আরশোলার আকার তেমন বড়ো নয়, তা কামড়ায় না, সাপের মতো প্রাণঘাতীর বিষ নেই, খুব জটিল কোনও রোগ ছড়ায় না। কিন্তু তা সত্ত্বেও বহু মানুষ আরশোলা দেখলেই বেজায় ভয় পান। যদি কখনও কাউকে আরশোলার ভয়ে ঠকঠকিয়ে কাঁপতে দেখেন, তা হলে প্লিজ হাসাহাসি করে ব্যাপারটাকে লঘু করে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না – কারণ এটি পৃথিবীর সবচেয়ে ‘কমন’ ফোবিয়ার অন্যতম। সারা দুনিয়ার বহু মানুষ আরশোলার ভয় বয়ে নিয়ে বেড়ান জীবনভর।
যদি আরশোলা দেখলে আপনার শারীরিক সমস্যা হয়, হৃদস্পন্দনের হার বেড়ে যায়, হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসে এবং চিন্তা-ভাবনা যথাযথভাবে কাজ না করে তাহলে মনোবিদ দেখিয়ে নেওয়ার কথা ভাবতে পারেন। কিছু সাধারণ প্র্যাকটিস আপনার ভয় কমাতে সাহায্য করবে এবং বাড়ির বাইরে কোথাও আরশোলার দেখা পেলে বিপদে পড়বেন না।
কিন্তু কেন আরশোলা দেখে মানুষ এমন ভয় পায়?
. দেশ-বিদেশের নানা জায়গায় এ নিয়ে গবেষণা হয়েছে, এবং দেখা গিয়েছে যে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই ভয়ের শিকড় লুকিয়ে থাকে মানুষের শৈশবে। বাবা-মা বা বাড়ির বড়োদের বাচ্চারা সাধারণত অনুকরণ করে – কারও আরশোলা নিয়ে ভয় থাকলে সেটা চারিয়ে যেতে পারে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যেও।
. আরশোলার শরীরে ইউরিক অ্যাসিড জমা থাকে এবং তা থেকে বিশ্রি গন্ধ ছাড়ে। আরশোলা খাবার ও বাসস্থানের সন্ধানে নালা-নর্দমায় ঘুরে বেড়ায় – সেই কারণেও দুর্গন্ধ ছড়ায়। যাঁরা অ্যাস্থমায় ভোগেন, তাঁদের শ্বাসকষ্ট বাড়তে পারে আরশোলার গায়ে থাকা অ্যালার্জেনের কারণে। সেটাও ভয়ের একটা কারণ হতে পারে।
. আরশোলা এমনই একটি পতঙ্গ, যা মানুষের ‘ডিসগাস্ট রেসপন্স’কে ট্রিগার করে। তার তেলতেলে শরীর, ওড়ার সময় ফড়ফড়ানি আওয়াজ, মাটিতে চলা ও উড়ে গায়ে বসা সব কিছুর মধ্যেই এমন একটা ব্যাপার আছে যা থেকে ঘেন্না জন্ম নেয়।
বাড়িতে যাতে আরশোলা না থাকে, তা কীভাবে নিশ্চিত করবেন?
. বাথরুম ও রান্নাঘরের সমস্ত নর্দমা পরিষ্কার রাখুন – নর্দমার মুখে বা ঝাঁঝরিতে নিয়মিত ন্যাপথালিন বল দিয়ে রাখা উচিত।
. যেখানে সেখানে খাবারের টুকরো ছড়িয়ে রাখবেন না – ঘর একেবারে পরিষ্কার রাখুন, মোছার সময়ে ফিনাইল ব্যবহার করুন।
. মাঝে মাঝেই আরশোলা দেখতে পাচ্ছেন ঘরে? তার মানে হচ্ছে আপনার বাড়িতে আরশোলার কলোনি গড়ে উঠেছে – একটা দেখতে পেলে ১০০ টা চোখ এড়িয়ে যাচ্ছে। কীটনাশক স্প্রে করুন, পেস্ট কনট্রোল ডাকতে পারেন।
. পুরোনো জিনিসপত্র ডাঁই করে রাখবেন না, তাতে আরশোলার উপদ্রব বাড়ে।