কোভিডের সেকেন্ড ওয়েভ ঘায়েল করছে একেবারে ছোটো বাচ্চাদেরও। এই তথ্য প্রকাশ্যে আসায় বহু অভিভাবকেরই রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে, কারণ বাচ্চাদের আলাদা রাখা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলা বা সর্বক্ষণ মাস্ক পরানো কার্যত অসম্ভব!
তবে আশার কথা একটাই, এ পর্যন্ত যা তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে যে বাচ্চারা খুব ঘায়েল হচ্ছে না করোনা ভাইরাসের আক্রমণে। বাড়তি ইমিউনিটির কারণেই তাড়াতাড়ি দুর্বলতা কাটিয়ে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে। তবে পরবর্তীকালে এর ফলে কোনও জটিলতা তৈরি হবে কিনা, তা অবশ্য এখনই বোঝা যাচ্ছে না — আরও গবেষণা দরকার তা নিয়ে।
বাচ্চার জ্বর এলে গোড়াতেই প্যানিক করবেন না। অন্য কোনও ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার কারণেও তা হতে পারে। ইউরিনারি ট্র্যাক্টে কোনও ইনফেকশন হলে তো জ্বর আসেই। তাই সন্তানের জ্বর এলেই আপনার প্রথম কাজ হবে পেডিয়াট্রিশিয়ানের সঙ্গে কথা বলা। নিজে ডাক্তারি করতে যাবেন না – অন্তত এই পরিস্থিতিতে।
পেডিয়াট্রিশিয়ানের কথামতো জ্বরের ওষুধ দিয়ে দিন দুই-তিন দেখুন। কোভিডের ক্ষেত্রে কিছু লক্ষণ ফুটে ওঠার কথা ক্রমশ। যেমন কাশি, পেট ব্যথা, ডায়েরিয়া, বমি, র্যাশ, খাওয়ার অনিচ্ছা। সেই সঙ্গে প্যারাসিটামল খাওয়ার পরেও জ্বর কমবে না, বার বার আসবে যাবে। এই অবস্থায় আপনার ডাক্তার সিদ্ধান্ত নেবেন কী করা দরকার। সাধারণত ডাক্তার হয়তো এই অবস্থায় বাচ্চাটিকে দেখতে চাইবেন নিজের চোখে – তাঁর কাছে নিয়ে যাওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
প্রথম ধাপে কিছু রুটিন ব্লাড টেস্ট করে দেখে নেওয়া হয় বাচ্চার ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গি হয়েছে কিনা। বাচ্চার কোভিড হলে কিন্তু বাড়ির সবাইকে মাস্ক পরে থাকতে হবে। দিন সাতেকের মধ্যে বাচ্চার সুস্থ হয়ে যাওয়ার কথা। কিশোর-কিশোরীদের ক্ষেত্রে কিন্তু আরও কিছু বাড়তি সমস্যা থাকছে। দিন দশেকের মধ্যে কোভিড মুক্ত হওয়ার পরেও তাদের খিদের বোধ ফিরছে না, মাঝে-মধ্যে জ্বর আসছে, খুব ক্লান্তি লাগছে, পেট খারাপ হচ্ছে, লেখাপড়ায় মন বসছে না। এটাও মাসখানেকের মধ্যে কমে যাওয়ার কথা।
মাল্টি সিস্টেম ইনফ্লামেটরি সিনড্রোম কী?
হাতে গোনা কিছু বাচ্চার ক্ষেত্রে কোভিড সেরে যাওয়ার পরে এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে, তবে ভারতের ক্ষেত্রে তার সংখ্যা এখনও নগণ্য। কোভিডের সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য শরীরে সাইটোকিন ও অন্যান্য অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। কোভিড সেরে যাওয়ার পরেও আচমকাই কারও কারও ক্ষেত্রে এই সাইটোকিন ও অ্যান্টিবডির পরিমাণ বাড়ছে, তা নানা অঙ্গের ক্ষতি করছে। তাই যদি দেখেন বাচ্চার শারীরিক অবস্থার হঠাৎই অবনতি হচ্ছে, সে লাগাতার বমি করছে বা একেবারেই নেতিয়ে পড়ছে – তখনই ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন, সময় নষ্ট করবেন না।