হাঁটার চেয়ে ভালো ব্যায়াম কম আছে, তার উপর যে কোনও বয়স বা শারীরিক অবস্থাতেই আপনি এই ব্যায়াম শুরু করতে পারেন। রোজ হাঁটলে ভালো থাকে মুড, মেদ কমতে আরম্ভ করে, এড়ানো যায় ডায়াবিটিস, হাইপারটেনশন, হার্টের অসুখের মতো ব্যাধি, হজম ভালো হয়।
শুধু তাই নয়, জোরে হাঁটা, যার পোশাকি নাম হচ্ছে ব্রিস্ক ওয়াকিং – আপনার পায়ের মাসল সুগঠিত করে তোলে, কমায় এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা। জিম বা অন্যত্র যাওয়ার দরকার নেই, বাড়ির ছাদে বা কাছের পার্কে গিয়ে হাঁটলেই আপনি সুস্থ থাকবেন। এমন ভালো বন্দোবস্ত দুনিয়ায় ক’টা হয় বলুন তো?
মজাটা হচ্ছে, আমাদের শরীর কিন্তু খুব বুদ্ধিমান। যে মুহূর্তে সে বুঝবে যে আপনি তার কষ্ট করে জমিয়ে রাখা সাধের ক্যালোরি খরচ করার বন্দোবস্ত করে ফেলেছেন, সেই ক্ষণেই তার গেম প্ল্যান বদলে যাবে। রোজ যতটা ব্যায়াম করছেন, সেটাই বছরের পর বছর চালিয়ে গেলে চলবে না – কারণ একটা সময়ের পর তাতে আর কোনও কাজ হবে না। তাই মাঝে মাঝেই ব্যায়ামের রুটিন বদলে ফেলা দরকার।
এবার আপনি নিশ্চয়ই ভাবছেন যে, হাঁটার রুটিনে আবার কীভাবে বদল আনবেন, তাই না? ট্রাই করুন ইন্টারভেল ট্রেনিং ওয়াক। মানে, আপনি হাঁটার গতি বদলে ফেলুন মাঝে মাঝে – ধরুন টানা এক মিনিট হাঁটলেন, তার পর ৩০ সেকেন্ড জগিং করুন। ফের হাঁটুন। আবার এক মিনিট হাঁটার পর ২০ সেকেন্ড দৌড়োন। ফের স্বাভাবিক গতিতে হাঁটুন। এইভাবে টানা ৪৫ মিনিটের একটা সেশন চালাতে পারলে খুব ভালো হয়। এমন কিছু করবেন না যাতে হাঁপিয়ে যান বা শ্বাস নিতে অসুবিধে হয়।
মাঝে মাঝে সঙ্গে একটা রেজিস্টান্স ব্যান্ড নিয়ে হাঁটতে যান। হাত, পায়ের ব্যায়াম হবে। যাঁদের ব্যক্তিগত স্যান্ড ব্যাগ আছে, তাঁরা সপ্তাহে দু’দিন অন্তত সেটা পরেও হাঁটতে যেতে পারেন। তাতেও খুব ভালো কাজ দেবে। যাঁরা বাড়ির ছাতে বা নিচের লনে হাঁটতে যান, তাঁরা মাঝে মাঝে হাঁটার সঙ্গে সঙ্গে সিঁড়িও ভাঙতে পারেন। তাতেও রোজের রুটিনে একটা বদল আসতে বাধ্য।
যাঁরা মাত্রাতিরিক্ত স্ট্রেস বা মানসিক চাপের শিকার, তাঁরা হাঁটার সময়ে কেবল নিজের শ্বাস প্রশ্বাসের দিকে মন দিন। প্রতিবার শ্বাস নেওয়ার সময় বাম পা ফেলুন, ছাড়ার সময়ে ফেলুন ডান পা। হাঁটার সময়ে অন্য কোনও দিকে মন দেবেন না। এতে মানসিক চাপ কমতে বাধ্য।
তবে যাই করুন না কেন, হাঁটার সময়ে পায়ে বা গোড়ালিতে যেন বাড়তি চাপ না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাই সব সময় ভালো জুতো পরা উচিত। যাঁরা নিয়মিত হাঁটেন, তাঁরা বছরখানেক পর জুতোর সোল পরীক্ষা করে দেখে নেবেন। ভালো জুতো ছাড়া হাঁটা কিন্তু ঝুঁকির কারণ হতে পারে।