তাপমাত্রা যত কমে, তত স্থিতিস্থাপকতা হারাতে আরম্ভ করে আমাদের হাড়ের জোড়ের জায়গাগুলো। তার মূল কারণ হচ্ছে শীতে রক্ত চলাচল করে না ঠিকভাবে। যাঁরা কোনও অর্থোপেডিক সমস্যা বা আর্থ্রারাইটিসে ভোগেন, তাদের হাড়ের পরিস্থিতি এমনিতেই খারাপ – ঠান্ডায় তাঁরা আরও কাবু হয়ে পড়েন।
এই পরিস্থিতি থেকে বেরোতে গেলে আপনাকে সবচেয়ে প্রথমে কী করতে হবে জানেন? বাড়াতে হবে হাঁটাচলার পরিমাণ। যত জবুথবু হয়ে বসে থাকবেন, তত বাড়বে গায়ের ব্যথা। যাঁরা মর্নিং ওয়াকে যেতেন, কিন্তু সকালে উঠতে পারছেন না, বা দুর্ভেদ্য কুয়াশায় বেরোতে ভয় পাচ্ছেন তাঁরা বিকেলের দিকে খানিকটা হেঁটে আসতে পারেন। ঘরের মধ্যেও হাঁটাচলা করা যায় ইচ্ছে করলেই।
শীতকালে তেমন তেষ্টা পায় না বলে জল খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দেন অনেকেই। সেটা ব্যথা বা যন্ত্রণার অন্যতম কারণ। রুক্ষ, শুষ্ক হাড় আরও বেশি ইলাস্টিসিটি হারাবে। দুটি জোড়ের মাঝে যে কার্টিলেজ থাকে, তা ক্রমশ শুকিয়ে আসবে। তাই জল খাওয়ার পরিমাণ কমাবেন না, দরকারে অল্প গরম করে জল খান। ফলের রসও খেতে পারেন, তবে তাতে ক্যালোরি বেশি। বার বার চা-কফি খাওয়া কিন্তু কোনও সমাধান নয়, তাতে শরীর ভিতর থেকে আর্দ্র থাকে না।
ক্যালশিয়াম আর ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট খান নিয়ম করে, বিশেষ করে যাঁদের হাড়ের সমস্যা আছে। যেহেতু শীতকালে দিন ছোটো, আলো কম তাই ভিটামিন ডি সংশ্লেষ হয় না ঠিকমতো। তাই এই সময়টা অন্তত সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন। সেই সঙ্গে খেতে হবে প্রচুর ক্যালশিয়াম পাওয়া যায় এমন খাবার।
মরশুমি শাক-সবজি ও ফল খেতে ভুলবেন না। পালং, গাজর, বাঁধাকপি, কমলালেবু, টোম্যাটোতে পাওয়া যায় ভিটামিন কে, ডি আর সি। তাতে হাড়ের ব্যথা কমতে বাধ্য।
নিজের যত্ন নিন। সঠিক সাইজের জুতো পরুন, জুতোর সোল যেন অক্ষত থাকে তা দেখুন। খুব পুরোনো জুতোর তলাটা ক্ষয়ে যায়, তাতে পায়ে চাপ পড়ে বেশি। বসার সময় পিঠ সোজা করে বসতে হবে, টানা দাঁড়িয়ে থাকবেন না। এই ছোট ছোট নিয়ম মেনে চললেই পরিবর্তন টের পাবেন।
প্রতিদিন খানিকটা ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। ব্যায়াম করার আগে অবশ্যই খুব ভালো করে ওয়ার্ম আপ করে নেবেন। তা হলে পেশিতে টান পড়বে না। শীতকালে স্ট্রেচিং করা মাস্ট।