বর্ষ্যার ভ্যাপসা গরম আর প্যাচপ্যাচানি যেমন আমাদের পক্ষে বিরক্তিকর, ঠিক তেমনভাবেই তা আমাদের পোষ্য প্রাণীগুলিকেও বিব্রত করে। বিশেষ করে যাঁরা খুব রোমশ কুকুর বা বিড়াল রেখেছেন শখ করে, তাঁরা নিশ্চিতভাবেই জানেন যে এই সময়ে ঠিকমতো যত্ন না করলে পোষ্যদের গায়ে পোকার আক্রমণ হয়, রোম ওঠে খুব, ঘরে গন্ধ হয়ে থাকে। এই অবস্থায় কী করা উচিত?
. যে সব কুকুর বা বিড়ালের রোম লম্বা হয়, তাদের ক্ষেত্রে সপ্তাহে একদিন স্নান যথেষ্ট৷ পায়ের থাবার ফাঁকে যেন জল না জমে থাকে, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে৷ বর্ষায় আদৌ স্নান করানোর দরকার আছে কিনা সেটা জেনে নিন আপনার পশু চিকিৎসকের থেকে। দরকারে ডায়েট বদলাতে হবে, না হলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে।
. লাগাতার বৃষ্টি হতে থাকলে স্নান না করিয়ে গরম জলে তোয়ালে ভিজিয়ে ভালো করে নিংড়ে নিয়ে গা মুছিয়ে দিন, ড্রাই বাথও ব্যবহার করতে পারেন৷
. প্রতিবার বাইরে থেকে বেড়িয়ে আসার পর বা বৃষ্টির জলে ভেজার পর পোষ্য বাড়িতে ফিরে এলে তার গা মুছে দিন শুকনো তোয়ালে দিয়ে৷ আর্দ্রতা রোমের গোড়ায় বসে গেলেই স্যাঁতসেঁতে গন্ধ ছাড়বে, চুলকানি হবে ত্বকে৷
. গা মোছার সময় খেয়াল রাখবেন কানের দিকেও, কানের প্রতিটি ভাঁজ-খাঁজ একেবারে শুকনো করে মুছে দেওয়া একান্ত প্রয়োজনীয়৷ যে সব কুকুরের লম্বা কান, তাদের ক্ষেত্রে আরও বেশি যত্নশীল হওয়া আবশ্যক৷ নতুবা জল বসে কানে ইনফেকশন হবে৷
. যদি টানা বৃষ্টি পড়তে থাকে, তা হলে পোষ্যটিকে নিয়ে বাইরে না বেরিয়ে ঘরের ভিতরেই ব্যায়াম করানোর বন্দোবস্ত করুন৷ বৃষ্টিতে ভেজার চেয়ে ঘরে খেলাধুলো করলে তার স্বাস্থ্য ভালো থাকবে৷ মনে রাখবেন, বেশি বৃষ্টিতে ভিজলে কুকুরের গায়ে চুলকানি বাড়ে, বিড়ালের শ্বাস নিতে কষ্ট হয়৷ পাশাপাশি কুকুর বা বিড়ালকে অ্যাকটিভ রাখাও একান্ত জরুরি, তা না হলেই ফ্যাট বাড়বে, তার কারণে আরও নানা সমস্যা হতে থাকবে।
. গায়ে পোকা দেখতে পেলে স্নান করানোর সময় অ্যান্টি-টিক শ্যাম্পু ব্যবহার করাটা একান্ত আবশ্যক৷ না হলে অ্যান্টি-সেপটিক শ্যাম্পু ব্যবহার করুন৷ পোকা নিরোধক কলারও কিনতে পাওয়া যায়, সেটাও ট্রাই করে দেখতে পারেন৷ তবে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে সব সময়ে, দিনে অন্তত দু’বার ভালো করে রোম আঁচড়ে দিন৷ কুকুর বা বিড়াল গা চুলকোচ্ছে কিনা সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
. কোনও পরিস্থিতিতেই পোষ্যের ডি-ওয়ার্মিং আর ভ্যাকসিনেশনের ব্যাপারে গাফিলতি করবেন না৷ ইমিউনাইজ়েশন শেডিউল মেনে চলুন৷ তাতে আপনার পোষ্য ভিতর থেকে শক্তিশালী হয়ে উঠবে, ছোটখাটো ইনফেকশন তাকে বিব্রত করতে পারবে না৷ নিয়মিত নখ কাটা, দাঁত পরিষ্কার করাও প্রয়োজনীয়৷ গ্রুমিং সেশনে নিয়ে যেতে পারলে ভালো হয়, না হলে বাড়িতে নিজেই গ্রুম করান ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে৷
. পোষ্যের ডায়েট যদি পুষ্টিকর হয়, তা হলে তার সামগ্রিক স্বাস্থ্যই ভালো থাকে৷ ঝলমল করে রোম, চোখের দৃষ্টি হয় পরিষ্কার, বাড়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা৷ তাই পোষ্যকে সেরা ডায়েট দিন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে৷ পানীয় জল যেন পরিশ্রুত হয়৷ পোষ্যের ওজনের উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখুন৷ ওজন বাড়লেই হার্টের উপর বাড়তি চাপ পড়ে, হাড়ের জোড়ের জায়গাগুলি ক্রমশ দুর্বল হতে আরম্ভ করে৷