্চার ভিডিও গেম সর্বত্র সারাক্ষণ মানুষ মানুষকে খুন করার ছক কষছে। এর কোনও সদর্থক প্রভাব থাকা অসম্ভব!
নিজের পরিবারকে এই পরিস্থিতিতে স্থিতধী এবং পজিটিভ রাখার দায়িত্ব আপনার কাঁধেই রয়েছে। এখন থেকে প্রতিদিন চেষ্টা করলে হয়তো আরও ক্ষতি হওয়া আটকাতে পারবেন – তা না হলে রোজ টিভিতে যা দেখেন, সেটাই বাড়ির ড্রয়িংরুমে ঘটতে দেখলে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই!
১. যে কোনও ভায়োলেন্সের জড় লুকিয়ে থাকে অনিশ্চয়তায়
পরিবারের সকলের মধ্যে সম্পর্ক যেন ভালো থাকে, তা দেখবেন। মানুষের মন ভালো থাকলে, শান্তিতে থাকলে সে কখনওই হিংসার আশ্রয় নেয় না, অন্তত মনোবিদরা তেমনটাই বলেন। সবাই একসঙ্গে থাকতে গেলে অল্পবিস্তর ঝগড়া-অশান্তি, কথা কাটাকাটি হবে, সেটায় অস্বাভাবিক কিছু নেই। কিন্তু মনের টান বজায় রাখা জরুরি। কারও কোনও অসুবিধে বা বিপদ হলে সে যেন পরিবারের কাছেই সবার আগে সাহায্য চায় এবং পরিবার পাশে দাঁড়ায়।
২. কখনও বাচ্চাকে কঠোর শাস্তি দেবেন না
বাচ্চা ভুল করবে, দুষ্টুমি করবে, কখনও কখনও অন্যায়ের রাস্তাও বেছে নেবে। তাকে বুঝিয়ে বলুন কোনটা ঠিক। মারধর বা কঠিন শাস্তির রাস্তায় হাঁটবেন না, তাতে শিশুর মনে গভীর প্রভাব পড়ে। রাগ হলে নিজেকে শান্ত করুন, কাউকে পালটা আঘাত করে কখনও সমাধানে পৌঁছতে পারবেন না। যে মুহূর্তে আপনি আপনার সন্তানকে আঘাত করবেন, সেই মুহূর্ত থেকেই সেও অন্যকে শারীরিকভাবে আঘাত করার শিক্ষা পাবে।
৩. বাড়িটা যেন নিরাপদ আশ্রয় হয়, তা নিশ্চিত করুন
পরিবারের সব সদস্যের যেন মনে হয় যে বাড়িটাই সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা এবং যে কোনও বিপদে আগে পরিবারের সাহায্য নেওয়া উচিত। কেউ ভুল করলে তাকে বকাঝকা করুন অবশ্যই, কিন্তু পাশে দাঁড়ান। কোভিড দেখিয়ে দিয়েছে যে বাড়িটাই আমাদের একমাত্র আশ্রয়, সেখানে দীর্ঘদিন আটকে থাকতে হতে পারে। তাই সকলের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখুন।
৪. সবাই গুরুত্ব পেতে ভালোবাসে, তা জানেন তো?
সবাইকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিন। বাচ্চা আর বয়স্কদের বেশি কিছু লাগে না অ্যাটেনশন ছাড়া। স্রেফ সেটুকু পেলেই সবার মন ভালো থাকবে। সেই সঙ্গে বাড়ে আত্মবিশ্বাস। আর স্রেফ এটুকু নিশ্চিত করতে পারলেই দেখবেন জীবন কতটা সহজ হয়ে গিয়েছে!
৫. বিবেক বাঁচিয়ে রাখাটা খুব জরুরি
মানুষ তার বিবেক একবার হারিয়ে ফেললে অধঃপতনের আর বিশেষ কিছু বাকি থাকে না! এই পরিস্থিতি হতে দেবেন না কখনও! ভুল বোঝাবুঝি, ঝগড়াঝাটি হতেই পারে, কিন্তু সে কারণে পরিবারের বাঁধন যেন না আলগা হয়ে যায় তা দেখবেন!