ত্বকের রুক্ষতা, খসখসানি বাগে আনতে পারছেন না কিছুতেই? সম্ভবত তার জন্য আপনার প্রিয় সাবানটি দায়ী! না না, সাবান বদলে ফেললেই কিন্তু সমাধান হবে না – তার কারণ সাবানের কাজই হচ্ছে বাড়তি তেল-ময়লা ধুয়ে ফেলতে সাহায্য করা। সে কাজ করতে গিয়ে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে উপযোগী তেলও সরে যেতে পারে – সেটা সাবানের দোষ নয় কিন্তু!
ডিটারজেন্ট বলুন বা আপনার গায়ে মাখার সাবান বা শ্যাম্পু, সবেতেই সোডিয়াম লরেল সালফেট বা SLS নামক একটি উপাদান থাকে। তার কাজ হচ্ছে সমস্ত ময়লাকে আলগা করে দেওয়া। এমনি জল দিয়ে ধুলে খানিকটা ময়লা সাফ হবে, বাকিটা দূর করতে সাহায্য করবে এটি। বলা হয়, SLS ছাড়া সাবান বা কাপড়কাচা পাউডার খুঁজতে – কিন্তু কোমল বলে পরিচিত অনেক ফেস ওয়াশ বা বডি ওয়াশেও এটি লুকিয়ে থাকে। যাঁদের ত্বক খুব রুক্ষ আর স্পর্শকাতর, তাঁরা এই ধরনের উপাদান থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন।
অনেকে বলবেন, তাঁরা দামী ময়েশ্চরাইজিং সাবান ব্যবহার করেন। জেনে রাখুন, ময়েশ্চার আর সাবান এই দুটো শব্দ পাশাপাশি থাকা মানে হচ্ছে সোনার পাথরবাটি গোছের কিছু একটা। ত্বকের সিবেসিয়াস গ্ল্যান্ড সারাক্ষণ সক্রিয় থাকে এবং তেল তৈরি করে। সেই প্রাকৃতিক তেলটা হচ্ছে আপনার সুরক্ষাকবচ। তা ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে। কিন্তু বাইরের দূষণ আবার এর উপরেই আটকে যায়, তাই ত্বক ময়লা হয়। সাবান সেটাই সাফ করে দেয়।
সাবানে ময়েশ্চারের ভাগ বাড়ানোর জন্য তাতে তেল বা অন্য কোনও ফ্যাট মেশানো হয়। কিন্তু তার মাত্রা খুব কম। দেখা গিয়েছে, মোট ওজনের ৭%-এর বেশি ফ্যাট মেশালে সাবান গলে যায় তাড়াতাড়ি, আর ৩% এর কম হলে তা ত্বককে অতি রুক্ষ করে তোলে। তাই বুঝতেই পারছেন যে, দুধের সর বা বাড়তি ময়েশ্চার মেশানো কোমল সাবান তৈরি করাই সম্ভব নয়?
কোন ধরনের সাবান ব্যবহার করা উচিত?
চেষ্টা করুন গ্লিসারিন, হ্যালিউরোনিক অ্যাসিড, ল্যানোলিনযুক্ত সাবান কেনার। সাবানে খুব চড়া গন্ধ বা গাঢ় রং মেশানো হলেও মুশকিল – তা ত্বকের রুক্ষতার অন্যতম কারণ হয়ে উঠতে পারে। স্পর্শকাতর ত্বক হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সাবান ব্যবহার করা উচিত।
আস্থা রাখতে পারেন দুধ বা নারকেল তেলের উপরেও। এগুলিও খুব যত্ন নিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে। দুধ, আটা, কমলালেবুর খোসা ইত্যাদি মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন… সনাতন কাল থেকেই ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য এই ধরনের উপাদানের ব্যবহার হয়ে এসেছে।
সাবান ব্যবহারের পর অবশ্যই কোনও তেল, ক্রিম বা ময়েশ্চরাইজার ব্যবহার করতে হবে। একমাত্র তাতেই ঠেকাতে পারবেন রুক্ষতা – আর কোনও পথেই সাফল্য মিলবে না।