শীত মানেই একদিকে যেমন নরম রোদে গা সেঁকতে সেঁকতে কমলালেবুর খোসা ছাড়ানো, অন্যদিকে তেমনি টান ধরা ত্বক, হাতে পায়ে বিশ্রী খড়ির দাগ! তাই শীত পড়তে না পড়তেই তেল, ক্রিম, ময়শ্চারাইজার, লিপ বাম হয়ে ওঠে আমাদের নিত্যসঙ্গী। কিন্তু কড়া শীতে ত্বক ঠিকমতো আর্দ্র নরম রাখতে শুধু বাইরে থেকে পরিচর্যাই যথেষ্ট নয়। বাইরে থেকে ত্বকের যত্ন তো করবেনই, পাশাপাশি নজর দিন আপনার খাবারের তালিকায়।
কেন শীতে ত্বক সুস্থ রাখতে কিছু বিশেষ খাবার খাওয়া দরকার জানেন? আমাদের ত্বকের ওপরের স্তরে একটা লিপিড বা তেলজাতীয় আস্তরণ থাকে। এই আস্তরণ আর্দ্রতাকে ত্বকের গভীরে ধরে রাখে। কিন্তু প্রবল শীতে ত্বকের ওপরের এই আস্তরণটি নষ্ট হয়ে যায়, যার ফল খড়ি ওঠা রুক্ষ ত্বক। আপনি যদি কিছু নির্দিষ্ট খাবার খান, তা হলে এই আস্তরণটি অত সহজে নষ্ট হয় না, আপনার ত্বকও থাকে জেল্লাদার মোলায়েম। রইল তেমনি কিছু খাবারের হদিশ যা এই শীতে খেতেই হবে আপনাকে।
ওমেগা-থ্রি সমৃদ্ধ খাবার
ওমেগা-থ্রি ত্বকের তেল উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে ত্বক আর্দ্র রাখে। তেলওয়ালা মাছ বা তিসির বীজ খেলে ত্বকের লিপিড বেরিয়ার মজবুত হয়, ত্বক কোমল থাকে। যাঁদের মাছ পছন্দ নয়, তাঁরা ফিশ অয়েল সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন।
কোলাজেন সমৃদ্ধ খাবার
ত্বকের রূপযৌবন ধরে রাখতে কোলাজেনের ভূমিকার কথা অনেকেই জানেন। খাবারে কোলাজেন আর প্রোটিনের অভাব ঘটলে ত্বক শুকিয়ে যায়। তাতে অল্প বয়সেই মুখে বলিরেখা পড়ার ভয় থাকে। ত্বক সুস্থ রাখতে খাদ্যতালিকায় কোলাজেন সমৃদ্ধ খাবার রাখুন, বিশেষ করে শীতের দিনগুলোয়। মাংসের হাড়ের স্যুপ, লেবুজাতীয় ফল, ডিম, রসুনে কোলাজেন বর্ধক উপাদান রয়েছে।
ভালো ফ্যাট আর প্রোটিন
প্রবল শীতেও ত্বকের মসৃণতা ধরে রাখতে খাবারের তালিকায় রাখুন হেলদি ফ্যাট। সূর্যমুখীর বীজ, আমন্ড, চিয়া সিডস, আখরোটের মতো বাদামজাতীয় খাবার থেকে হেলদি ফ্যাট পাবেন। খাদ্যতালিকায় থাক অ্যাভোকাডো, অলিভ অয়েল বা ইভনিং প্রিমরোজ অয়েল।
ভিটামিন এ
শুধু ত্বকই নয়, সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্য ভালো রাখতে জুড়ি নেই ভিটামিন এ-র। ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখার পেছনে যে রেটিনল, সেটাও আসলে ভিটামিন এ। রেটিনল ত্বকের ইলাস্টিসিটি উন্নত করে এবং ফ্রি র্যাডিক্যালসের হামলা থেকে ত্বককে রক্ষা করে।
খাবারের তালিকায় রাখুন গাজর, রাঙালু, ব্রকোলি, স্কোয়াশের মতো সবজি। এ সব সবজি ত্বকের টিস্যু মেরামত করে এবং শীতের ত্বকের নিষ্প্রভভাব কমায়।
জল
শুধু শীতেই নয়, সারাবছর শরীর আর ত্বক আর্দ্র রাখতে জলের কোনও বিকল্প নেই। শীতের দিনে তেষ্টা কম পায়, ফলে জল খাওয়া কম হয়। ফলে শরীর জলশূন্য আর ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে। ত্বক ভেতর থেকে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল আর আর্দ্র রাখতে প্রতিদিন আট থেকে দশ গেলাস জল খান।