গরমের সঙ্গে লড়াইটাই আমাদের জীবনে সবচেয়ে বড়ো সত্য। প্রতি বছর তা জীবনে ফিরে ফিরে আসে। এবার সঙ্গে আছে বাড়তি চাপ – ভয়াল মহামারি। এই অবস্থায় সুস্থ থাকতে গেলে আপনি কী কী করতে পারেন জেনে নিন।
সুতির পোশাক পরুন: এবার এই ফাল্গুনেই যা অবস্থা, তাতে গ্রীষ্ম যে কী ভয়ানক হবে, তা তো বেশ স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে। গরমকে নিয়ন্ত্রণ করার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে সুতির পোশাক পরা। তা আপনার শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করবে।
চেষ্টা করুন সকাল ১০টা থেকে দুপুর তিনটে বাইরে না বেরনোর: সমস্ত কাজ তার আগে বা পরে শেডিউল করুন। একান্ত বেরোতে হলে ছাতা বা টুপি ব্যবহার করুন। এই রোদ্দুরে বেশিক্ষণ থাকলে অসুখ করতে বাধ্য!
বাদ দিন শীতের আনাজপাতি: আয়ুর্বেদ বলে, গরমকালে মানুষের পিত্ত তীব্র হয়ে ওঠে। তাই শরীরে শীতলভাব বজায় রাখতে চাইলে সবার আগে পিত্তবর্ধক খাবারগুলিকে বাদ দিতে হবে। শীতের আনাজ, যেমন গাজর, ফুলকপি, বিট, বাঁধাকপি বাদ দিন গ্রীষ্মের খাদ্যতালিকা থেকে। রাশ টান্তে হবে মিষ্টি আর ভাজাভুজি খাওয়ার পরিমাণেও। চিজ়, তেল-মশলা, ঝাল, কমলালেবু, ফুল ফ্যাট দুধ ইত্যাদি যতটা কম খাবেন, ততই ভালো। খুব বেশি চা বা কফি থেকে দূরে থাকতে পারলেও ভালো হয়।
এমন খাবার খান যা শরীর ঠান্ডা রাখে: বদলে রাখুন শসা, ঝিঙে, পটল, কুমড়ো, এঁচড়ের মতো সবজি ও তরমুজ, ফুটি, বেল, আপেল ইত্যাদি ফল। কিছুদিন বাদে আম উঠবে, তখন আমও খেতে পারেন। প্রতিটি ফল ও সবজিতেই জলের পরিমাণ বেশি, তা শরীর শীতল রাখবে। সেই সঙ্গে দইয়ের ঘোল, ডাবের জল ইত্যাদি খেতেও ভুলবেন না।
নির্দিষ্ট সময়ে খান: খাওয়ার মাঝে খুব বেশিক্ষণের গ্যাপ দেবেন না। খালি পেটে অ্যাসিড, পিত্ত সবেরই বাড়াবাড়ি ঘটে। দিনের মাঝখানে (অর্থাৎ লাঞ্চ ব্রেকে) সবচেয়ে ভারী খাবার খান, রাতের দিকে হালকা খেলেও চলবে। বেশি করে স্যালাড আর ফলমূল খাওয়া উচিত এ সময়ে।
স্নানের আগে মাখুন নারকেল তেল: মাথায় আর গায়ে খাঁটি নারকেল তেল মেখে স্নান করুন, আপনার ত্বকে হিট র্যাশ বেরনোর মাত্রা নিশ্চিতভাবেই কমবে। নারকেল তেল সানস্ক্রিন হিসেবেও কাজ করে, তাই নিরক্ষীয় অঞ্চলে তার বহুল ব্যবহার দেখা যায়। দিনে দু’বার স্নান করা যায়, তবে সাবান ব্যবহারের পর অবশ্যই ময়েশ্চরাইজার লাগাবেন, না হলে ত্বক রুক্ষ হয়ে যাবে।
খুব বেশি গরম পানীয় বা গরম জল খাবেন না: বরফ-ঠান্ডা পানীয় থেকে দূরে থাকুন, তাতেও শরীর গরম হয়। খাবার খাওয়ার মতোই নিয়ম করে জল খাওয়াও খুব দরকারি। অন্তত পাঁচ লিটার জল খাওয়া বাধ্যতামূলক। গরমের দিনে এমনিতেই চা-কফি খেতে ইচ্ছে করে না, গরম জলও বেশি খাবেন না। ঘরের তাপমাত্রায় জল-শরবত অবশ্য চলতে পারে।
এক্সারসাইজ় সারুন ভোরবেলা অথবা সন্ধের পর: খুব ভোরে বা সন্ধে নামার পর যখন প্রকৃতি শীতল হয়েছে, তখনই ব্যায়াম করুন। রোদের মধ্যে ভারী ব্যায়াম করলে মাসলে ক্র্যাম্প ধরা বা মাথা ব্যথা করা বিচিত্র নয়।