শিশুর হাতে খেলনা তুলে দেওয়াই দস্তুর। কখনও কি ভেবে দেখেছেন, সে পুতুল শিশুর মনে কোনও প্রভাব ফেলে কিনা? কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করেছেন এবং শেষমেশ যে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন তার ভিত্তিতে কয়েকটি ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়।
. এ কথা ঠিক যে খেলনা বা পুতুলের সঙ্গে বাচ্চাদের একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরিবারের আর পাঁচজনের মতোই পুতুলও তার জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে চার-পাঁচ বছরের বাচ্চাদের মধ্যে ক্রিয়েটিভিটির উন্মেষ ঘটাতে পারে খেলনা – তাকে কেন্দ্র করেই কাল্পনিক এক দুনিয়া গড়ে তোলে শিশু।
. পুতুলকে বাচ্চাটি কীভাবে রাখছে তা লক্ষ করুন মন দিয়ে। সাধারণত মায়া-মমতার মতো একান্ত মানবিক গুণের প্রকাশও হতে থাকে এই বয়স থেকেই। শিশু তার প্রিয় পুতুলকে নিজের জীবনের সঙ্গী মনে করে। তার যত্ন-আত্তি, দেখভাল করে। যদি দেখেন বাচ্চা কেবলই পুতুল ভেঙে ফেলছে, নষ্ট করছে – তা হলে সতর্ক হওয়া উচিত। মনোবিদ দেখিয়ে বুঝুন এমনটা কেন হচ্ছে।
. বডি ইমেজ সম্পর্কেও ধারণা গড়ে উঠতে আরম্ভ করে এই বয়স থেকেই, তাই বাচ্চার হাতে কোন ধরনের পুতুল তুলে দিচ্ছেন তা নিয়ে একটু ভাবনাচিন্তা করুন। সমীক্ষা বলছে, যদি আপনি কন্যাসন্তানের হাতে রোগা, ফ্যাশন মডেলের মতো মেকআপ করা পুতুল তুলে দেন তাহলে সে নিজের অজান্তেই ওই ধরনের চেহারা ও সাজপোশাককে আদর্শ ভাবতে আরম্ভ করবে। ছেলেদের হাতে বন্দুক তুলে দেওয়ার আগেও এভাবেই ভাবা উচিত।
. বাচ্চা পুতুলের সঙ্গে কথা বলবে বা খেলবে এটাওই স্বাভাবিক। চার-পাঁচ বছর বয়স থেকেই তার সোশাল স্কিল তৈরি হওয়ার কথা। তবে অবসেশন যেন গড়ে না ওঠে সেটাও দেখতে হবে।
. মেয়েদের হাতে মেয়ে পুতুল দিতে হবে, ছেলেরা কেবল পুরুষ পুতুল নিয়ে খেলবে – এমন ভাগাভাগিতে বিশ্বাস করবেন না। আজকের যুগে একেবারেই লিঙ্গ নির্ভর চিন্তাভাবনা আঁকড়ে থাকার মানে হয় না – সব ধরনের খেলনা নিয়ে সবার খেলা উচিত। কোনও ছেলে পুতুল নিয়ে খেলতে ভালোবাসলেই তাকে তির্যক কথাবার্তা বলার অভ্যেসটাও থাকা উচিত নয়।
. বাচ্চাকে অন্য শিশুর সঙ্গে খেলনা ভাগাভাগি করে খেলার উৎসাহ দেওয়া উচিত। তাতে অন্যের সঙ্গে শেয়ার করার অভ্যেস গড়ে ওঠে।