শীতের দিনে যে সব মহিলা-পুরুষের মাথায় খুসকির সমস্যা হয় না, তাঁরা খুব ভাগ্যবান – আপনিও কি এতদিন এমনটাই ভেবে এসেছেন? একটু সচেতন হলেই যে আপনি নিজেও এই বিরক্তিকর সমস্যার হাত থেকে মুক্তি পেতে পারেন, তা কি জানেন?
. মাথার ত্বক শুকনো হয়ে উঠে এলে তাকে খুসকি বলা হয়। বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে দাড়ি, ভুরুতেও খুসকির প্রকোপ দেখা দিতে পারে। সাধারণত আক্রান্ত জায়গাআটি খুব চুলকোয়, আর চুলকালেই আঁশ উঠতে থাকে। গায়ের জামা, জ্যাকেট, চাদর, বালিশের ঢাকনা সর্বত্র খুসকির উপস্থিতি চোখে পড়ে সাধারণত।
. বেশিরভাগ খুসকি মোটামুটিভাবে নিরীহ, ডায়েটে ভিটামিন বি১২, জিঙ্ক, কয়েক ধরনের ফ্যাট, পর্যাপ্ত পানীয় থাকলে তার বাড়াবাড়ি মাথাচাড়া দেয় না। শীতের দিনে খুব গরম জলে স্নান না করলে বা শ্যাম্পু করার পর ভালো করে মাথা ধুয়ে নিলে স্ক্যাল্পের ত্বক শুষ্ক হয়ে আঁশের মতো ওঠে না।
. তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা গভীর হয়ে উঠতে পারে – বিশেষত যাঁরা স্ক্যাল্প সোরিয়াসিসে আক্রান্ত হন, তাঁদের খুসকি সাধারণ নিয়ম মেনে চললেই কমে না। সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
. মাথার ত্বক খুব তৈলাক্ত হলে খুসকির আশঙ্কা বাড়ে, খুব শুকনো হলেও তা বিব্রত করতে পারে। স্ক্যাল্প সোরিয়াসিস বা এগজিমার কারণে হওয়া খুসকি নাছোড় হয়, তা সারাতে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। যাঁদের ত্বকের শুষ্কতা বা চুলকানির সমস্যা আছে, তাঁদের মাথায় খুসকি থাকলে কিন্তু ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। যদি মনে হয় নতুন কোনও শ্যাম্পু বা হেয়ার প্রডাক্ট ব্যবহারের পরেই খুসকি বাড়ছে, তা হলে সেটির ব্যবহার তৎক্ষণাৎ বন্ধ করে দেওয়া উচিত – কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস সম্ভবত এই খুসকির কারণ। পারকিনসনস বা কোনও নার্ভের অসুখ থাকলেও খুসকি বাড়তে পারে।
এবার প্রশ্ন, খুসকির হাত থেকে কীভাবে চিরতরে মুক্তি মিলবে?
. প্রথমে খুসকির হাত থেকে মুক্তি নিশ্চিত করুন। বাজারচলতি অধিকাংশ ড্যানড্রাফ শ্যাম্পুর কার্যকারিতার উপরেই প্রশ্নচিহ্ন আছে, তাই ডাক্তারের পরামর্শে চুল খুসকিমুক্ত করুন আগে। তারপর তার নিয়মিত যত্ন করতে হবে।
. মাথায় তালুতে মাসাজ করা খুব জরুরি। ইচ্ছেমতো কোনও তেলের একটা ফোঁটা হাতে নিয়েও মাসাজ করতে পারেন স্নানের আগে, তাতে রক্ত চলাচল ভালো হবে, ত্বকের মরা কোষ স্থানান্তরিত হবে।
. সুষম, পুষ্টিকর খাবার ও প্রচুর জল খাওয়া জরুরি। তাতে স্ক্যাল্প ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। দই, আমলকী, কমলালেবু, বাদাম, সবুজ শাক রাখুন খাদ্যতালিকায়।
. টি ট্রি অয়েল, অ্যালোভেরা ইত্যাদির সাহায্যে স্ক্যাল্পের স্বাস্থ্য ভালো রাখার চেষ্টা করা যায়। তবে খুসকি থাকলে চুলে তেল দেবেন না – যদি কোনও ফাঙ্গাসের কারণে আপনার খুসকি হয়ে থাকে তা হলে কিন্তু তেল তার বংশবিস্তারে সাহায্য করবে।
. রোজ শ্যাম্পু দেবেন না, তাতে চুলের তৈলাক্তভাব আরও বাড়বে। সপ্তাহে দুই থেকে তিনদিনের বেশি শ্যাম্পু মাখার কোনও দরকার নেই।