ভারতের স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যান বলছে, দেশের মাত্র দুই শতাংশ মানুষ সরাসরি ঘায়েল হয়েছেন কোভিডের আক্রমণে। কিন্তু আমরা সবাই বুঝতে পারছি, সংখ্যাটা আরও অন্ততপক্ষে ১০ গুণ বেশি। যাঁরা সরাসরি আক্রান্ত হননি, নিজেকে বাঁচিয়ে রেখেছেন কোনওক্রমে, তাঁদের উপরেও কোভিডের পরোক্ষ প্রভাব পড়েছেই। সব ক্ষেত্রেই খরচ বেড়েছে অনেকটা — কিন্তু এই পরিস্থিতি ঠিক কতদিন চলবে, বা কতটা খারাপ হবে, তা বোঝা যাচ্ছে না এখনও!
চিকিৎসাখাতে বাড়তি খরচ
যেখানে যে অবস্থায় থাকুন না কেন, চিকিৎসা ও ওষুধপত্র খাতে খরচ বেড়েইছে। তার থেকেও বড়ো কথা, স্যানিটাইজার, মাস্ক, ডিসইনফেকট্যান্ট, অ্যান্টিসেপটিক ইত্যাদির জন্য একটা বাঁধা বাড়তি খরচ হচ্ছে সব পরিবারেই। সামান্য জ্বর-সর্দিকে আগে কেই বা পাত্তা দিত? এখন গলা খুসখুস করলেই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হচ্ছে – যে সব পরিবারে গত ৫-১০ বছরে তেমন কোনও বড়ো অসুখ হয়নি, তারাও ছাড় পাচ্ছে না কোভিডের থাবা থেকে। সপরিবারে আক্রান্ত হলে বা হাসপাতাল-বাস করলে তো কথাই নেই! সেই সঙ্গে বেড়ে গিয়েছে মেডিক্লেমের প্রিমিয়াম।
কমেছে পরিবারের মোট আয়
অধিকাংশ মধ্যবিত্ত পরিবারেই আর্থিক সমস্যা আছে। যেখানে দু’জন রোজগার করতেন, সেখানে হয়তো এখন একজনই উপার্জনশীল। মাইনে কমেছে কম-বেশি সবার। ছোটো ব্যবসায়ীদের নাভিশ্বাস উঠছে, একটু বড়োমাপের কারবারিদের আয়ের চেয়ে ব্যয় বেড়েছে লকডাউনের সৌজন্যে।
বেড়েছে বিদ্যুৎ/ ইন্টারনেটের খরচ
বাচ্চার অনলাইন ক্লাস, ডাক্তারের কনসাল্টেশন, অফিসের মিটিং সব অনলাইনে হচ্ছে, ফলে সব বাড়িতেই ইন্টারনেটের খরচের বাড়তি একটা খাত তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্গে সর্বক্ষণ বাড়িতে থাকার ফলে বেড়েছে বিদ্যুতের খরচও।
দাম বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিসের
ডিজেল আর পেট্রোলের দাম উঠছেই, তার ফলে কাঁচা বাজারের অবস্থা খুব খারাপ। স্টেট ব্যাঙ্কের সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় যে তথ্য উঠে এসেছে, তাতে এ কথা পরিষ্কার যে সাধারণ মানুষের হাতে টাকার জোগান ক্রমশ কমবে। রোগ যে হারে গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়ছে, তাতে সমস্যা আরও বাড়বে। একের পর এক ওয়েভ আসতে থাকলে যে পরিস্থিতি কতটা খারাপ হবে, কারওই জানা নেই।
এই অবস্থায় আপনি কী করতে পারেন?
শুনতে খারাপ লাগলেও এ কথা খুব সত্যি যে আপনার এখন বিশেষ কিছু করার নেই। ১৯১৮-র স্প্যানিশ ফ্লুয়ের রেশ কাটতে বছর দুই-আড়াই সময় লেগেছিল। ১০০ বছর পরে অত্যাধুনিক বিজ্ঞান আর যোগাযোগ ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়েও আমরা দেড় বছরে ভাইরাসকে বাগে আনতে পারিনি। এখন থার্ড ওয়েভের প্রহর গোনা চলছে!
.আপনি শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার চেষ্টা চালিয়ে যান। বাড়িতে বাইরের লোক ঢোকাবেন না সেকেন্ড ওয়েভ কমে গেলে, নিজেরাও চট করে আউটিং, পার্টি ইত্যাদি শুরু করবেন না। সমস্ত কোভিড প্রোটোকল মানুন, মাস্ক ছাড়া কোথাও যাবেন না।
. খরচ কমান। বাচ্চার লেখাপড়া, প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র ছাড়া সব কিছু মুলতুবি রাখুন।
. লাইফ ইনশিওরেন্সের প্রিমিয়ামের টাকা দেওয়া বন্ধ করবেন না কোনওভাবেই।
. অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা বন্ধ রাখুন।