রোজের জীবনে আমরা এমন অনেক রাসায়নিক ব্যবহার করি, যা ইচ্ছে করলেই এড়িয়ে চলা যায়। সবাই চাইছেন অরগ্যানিক জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত হয়ে উঠতে – আপনিই বা পিছিয়ে থাকবেন কেন?
ভুললে চলবে না যে এখন বাইরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মারণ ভাইরাস, ঘরের মধ্যে ক্রমশ বাড়ছে মশা-মাছির উৎপাত। মশাবাহিত ম্যালেরিয়া বা ডেঙ্গুও কিন্তু ভয়ানক হতে পারে, তাই তা থেকেও দূরে থাকার ব্যবস্থা করতে হবে।
মুশকিল হচ্ছে, অধিকাংশ মশার রেপেলেন্টেই তীব্র একটা গন্ধ থাকে এবং তা নাকে গেলে অনেকের শ্বাসকষ্টের সমস্যা হয়। তাই বিশেষ করে বাড়িতে বাচ্চা বা বয়স্ক কেউ থাকলে এ ধরনের তীব্র গন্ধযুক্ত কিছু না জ্বালানোই ভালো। বেছে নিন প্রাকৃতিক সুগন্ধ।
হাতের কাছে কয়েকটি তেল আর এসেনশিয়াল অয়েল থাকলেই আপনি দিব্যি চমৎকার দাওয়াই তৈরি করে ফেলতে পারবেন। এগুলি সরাসরি গায়ে লাগানো যাবে, আবার ডিফিউজারে জ্বালিয়ে রাখলেও গোটা ঘরে ছড়িয়ে পড়বে সুগন্ধ।
লেমন ইউক্যালিপ্টাস অয়েল
10 মিলি লেমন ইউক্যালিপ্টাস তেল আর 90 মিলি নারকেল তেল একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এর গন্ধটাই খুব চনমনে।
ল্যাভেন্ডার অয়েল
ঠিক আগের পদ্ধতিতে কোনও ক্যারিয়ার অয়েল আর ল্যাভেন্ডার তেল মিশিয়ে নিন ভালো করে। এই মিশ্রণে অবশ্য একটু অ্যাপেল সাইডার ভিনিগারও মেশাতে পারেন। সাতদিন ভালো থাকবে, তার পর আবার বানাতে হবে।
সিট্রোনেলা তেল
অর্ধেক জল আর অর্ধেক অ্যাপেল সাইডার ভিনিগারের মিশ্রণে কয়েক ফোঁটা সিট্রোনেলা তেল মিশিয়ে ভালো করে ঝাঁকিয়ে নিন। ব্যাগে রাখুন, যখন খুশি ব্যবহার করতে পারেন।
লবঙ্গ তেল
লবঙ্গ তেলের সঙ্গে ক্যারিয়ার অয়েল মিশিয়ে নিলে তা পোকামাকড় তাড়াতে দারুণ কাজে লাগে।
টি ট্রি তেল
টি ট্রি তেল আর নারকেল তেলের মিশ্রণও পতঙ্গনিরোধক হিসেবে খুব কাজের। ডিফিজারে দিলে 20 মিলি টি ট্রি অয়েলের সঙ্গে 90 মিলি নারকেল তেল মেশান। সরাসরি ত্বকে লাগালে 10 মিলি নারকেল তেল হলেই চলবে।
পিপারমিন্ট তেল
নারকেল তেলের বোতলে মিশিয়ে রাখুন পিপারমিন্ট এসেনশিয়াল অয়েল। এই তেল গায়ে-হাতে মেখে নিন। বাচ্চাদের গায়েও স্বচ্ছন্দে মাখানো যায় এই তেল।
নিম তেল
আপনার নারকেল বা অলিভ অয়েলের বোতলে মিশিয়ে নিন খানিকটা নিমের তেল। তাতেও একইরকম সুবিধে পাবেন। নিম তেলের তীব্র গন্ধে মশা তো বটেই, পোকামাকড়ও দূরে পালায়।
বেকিং সোডা আর ভিনিগারের মিশ্রণ
বেকিং সোডা আর ভিনিগার একসঙ্গে মিশলে কার্বন ডাই অক্সাইড বেরোয়, সেই গন্ধে আকৃষ্ট হয়ে এসে হাজির হয় মশা। তাই মশা বা পোকামাকড়ের উৎপাত বেড়ে গেলেই এই পদ্ধতি ট্রাই করে দেখুন।
একটা বাতিল প্লাস্টিকের বোতল অর্ধেক করে কেটে নিন। নিচের অংশে খাবার সোডা দিন, উপরের ভাগটা এর উপর উলটো করে বসান, যেন ফানেলের মতো দেখতে লাগে। উপর থেকে ঢেলে দিন ভিনিগার। এই ফাঁদে মশা বা পোকামাকড় এসে বসবেই!
লেবু আর লবঙ্গ
অর্ধেক করে পাতিলেবু কেটে নিন। তার মধ্যে আস্ত লবঙ্গ গুঁজে দিন। এইগুলি ঘরের চারপাশে ছড়িয়ে রাখলে দেখবেন পোকামাকড় মোটেই জ্বালাচ্ছে না।