প্রথমেই বলে রাখা ভালো যে কোনও ভিটামিন, মিনারেল, ওষুধ বা ব্যায়ামই কোভিডের বিরুদ্ধে ঢাল হলে আপনাকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করবে না। আপনাকে সোশাল ডিসট্যান্সিং মানতে হবে – অর্থাৎ ঘরে হোক বা বাইরে, কখনওই অন্য কারও ৬ ফুটের মধ্যে আসবেন না। সেই সঙ্গে মাস্ক পরতে হবে বাইরে বেরোলেই, হাত ধুতে হবে বার বার, ভিড় থেকে দূরে থাকতে হবে। একমাত্র তা হলেই ভাইরাস থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব।
সেই সঙ্গে এটাও ঠিক যে, ভিটামিন সি আপনার প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে একান্ত উপযোগী। এই ভিটামিন একটি অত্যন্ত ক্ষমতাশালী অ্যান্টি অক্সিডান্ট – তা শরীরের ফ্রি র্যাডিকালসকে ধ্বংস করে, ফলে আপনার শরীরের সমস্ত কোষ নিজের কাজ করতে পারে সাবলীলভাবে।
রোজের খাবারের মাধ্যমে শরীরে মোটামুটি ৯০-১০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি প্রবেশ করলেই আপনি সুস্থ থাকবেন। যাঁরা নিয়মিত ফল বা শাকসবজি খান, তাঁদের ভিটামিন সি-এর অভাবে ভুগতে হয় না। একটা মাঝারি আকারের কমলালেবু আপনার প্রয়োজনের অর্ধেক ভিটামিন সি-র জোগান দিতে পারে। একটি আমলকী খেলেও চলবে। পাতিলেবু বা পেয়ারাতেও যথেষ্ট ভিটামিন সি আছে। তবে রান্না করলে এই ভিটামিনের গুণ নষ্ট হয়ে যায়। আর যাঁদের দাঁত খুব সেনসিটিভ, তাঁরা সাবধান। ভিটামিন সি দাঁতের এনামেল ক্ষইয়ে দিতে পারেন।
কীভাবে কাজ করে এই ভিটামিন?
ভিটামিন সি খেলে ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন বাড়ে। ফলে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে না, তা লাবণ্যে ঝলমল করে। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে ভিটামিন সি খেলেই আপনার সর্দি-কাশি ম্যাজিকের মতো সেরে যাবে না। কিন্তু যাঁরা রোজ যথেষ্ট পরিমাণ ভিটামিন সি খান, তাঁদের ঠান্ডা লাগেই কম। লাগলেও শরীর লড়াই করে তা সারাতে পারে তাড়াতাড়ি।
তা হলে কি এখন হাই ডোজের ভিটামিন সি খাওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে?
না, একেবারেই না। অনেকে ভাবছেন লাগাতার হাই ডোজের ভিটামিন সি খেলে লাং ইনফেকশন হবে না বা কোভিড ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব হবে। তাঁরা ভুল ভাবছেন। আচমকা কোনও মাইক্রো নিউট্রিয়েন্টের পরিমাণ বাড়িয়েই আপনি কোভিড সংক্রমণ ঠেকাতে পারবেন না। আপনাকে রোজ স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে, শরীরে মেদের পরিমাণ যাতে না বাড়ে তার চেষ্টা করতে হবে। শরীর যদি পুরোপুরি সুস্থ হয়, তা হলে যে কোনও সংক্রমণ থেকেই সহজে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।