দেখতে না দেখতে এসে পড়ল আর একটা নতুন বছর! অতিমারি, অর্থনৈতিক টানাপোড়েন, রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতা, সব মিলিয়ে অস্থির ছিল গেল বছরটা। স্বাভাবিকভাবেই সালফেরতা দেখার জন্য মুখিয়ে ছিলেন সকলে। নতুন বছর মানেই অতিমারির ভয় পেছনে ফেলে সব কিছু আবার নতুন করে শুরু করার সুযোগ।
আর সব কিছুই যদি নতুন করে শুরু করার কথা ওঠে, তা হলে আপনার গৃহসজ্জাই বা বাদ যাবে কেন! জানি, এটুকু পড়েই অনেকে হাঁ হাঁ করে উঠে বলছেন নতুন করে ঘর সাজানো কি চাট্টিখানি কথা! একে তো বিস্তর খরচ, তার ওপর আসবাবের নিয়মিত যত্ন নেওয়া, সব মিলিয়ে অনেক হুজ্জুত!
কিন্তু তা বলে কি নতুন বছরে ঘরকে একটুও মেকওভার দেবেন না? ঝামেলা আর খরচ, দুইই এড়াতে কাঠের বদলে বেছে নিন অ্যালুমিনিয়াম। এখন অ্যালুমিনিয়ামের দারুণ সুন্দর সব ফার্নিচার পাওয়া যায়। এ সব ফার্নিচার একদিকে যেমন দামে সস্তা, তেমনি মেনটেন করাও সহজ। তার ওপর হালকা আর স্লিক দেখতে বলে ছোট ঘরেও দিব্যি মানিয়ে যায়, একটা সুন্দর আর্বান লুক আসে ঘরের।
অ্যালুমিনিয়ামের আসবাব শুনে নাক কোঁচকাচ্ছেন নাকি? তা হলে জেনে রাখুন, বিশ্ব জুড়ে অন্যতম জনপ্রিয় ধাতুর একটি হল অ্যালুমিনিয়াম। এই যে আধুনিকতম ফ্ল্যাটে আজকাল কাঠের বদলে অ্যালুমিনিয়ামের ফ্রেম বসানো হয়, তার কারণ হল অ্যালুমিনিয়াম ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে, চড়া রোদ বা বৃষ্টিতে কাঠের মতো ফেঁপেও যায় না! অল্প ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে নিলেই ঝকঝক করে নতুনের মতো!
ফলে এ হেন অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে আজকাল দারুণ স্টাইলিশ ফার্নিচার তৈরি হচ্ছে দেদার, রট আয়রনকে পেছনে ফেলে খানিক এগিয়েও গেছে অ্যালুমিনিয়াম। এখন উজ্জ্বল রঙের অ্যালুমিনিয়ামের প্যানেল তৈরি হয়, সে সব দিয়ে তৈরি হচ্ছে চেয়ার, টেবিল, বইয়ের শেলফের মতো নানা রকমারি আসবাব। এ সব আসবাব টেকসই হয় দীর্ঘদিন, চায়ের দাগ, আঁচড় লেগে নষ্টও হয় না কাঠের মতো।
আসবাবের বদলে ছোটখাটো অ্যালুমিনিয়াম সামগ্রী দিয়েও ঘর সাজাতে পারেন। আজকার দারুণ সুন্দর অ্যালুমিনিয়াম ওয়াল আর্ট পাওয়া যায়। ছোট আয়নার সঙ্গে কম্বিনেশন করে লাগাতে পারলে ভোল পালটে যাবে ঘরের।
সবসময় যে কেনাকাটা করার দরকার, তাও নয়! অনেক বাড়িতেই পুরনো অ্যালুমিনিয়ামের কেটলি বা গাছে জল দেওয়ার ঝারি থাকে। শিরিষ কাগজ দিয়ে ঘষে ওপরের পালিশটা তুলে দিন, নোংরা থাকলে তাও উঠে যাবে। এবার উজ্জ্বল রং দিয়ে ইচ্ছেমতো ছবি এঁকে নিন গায়ে। টেবিলের সেন্টারপিস হিসেবে দারুণ দেখাবে।
বড় অ্যালুমিনিয়ামের ট্রাঙ্ক, বা ছোটবেলায় স্কুলে নিয়ে যাওয়ার সুটকেস রয়েছে? একইভাবে শিরিষ কাগজ দিয়ে ঘষে সাফ করে রং করে নিন। ট্রাঙ্ক বা বড় সুটকেস মেঝেতে রেখে সেন্টার টেবিলের মতো ব্যবহার করতে পারেন, এটা ওটা সাজিয়েও রাখতে পারেন। ছোট সুটকেসে একদিকে টুকিটাকি জিনিস রাখতে পারবেন, শো-পিস হিসেবেও সুন্দর লাগবে। ঘরে ভিন্টেজ ছোঁয়া আনতে জুড়ি নেই এ সব জিনিসের।
আপনার ঘরের বাতিতেও রাখতে পারেন অ্যালুমিনিয়ামের কারিকুরি। আজকাল নামমাত্র দামে অ্যালুমিনিয়ামের ফ্রেমে দারুণ সুন্দর সব হ্যাঙ্গিং বা ওয়াল ল্যাম্প পাওয়া যায় দোকানে। পছন্দমতো কিনে এনে লাগিয়ে দিন আর দেখুন আপনার ঘরের চেহারা নিমেষেই কেমন বদলে যায়!