ছোটো বাচ্চার ব্যাগেও আজকাল একটা স্যানিটাইজার রাখা দস্তুর। যেখানে যাচ্ছে সে, একবার করে তা ছড়িয়ে জায়গাটা জীবাণুমুক্ত করে ফেলছে – এই পর্যন্ত ভাবলে বেশ আশ্বস্তই লাগে। কিন্তু আদতে তো সব জীবাণুনাশকই রাসায়নিক, তার বাড়াবাড়ি ব্যবহারে ক্ষতির আশঙ্কা নেই তো?
ডিসইনফেকট্যান্ট যদি যথাযথভাবে ব্যবহার না করা হয়, তা হলে কিন্তু তা থেকে কিছু সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে যাঁরা অ্যাস্থমা রোগী, হাঁপানি বা অ্যালার্জিতে ভোগেন, বয়স হয়েছে, গর্ভবতী, শিশু – তাঁদের যে কোনও রাসায়নিক ব্যবহারের সময়েই সতর্ক হতে হবে।
আপনার চোখ, নাক, মুখ থেকে দূরে রাখতে হবে যে কোনও রাসায়নিককেই। এগুলি শরীরের ভিতরে যাওয়ার প্রবেশপথ। কোনওভাবেই তা যেন ভিতরে না যায়, সেটা নিশ্চিত করুন। যেখানে হাওয়া চলাচলের রাস্তা নেই, সেখানে জীবাণুনাশক ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্ক হতে হবে।
কঠিন, নরম, ফ্যাব্রিক, ইলেকট্রনিক, ধাতু, চামড়া – ঠিক কোন ধরনের সারফেস আপনি জীবাণুমুক্ত করতে চান? সব জীবাণুনাশক যে সব ধরনের সারফেসে কার্যকর হবে, তার কোনও গ্যারান্টি নেই। তাই কিসের উপর ব্যবহার করবেন তা ভেবে তবে ডিসইনফেকট্যান্ট কিনুন। ব্যবহারবিধি মেনে চলুন এবং কখনওই অন্য কোনও ক্লিনার বা জীবাণুনাশকের সঙ্গে তা মেশাবেন না।
আপনার হ্যান্ড স্যানিটাইজারে অন্ততপক্ষে ৬০ শতাংশ কনসেনট্রেটেড অ্যালকোহল থাকা উচিত। সম্ভব হলে খাওয়ার আগে হাত ধুয়ে নিয়ে তবে খান – স্যানিটাইজার লাগিয়ে খেতে বসা ভালো অভ্যেস নয়।
আর একটা কথা জেনে রাখুন – কেমিক্যাল ডিসইনফেকট্যান্ট ছড়িয়ে বা ফিউমিগেট করে কিন্তু করোনা ভাইরাস শুধু নয়, বেশিরভাগ জীবাণুকেই কাবু করা যায় না। বরং তা শ্বাসযন্ত্রের মধ্যে দিয়ে প্রবেশ করে আপনার স্বাস্থ্যহানির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। অতিমারির শুরুতেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলে দিয়েছিল যে ওভাবে সংক্রমণ রোখা সম্ভব হবে না, বরং মানুষের পক্ষে ক্ষতিকারক হতে পারে।
ক্লোরিন বা ব্লিচিংয়ের মতো কড়া কেমিক্যাল থেকেও লাভের চেয়ে ক্ষতির আশঙ্কা বেশি। তাছাড়া কোনও ডিসইনফেকট্যান্ট সরাসরি মোবাইল, ল্যাপটপ বা ট্যাবে ব্যবহার করবেন না। তা একটা কাপড়ে নিন, তারপর সেই কাপড়ের টুকরো দিয়ে আপনার ডিভাইসটি পরিষ্কার করে নিতে হবে।
একটা কথা ঠিক যে কোভিড জীবাণু কোন সারফেসে ঠিক কতক্ষণ থাকে, তা বোঝা মুশকিল – কারণ এ পর্যন্ত এ বিষয়ে যা যা পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে, তার সবটাই ল্যাবরেটরিতে। তাই কোনও সারফেস, যা আরও অনেকে ব্যবহার করেছেন – ছোঁওয়ার পর ভালো করে হাত ধুয়ে নিন অতি অবশ্যই।