পরিবারের কাঠামো ক্রমশ বদলাচ্ছে। বদলাচ্ছে মানুষের মূল্যবোধ। একটা সময়ে ভারতীয় সমাজব্যবস্থায় কেউ বাবা-মায়ের থেকে আলাদা থাকার কথা ভাবতেই পারত না। আজ কাল বাবা-মায়েরা সারাক্ষণ সন্তানের ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলতে লজ্জা পান।
অনেকে মনে করেন যে সন্তানের থেকে একটু দূরে থাকলে সম্পর্ক ভালো থাকে। তাই কার্যসূত্রেই হোক বা অন্য যে কোনও কারণে – সন্তানের থেকে বাবা-মায়ের আলাদা থাকাটা কিন্তু এখন বেশ স্বাভাবিক। কিন্তু তাই বলে তো আর তাঁদের দায়িত্ব ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলাটা উচিত নয় – বিশেষ করে শরীর-স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতেই হবে।
এখন যে সময়ের মধ্যে দিয়ে আমরা যাচ্ছি, তাতে বয়স্করা আতঙ্কিত। এমনিতেই ৬০-৬৫ পেরনো অনেক মানুষেরই ডিপ্রেশন থাকে – সামান্য কিছুজন ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। বাকিদের ক্ষেত্রে তা ধরাই পড়ে না।
বয়সকালে নানা শারীরিক সমস্যার সঙ্গে ডিপ্রেশন জুড়ে যায় ও পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হতে আরম্ভ করে। তাই একেবারে গোড়া থেকেই সতর্ক হতে হবে। সুবিধে হচ্ছে, ডিপ্রেশনের লক্ষণগুলি চেনা সহজ। লক্ষ করে দেখুন তো, আপনার মা-বাবা কি এই ধরনের ব্যবহার করছেন?
১. আপনার সঙ্গে আগে যেভাবে যোগাযোগ রাখতেন, সেটা কি বদলেছে?
কোনও কোনও ক্ষেত্রে মা-বাবা ছোটো ছোটো বিষয় নিয়ে আপনাকে বিরক্ত করতে পারেন বার বার, কখনও আবার মোটেই কথাবার্তা বলবেন না। দুটোই অস্বাভাবিক। মনে রাখবেন, রাতারাতি কেউই একাকীত্বে ভুগতে আরম্ভ করেন না, এটা একটা দীর্ঘ প্রসেস। তবে খেয়াল রাখলে গোড়া থেকেই বুঝতে পারবেন কী হচ্ছে।
২. মোটিভেশন নেই, উলটে বাড়ছে নেগেটিভ চিন্তা
সারাক্ষণ নেগেটিভ চিন্তাভারনা করাটা কিন্তু খুব সুবিধের নয়। এর সঙ্গে সাধারণত নড়াচড়া করার ইচ্ছেটাও চলে যায়। যদি দেখেন যে শরীর বা স্বাস্থ্য নিয়ে তাঁদের আগের মতো মাথাব্যথা নেই, ওষুধ খাচ্ছেন না সময়ে — তা হলে সাবধান হোন।
৩. অব সময় কনফিউশনে ভুগছেন?
বয়স হয়ে গেলে সিদ্ধান্ত নিতে একটু সমস্যা হতে পারে – সেটা মোটেই বিচিত্র নয়। কিন্তু সব সময়েই কনফিউসড হলে সতর্ক হোন। বাড়ি বা আলমারির চাবি কোথাও রেখে মনে করতে না পারা, টাকাপইয়সা হারিয়ে ফেলা, সহজ কথা মনে রাখতে না পারার মতো সমস্যা হলে রাগ করবেন না, পেশাদারের সাহায্য নিন।
৪. বিরক্তভাব
হাসিখুশি মানুষ সারাক্ষণ বিরক্ত হয়ে থাকলে কিন্তু সচেতন হতে হবে। আগে যে সব কাজ করে আন্নদ পেতেন, সেগুলি এড়িয়ে যাচ্ছেন কিনা তা-ও দেখুন।
৫. ক্রমশ স্থবির হয়ে যাচ্ছেন কি?
আগের মতো চটপটে নেই, সারাক্ষণ মৃত্যুচিন্তা করছেন, নিজেকে ব্যর্থ ভাবতে আরম্ভ করেছে আচমকাই? এও কিন্তু ক্রনিক ডিপ্রেশনেরই লক্ষণ!