ব্রেকফাস্ট নিয়ে ডায়েটিশিয়ানদের মধ্যে নানা মত আছে, তার কোনটা যে ঠিক আর কোনটাই বা ভুল, তা বুঝতে পারেন না বেশিরভাগ মানুষ। একদল বলেন, সকালের জলখাবার হওয়া উচিত খুব ভারী। অন্যদল বলেন যতক্ষণ না খিদে পাচ্ছে, ততক্ষণ খাওয়া শুরু করার দরকার নেই। আপনিও নিশ্চয়ই বুঝতে পারেন না যে এর মধ্যে কোন কথাটা ঠিক?
মনে রাখবেন, আমাদের সবার শরীর আলাদা, তার প্রয়োজনও ভিন্ন। অনেকেই আছেন, যাঁরা সকালের দিকে ভারী কিছু খেলে অস্বস্তিবোধ করেন, তাঁরা খাবেন না। আবার যাঁদের পেট পুরে খেতে কোনও অসুবিধে নেই, তাঁরা খেলেও সমস্যা হবে না। তবে সেক্ষেত্রে লাঞ্চ আর ডিনার হালকা করতে হবে। আসলে ভারী ব্রেকফাস্টের কনসেপ্টটা চলে বেশি ইউরোপ-আমেরিকায়। তাঁরা রাতের খাওয়া সারেন অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পরেই। কাজের দিনে তো সকালে এক কাপ কালো কফির ভরসায় অফিস যেতে হয়। ছুটির দিনে তরিবত করে ভারী জলখাবার খাওয়াটাই দস্তুর।
আমরা ভারতীয়রা রাতের খাবার খাই দেরিতে। আজকাল অবশ্য অনেকেই বুঝে গিয়েছেন যে বেশি রাতে খাওয়াটা স্বাস্থ্যের পক্ষে একেবারেই ভালো নয়। তার চেয়েও খারাপ হচ্ছে খেয়ে উঠেই শুয়ে পড়ার অভ্যেস। তাতে হজমের সমস্যা হয়। কিন্তু তাও, রাত ৯টা- সাড়ে ৯টার আগে অধিকাংশ পরিবারেই ডিনার খাওয়ার রীতি নেই।
যত রাতে খাবেন, তত বাড়বে হজমের সমস্যা। দিনের আলো কমতে আরম্ভ করার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের মেটাবলিজমের হার কমে। তাই ভারী কিছু খেলে অবশ্যই খানিকক্ষণ পায়চারি করা উচিত। পরদিন সকালে উঠে আগে বেশ খানিকটা জল খান। অনেকে লেবু চিপে জল খান, সেটাও ভালো অভ্যেস। ঘুম থেকে ওঠার পরেও খানিকক্ষণ হাঁটাচলা করা উচিত। তার পর যদি অল্প ফল খেতে পারেন খুব ভালো হয়।
যাঁরা ব্যায়াম করেন, তাঁরা অবশ্যই ভারী এক্সারসাইজ শুরুর আগে ডিম সেদ্ধ বা কলা বা অঙ্কুরিত ছোলা-মুগ বা আপেলের মতো কিছু একটা খেয়ে নেবেন। খালি পেটে মর্নিং ওয়াক করা যায়, ভারী ব্যায়াম নয়। অসুস্থ লাগতে বা মাথা ঘুরতে পারে, এনার্জি পাবেন না। ব্যায়াম করার পরে মিউসলি, দই বা দুধ, কর্নফ্লেক্স খেতে পারেন। খাওয়া যায় দুধ-মুড়িও। যাঁদের হাতে একেবারেই সময় থাকে না ব্রেকফাস্ট বানানোর, তাঁরা ছাতুর শরবত ট্রাই করতে পারেন।
আর এক-আধটা ছুটির দিনে জমিয়ে লুচি-তরকারি বা পরোটা আলুরদম খেতেই পারেন জমিয়ে! তবে হ্যাঁ, কখনওই লোভে পড়ে এতটা খেয়ে ফেলবেন না যাতে শরীর খারাপ লাগে। নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থেকে খাওয়াদাওয়া করলে কারও কোনও অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। খিদে পেলে খাওয়ার অভ্যেসটা কিন্তু খুব ভালো, সেটা সব সময় মেনে চলুন, আখেরে ভালোই হবে।