সুন্দর, ঝলমলে, মোমের মতো মসৃণ ত্বকের মালিক হওয়ার স্বপ্ন কে না দেখেন? কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, চাইলেই তো আর সব ভালো জিনিস পাওয়া যায় না! একটা বয়সের পর ত্বকে, বিশেষ করে চোখের চারপাশের স্পর্শকাতর ত্বকে দাগ-ছোপ পড়তে আরম্ভ করে। হ্যাঁ মেকআপের প্রলেপ দিয়ে তা ঢাকা যায়, কিন্তু এই দাগ কি কোনওভাবে মুছে ফেলা সম্ভব?
যদি আপনার রং খুব ফরসা হয় এবং অল্প বয়স থেকে নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহার না করে থাকেন, তা হলে দাগ-ছোপ দেখা দেবে আগে। বুঝতেই পারছেন, এর মূল কারণ হচ্ছে সানবার্ন। আজকাল নানা ধরনের স্কিন ট্রিটমেন্ট আছে, যার সাহায্যে আপনি এই সমস্যার সমাধান করতে পারেন। তবে তার জন্য পেশাদারের সঙ্গে কথা বলা ভালো।
কোন কোন ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করলে এই দাগ মিলিয়ে যেতে পারে
ভিটামিন ই তেল: যদি আপনার ভিটামিন ই তেলে কোনও অ্যালার্জি থাকে, তা হলে আলাদা কথা। না হলে দাগ-ছোপে সরাসরি তা ব্যবহার করে দেখতে পারেন। ভিটামিন ই ক্যাপসুল কিনে এনে তা থেকে তেল বের করে নিয়েও সরাসরি দাগের উপর লাগানো সম্ভব।
আমন্ডের তেল: রাতে শুতে যাওয়ার আগে ময়েশ্চরাইজ়ারের বদলে কয়েক ফোঁটা সুইট আমন্ড অয়েল ব্যবহার করে দেখুন, চোখে পড়ার মতো ভালো ফল পাবেন!
লেবুর রস আর জলের মিশ্রণ: একমাত্র আপনার চোখের চারপাশটা বাদ দিয়ে মুখে বা গলার অন্যত্র প্রতি একদিন অন্তর লেবুর রস আর জলের মিশ্রণটা লাগিয়ে দেখতে পারেন। চলতে পারে লেবুর রস আর মধুর মিশ্রণও। লেবু প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসেবে কাজ করে। এর সাইট্রিক অ্যাসিড আর ভিটামিন সি ক্রমশ গাঢ় কালো ছোপ হালকা করে দেয়। আপনার ফেস মাস্কেও লেবুর রস ব্যবহার করতে পারেন। তবে তাজা রসই ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়, বোতলবন্দি লেবুর নির্যাসে কিন্তু প্রিজ়ারভেটিভ থাকে। তা থেকে বাড়তে পারে ত্বকের প্রদাহ।
আলুর রস: আলু খুব ভালো করে ধুয়ে ছেঁচে রস বের করে নিন। তার পর সরাসরি সেই রস লাগিয়ে নিন দাগ-ছোপে। মিনিট দশেক অপেক্ষার পর ধুয়ে ফেলতে পারেন। ফেস প্যাক বানানো যায় আলুর রস, মধু আর লেবুর রস দিয়েও।
অ্যালো ভেরা জেল: অ্যালো ফেরা জেলও দাগ-ছোপ তাড়াতে খুব কার্যকর। অ্যালো ভেরা জেল, চিনি আর লেবুর রসের মিশ্রণ তৈরি করে লাগিয়ে নিন ত্বকে।
জেনে নিন কোন কোন কারণে ত্বকে কালো ছোপ পড়ার আশঙ্কা বাড়ে
হরমোনের ভারসাম্যহীনতা: হরমোনের অতিরিক্ত বেশি বা কম ক্ষরণের জন্য আপনার ত্বকে গাঢ় দাগ-ছোপ পড়তে পারে। প্রেগন্যান্সি বা মেনোপজ়ের কারণেও হরমোনের স্তরে ভারসাম্যের অভাব দেখা দেয়। এর ফলে মেলানিনের উৎপাদনেও সাম্য থাকে না।
রোদ: ত্বকের নিদাগ উজ্জ্বলতার সবচেয়ে বড়ো শত্রু হচ্ছে সূর্যের চড়া আলো। রোদে বেরনোর আগে অতি অবশ্যই মুখসহ শরীরের সব খোলা অংশে সানস্ক্রিনের প্রলেপ লাগান। সানস্ক্রিনের আস্তরণ না থাকলে আপনার ত্বক নিজেই নিজেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য বেশি বেশি করে মেলানিন তৈরি করবে। ফলে গাঢ় দাগের সংখ্যাও বাড়বে।
ত্বককে রোমহীন রাখার চেষ্টা: বহু মহিলাই ত্বকের বাড়তি রোমের আস্তরণ সরিয়ে ফেলতে চান। সে কারণে রোম তোলার ক্রিম, টুইজ়ার, ওয়্যাক্স ইত্যাদি নানা পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া হয়। কিন্তু নিরন্তর এই প্রচেষ্টা চালাতে গিয়ে ত্বকের স্পর্শকাতরতা বাড়ে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে দাগ-ছোপের আশঙ্কাও।
ব্রণ বা চোট-আঘাতের দাগ: ব্রণ বা ফোড়া হলে খুঁটবেন না, হাত লাগাবেন না বেশি। তা হলে কিন্তু দাগ চট করে মিলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও কমে যায়।