ম্যালওয়্যার কাকে বলে জানেন তো? ম্যালিশিয়াস সফটওয়্যার বা সাধারণ মানুষকে ঠকাতে যে সব সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়, তাকে বলা ম্যালওয়্যার।
সম্প্রতি ভারতে ‘জোকার’ নামের একটি ম্যালওয়্যার হানা দিয়েছে, মহারাষ্ট্র পুলিশের সাইবার সেল বিভাগ ইতিমধ্যেই অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহারকারীদের উদ্দেশে জারি করেছে বিশেষ সতর্কবার্তা – বলা হয়েছে নতুন কোনও অ্যাপ নামানোর আগে সতর্ক থাকতে।
ঠিক কীভাবে ক্ষতি করতে পারে ম্যালওয়্যার?
সন্দেহজনক অ্যাপের মাধ্যমে আপনার ফোন হ্যাক করতে পারলে এই ম্যালওয়্যার প্রথমেই আপনার থেকে সব নোটিফিকেশন পড়ার অ্যাকসেস চাইবে। তার পর সমস্ত কল আর লোকেশন অ্যাকসেসও চাইবে। সেগুলি ব্যবহার করে আপনার অজান্তেই নানা বিজ্ঞাপনের সঙ্গে ইন্টারঅ্যাকশন শুরু করে দেবে, আপনার নামে চালু হয়ে যাবে বহুমূল্য সাবস্ক্রিপশন।
আপনি বোঝার আগেই আপনার মেসেজ পড়ে, ওটিপি নিয়ে সে পেমেন্ট করে দেবে। যতক্ষণে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার অজান্তেই কেউ আপনার ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করছে, ততক্ষণে দেরি হয়ে যাবে। আর এমনিতে বুঝতেও পারবেন না যে ফোন হ্যাক হয়েছে।
কোন কোন অ্যাপ থেকে এই বিপদ হতে পারে?
সেটা জানানোর আগে বলে রাখা যাক, ‘জোকার’কে প্রথম আবিষ্কার করেছিল গুগল, ২০১৭ সালে। তখন থেকেই তাকে ঠেকিয়ে রাখার ব্যবস্থা নিয়েছে তারা। প্লে স্টোরের কিছু অ্যাপেই এই ম্যালওয়ার ঘাপটি মেরে থাকে। সম্প্রতি তেমন ৮টিকে চিহ্নিত করতে পেরেছে কুইক হিল সিকিওরিটি ল্যাব।
সেগুলি হল, অক্সিলিয়ারি মেসেজ, ফাস্ট ম্যাজিক এসএমএস, ফ্রি ক্যামস্ক্যানার, সুপার মেসেজ, এলিমেন্ট স্ক্যানার, গো মেসেজেস, ট্র্যাভেল ওয়ালপেপার আর সুপার মেসেজ। এগুলি ফোনে থাকলে অবিলম্বে আন-ইনস্টল করুন। রেটিং দেখে, রিভিউ পড়ে তবেই নতুন অ্যাপ নামাবেন, ফোনের সিকিউরিটি আপডেট করে রাখবেন। এছাড়া মোট ২২টি অ্যাপ আছে সন্দেহের তালিকায়।
আজকাল যেহেতু অনেক কাজই বাড়ি থেকে হচ্ছে, তাই গুরুত্ব বাড়ছে স্ক্যানার অ্যাপ, মেসেজ অ্যাপের। সেই ফাঁক দিয়েই তস্কর এসে ঢুকছে। তাই খুব ভালো ডেভেলপারের তৈরি অ্যাপ ছাড়া কোনও কিছু ব্যবহার করবেন না।
আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনটা কত পুরোনো?
অ্যান্ড্রয়েডের ভার্সন ৬.০ বা তার চাইতে পুরোনো মডেলের ফোন যাঁরা ব্যবহার করছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে কিন্তু সিকিউরিটি আপডেটের ব্যবস্থা নেই, এবং সমীক্ষা বলছে ভারতের অন্তত ৪০% মানুষ এই ধরনের ফোন ব্যবহার করেন। এঁদের মধ্যে অনেকেই বয়স্ক ও আধুনিক টেকনোলজিতে পোক্ত নন। তাই বিপদের আশঙ্কা বেশি।
কোন কোন বিষয় দেখলে সতর্ক হবেন?
. আপনার ফোনের ব্যবহার না বাড়লেও লাফিয়ে লাফিয়ে বিল বাড়ছে।
. ফোন গরম হয়ে যায় খুব তাড়াতাড়ি।
. মাঝে মাঝেই কোনও অ্যাপ খুললে ফোন ক্র্যাশ করে যায়।
. ডেটা খরচ হয় খুব তাড়াতাড়ি।
. মাঝে মাঝেই ফোনে সন্দেহজনক অ্যাপ দেখতে পান।
. প্রচুর পপ-আপ অ্যাড ঢুকতে থাকে।
এক্ষেত্রে কী করবেন?
প্রথমে গুগল প্লে স্টোর অ্যাপে যান। সেখানে মেনু বাটন (যেটি স্ক্রিনের বাম দিকে থাকবে) প্রেস করে গুগল প্লে প্রোটেক্ট এ ক্লিক করুন। স্ক্যান করে জেনে নিন আপনার ডিভাইস ঠিক কী অবস্থায় আছে। ম্যালওয়্যার থাকলে প্লে স্টোর সেগুলিকে রিমুভ করার অপশনও দেবে।
কোনও অ্যাপ ডাউনলোড করার আগেও সাবধান, প্লে প্রোটেক্ট ছাড়া নতুন অ্যাপ নামাবেন না। যদি ব্যাঙ্কিং সংক্রান্ত সব কাজ ফোন থেকেই করেন, তা হলে আধুনিক ফোন কিনে নেওয়াই আপনার পক্ষে সবচাইতে নিরাপদ হবে।