ঘর বেশিদিন বন্ধ করে রাখার পর ঢুকলেই একটা বাসি, ভ্যাপসা গন্ধ নাকে ধাক্কা মারে। যাঁরা একতলা বা দোতলার ঘরে থাকেন আর আশপাশে বড়ো বাড়ি আছে, অতি বৃষ্টিতে তাদের ঘরেও এমন একটা বিচ্ছিরি গন্ধ হয়। বালিশ, বিছানা, জাপাকাপড়, সব জায়গা থেকেই গন্ধটা নাকে এসে লাগে।
বাতাসে ভ্যাপসা গন্ধ থাকার অর্থ হচ্ছে, আপনার ঘরের মধ্যে ছত্রাকের উপস্থিতি আছে। প্রবল আর্দ্রতা, গরম, রোদ আর বাতাস চলাচলের অভাবে ফাঙ্গাস আর মোল্ডের বাড়বৃদ্ধি হয়। পুরোনো বাড়ির অন্ধকার কোণেও এই কারণেই স্যাঁতসেঁতে, ভারী বাতাস স্থির হয়ে থাকে। যাঁদের শ্বাসকষ্ট বা অ্যালার্জির সমস্যা আছে, তাঁরা এই সময়ে রীতিমতো ভোগেন।
যাঁদের ইমিউনিটি দুর্বল, তাঁদের ঝপ করে আক্রমণ করছে বাতাসে ভেসে থাকা ফাঙ্গাল স্পোর। তাই ঘরের বাতাস থেকে তাদের তাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে নিশ্চিত হয়ে নিন এসির ব্যাপারে – এসি পরিষ্কার রাখাও একান্ত জরুরি।
১. ঘরের মধ্যে ভেজা জামাকাপড়, তোয়ালে রাখবেন না
ভেজা যে কোনও জিনিস ঘরের বাতাসকে আরও ভারী করে তুলতে পারে। টানা বৃষ্টিতে বাইরে ভেজা জিনিস শুকোতে না পারলে আমরা ঘরের মধ্যেই তা মেলে রাখি। এতে কিন্তু ফাঙ্গাসের বাড়বৃদ্ধি হবে, কমবে না। কাপড় কাচার জলে ডিটারজেন্টের পাশাপাশি একটু ভিনিগার মিশিয়ে নিন।
ওয়াশিং মেশিন থাকলে ড্রায়ার ব্যবহার করে কাপড় শুকিয়ে নিন। না হলে বাথরুম বা বারান্দায় ঝুলিয়ে রেখে বেশিরভাগ জল ঝরিয়ে নিতে হবে। তার পর রাতে যে ঘরে কেউ থাকেন না, সেখানে দড়িতে ঝুলিয়ে পাখা চালিয়ে শুকিয়ে নিন। বসার ঘর বা বারান্দায় সেটা করতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়।
২. কর্পূরদানিতে কর্পূর রেখে জ্বালান
কর্পূর জ্বালানোর ব্যবস্থা করলে সুফল পাবেন। যাঁদের বাড়িতে পুজো হয়, তাঁরা কর্পূরদানি পাবেন, তা হলে ছোটো স্টিলের বাটিতে কর্পূর রেখে জ্বালান, পুরোটা পুড়ে গেলে ঘরের দরজা-জানলা বন্ধ করে দিন ১৫ মিনিটের জন্য। তার পর খুলে দিলে ঘরে কোনও গন্ধ থাকবে না, ফাঙ্গাস বিনষ্ট হবে। ডিফিউজারে কর্পূর রেখেও পুড়িয়ে নেওয়া যায়।
৩. বালিশ-তোষক রোদে দিন
যেদিন রোদ উঠবে, সেদিন বালিশ-তোষক রোদ খাইয়ে নিতে পারলে ভালো হয়। ঘরের জানলা-দরজা খোলা রাখুন। আলো-বাতাস চলাচল করা একান্ত জরুরি। কাপড়ের আলমারিতে ফ্রেশনার বা ডাঁটিসুদ্ধ নিমপাতা রাখুন, মাঝে মাঝে বই রোদে দিতে পারলেও খুব ভালো হয়। না হলে সেখানেও ন্যাপথালিন, নিমপাতা বা ফ্রেশনার রাখতে হবে।
৪. কোনও আসবাবে ছাতা ধরেছে?
একটা বোতলে সমান পরিমাণ জল আর ভিনিগার মিশিয়ে নিন। সারফেসের উপর স্প্রে করুন, একটু পরে মুছে নিন। আবার স্প্রে করুন, এবার আর মুছবেন না, ভিনিগার হাওয়ায় উবে যাবে। সব গন্ধ আর ফাঙ্গাস, দুটোই উবে যাবে।
৫. ভিনিগার, কফি আর বেকিং সোডা আপনাকে এই সমস্যা থেকে মুক্তি দেবে
ছোটো ছোটো বাটিতে ভিনিগার ঢেলে ঘরে রাখুন, বেকিং সোডাও রাখতে পারেন। ঘরের সব বাজে গন্ধ ভ্যানিশ হয়ে যাবে। দিনের শেষে ভিনিগার ফেলে দিন, সোডা ৩০ দিন ঠিক থাকবে। যাঁরা প্রতিদিন ফ্রেশ বীজ গুঁড়ো করে কফি বানান, তাঁরা কফি বীজের গুঁড়োও ঘরে রাখতে পারেন।