কথায় বলে, বাঙালির পায়ের তলায় সরষে – বেড়াতে পেলে সে আর কিছুই চায় না! কিন্তু বেড়াতে যাওয়া মানেই হচ্ছে বিশাল লাগেজ টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া, ফিরেই আবার সে সব ধুয়ে তোলা! কখনও শীতের দেশে গিয়ে দেখলেন গরম কাপড় তেমন আনা হয়নি, সমুদ্রের ধারে কম পড়ল সান্ধ্য পার্টির সাজ। বার বার কেন এমন হয় ভেবে দেখেছেন কখনও?
সহজ উত্তর হচ্ছে, প্যাকিং করতে গিয়ে আপনার গোলমাল হয়ে যায়। বড়ো শহরে ভালো হোটেলে থাকলে একরকম, সেখানে তাও লন্ড্রি সার্ভিস আছে, কাপড়চোপড় কেচে নিয়ে ফের পরা সম্ভব। কিন্তু ট্রেকিংয়ে গেলে বা পাহাড়ে হোম স্টেতে থাকলে তো এত সুবিধে পাবেন না – তখন কীভাবে প্যাক করবেন?
. পরিবারের একাধিক সদস্য কোথাও যাওয়ার প্ল্যান করছেন? সবার জন্য আলাদা ব্যাকপ্যাক/ ব্যাগ রাখুন। তাতে জিনিসপত্র খুঁজে পাওয়া সহজ হবে।
. যতদিনের জন্য বেড়াতে যাচ্ছেন, ততগুলো আরামদায়ক অন্তর্বাস সঙ্গে রাখা জরুরি। অন্তর্বাস সারাক্ষণ পরতে হয়, আচমকা ভিজে গেলেই বা কী করবেন? তাই যথেষ্ট পরিমাণে সঙ্গে রাখুন।
. যেখানে যাচ্ছেন, সেখানকার আবহাওয়া সম্পর্কে ভালোভাবে খোঁজ নিন, আচমকা বৃষ্টি এসে গেলে কী করবেন সেটাও ভেবে রাখুন। শীতকালেও কিন্তু মাঝে মাঝে বৃষ্টি হয়, তাই ব্যাকপ্যাক বা ব্যাগের রেন কভার সঙ্গে রাখতে ভুলবেন না।
. এক সেট ভালো পার্টিওয়্যার ও জুতো অবশ্যই সঙ্গে রাখুন। ভালো কোথাও খেতে গেলে, আচমকা নেমন্তন্ন পেলে কাজে আসবে। যাঁরা জঙ্গলে বা শহর থেকে বহু দূরে ট্রেকিংয়ে যাচ্ছেন এবং ফ্যান্সি কোথাও যাওয়ার প্রশ্নই নেই, তাঁরা অবশ্য এই বাহুল্য বাদ দিতে পারেন।
. প্যাকিংয়ের সময়ে মেনে চলুন ১-২-৩-৪-৫-৬ রুল। অর্থাৎ, একটি টুপি, দুই জোড়া জুতো, তিনটি প্যান্ট (এর মধ্যে একটি যেন কনভার্টিবল হয় অবশ্যই), চারটি উপরে পরার জামা, পাঁচ জোড়া মোজা এবং ছ’টি অন্তর্বাস রাখুন – এতে পাঁচ-ছয়দিনের বেড়ানো হয়ে যাবে। শীতের জায়গায় গেলে এর সঙ্গে আপনাকে যোগ করতে হবে সকালে ও বিকেলে পরার জ্যাকেট এবং উপর ও নিচের থার্মালওয়্যার। চেষ্টা করুন ঠান্ডা জায়গায় লেয়ার করে পোশাক পরার – বেলা বাড়লে গরম বাড়বে। তখন একগাদা সোয়েটার ইত্যাদি পরলে কিন্তু শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাবে।
. যেখানেই যান না কেন, সঙ্গে একটি ওয়াটারপ্রুফ, ফোল্ডিং ব্যাকপ্যাক অবশ্যই রাখুন। হাঁটার সময়ে এর মধ্যে জলের বোতল, কিছু শুকনো খাবার – যেমন খেজুর, বাদাম, শুকনো চেরি, ক্র্যানবেরি ইত্যাদি, চকোলেট, চুইং গাম, রাখতে ভুলবেন না। চিপসজাতীয় তেলে ভাজা খাবার না রাখাই ভালো – তাতে বেশি তেষ্টা পায়, অম্বল হওয়ার আশঙ্কাও থাকে।
. এমন জুতো নিন যা হাঁটার জন্য সবচেয়ে আরামদায়ক – পা খুব চওড়া হলে এক সাইজ বড়ো জুতোও নেওয়া যায়। মোজার সঙ্গে জুতো পরলে ভিতরেও পা খানিক নড়াচড়া করতে পারবে।
. স্কার্ফ, ব্যান্ডানা অবশ্যই রাখুন সঙ্গে। আর রাখুন একটি পাতলা সুতির চাদর। অল্প ঠান্ডায় গায়ে দেওয়া, কোথাও পেতে বসা থেকে আরম্ভ করে নানা প্রয়োজনে লাগে সুতির চাদর – হোটেলের কম্বল ইত্যাদির ভিতরেও এটি ব্যবহার করতে পারেন।
. কুইক ড্রায়িং পোশাক সঙ্গে রাখুন। রিসাইকেলেবল মেটিরিয়ালের এই পোশাক অবশ্য বেড়াতে যাওয়ার জন্যই ভালো – রোজের ব্যবহারের জন্য নয়।
. এমন একটি লিকুইড সাবান রাখুন সঙ্গে যা স্নান থেকে আরম্ভ করে বাসন ধোওয়ার কাজেও ব্যবহার করা যাবে।