সুন্দর করে সাজানো বাড়িতে থাকতে কার না ভালো লাগে বলুন? কিছু বছর অন্তর ঘরের রং ফেরানো, সিলিংয়ের কাজ (বিশেষত যদি বাড়ি পুরোনো/ ফ্ল্যাট ছাতের নিচে হয়) ইত্যাদি করানো একান্ত জরুরি, কারণ তাতে বাড়ির স্বাস্থ্য ভালো থাকে, ঘরের লুক বদল হলে নিজেরও ভালো লাগে। তবে কোনও কিছু করতে যাওয়ার আগে ভালোভাবে পরিকল্পনা করা একান্ত জরুরি।
. বাড়ি সারানোর আগে বাজেট প্ল্যান করতে হবে। এমন একটা বাজেট ধরে এগোন যা দিতে গিয়ে দম বেরিয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে না। নিজের যথাসর্বস্ব দিয়ে বা বিরাট লোন করে বাড়ি সাজানোর পরামর্শ আমরা একেবারেই দেবো না। বরং আগে থেকে ধীরে ধীরে খানিক টাকা জমান বা জমানো টাকা ম্যাচিওর করলে তবেই কাজে হাত দিন।
. রাতারাতি গোটা বাড়ির খোলনলচে বদলে ফেলার চেষ্টা করবেন না। মেরামতি, ফার্নিচার, ইন্টেরিয়র সব একসাথে পালটানোর খরচ অনেক। সে সময়টা কোথায় থাকবেন, তা নিয়েও ভাবনাচিন্তা করতে হবে। তবে এই দুটো দিক ম্যানেজ করতে পারলে অবশ্য আলাদা কথা। সেক্ষেত্রে ধীরে ধীরে পুরোনো আসবাব বেচেও দেওয়া যেতে পারে।
. ঘরের নকশায় খানিক বদল আনতে চান? সেক্ষেত্রে আপনাকে একবার বিল্ডিং কমিটির পারমিশন নিতে হবে। আশাপাশের প্রতিবেশীদেরও জানিয়ে রাখতে হবে। দেওয়াল ভেঙে বারান্দা আর বসার ঘর মিলিয়ে দেওয়া বা গেস্ট বাথরুম ভেঙে কিচেন স্পেস বাড়িয়ে নেওয়ার মতো অদলবদল অনেকেই করেন – তবে তাতে বাড়ির মূল স্ট্রাকচারের যেন কোনও ক্ষতি না হয়। মূল থাম বা পিলারে হাত দেবেন না, তাতে বাড়ির ভিত নড়বড়ে হয়ে যাবে, আপনার বিরুদ্ধে কমপ্লেন করতে পারেন অন্য প্রতিবেশীরাও।
. অনেকে নতুন বাড়ি কিনেই ইন্টেরিয়রের কাজে হাত দেন – বিশেষ করে যাঁরা সেকেন্ড হ্যান্ড ফ্ল্যাট কিনছেন, তাঁরা এমনটা করেই থাকেন। আমাদের পরামর্শ হচ্ছে, বাড়িতে কাজ করানোর আগে সেখানে অবশ্যই কিছুদিন থেকে দেখে নিন। তা হলে আরও নানা সমস্যা চোখে পড়বে। কোন জানলা দিয়ে জলের ছাট এসে দেওয়ালে ড্যাম্প ধরিয়ে দিচ্ছে, কোন ঘরে আলো-বাতাস বেশি এসব থাকতে না আরম্ভ করলে বুঝতে পারবেন না।
. আপনি যদি শিল্পীমনের মানুষ হন, তা হলে ইন্টেরিয়রের দায়িত্ব নিজের ঘাড়ে রাখুন, নতুবা বিশেষজ্ঞ কাউকে ভাড়া করে নিন। তাতে কিছু পয়সা বাড়তি খরচ হলেও কাজটা ভালো হবে। ইন্টেরিয়র ডিজাইনাররা স্পেস ব্যবহার করেন পেশাদারি দক্ষতায় – তাই ছোটো ফ্ল্যাটও দেখতে বড়ো লাগবে।
. ঘরের রং আর লাইটিং বাছাইয়ের সময় বাড়তি যত্ন নিন। কোন ঘরে কখন প্রাকৃতিক আলো আসে সেটা জানা থাকলে এই প্ল্যানটা আরও ভালোভাবে করতে পারবেন। স্রেফ এই একটা সিদ্ধান্ত ঠিকঠাক নিলে আপনার ঘের চেহারাই পালটে যাবে।
. স্টোরেজের ব্যাপারটা সব সময় মাথায় রাখবেন। খাট, সোফার মধ্যে লুকোনো স্টোরেজ কম্পার্টমেন্ট বানিয়ে নেওয়া যায় সহজে – অন্য কোথায় কীভাবে জিনিসপত্র রাখা সম্ভব তা ডিজাইনারের কাছ থেকে জেনে নিন।