বাজার থেকে যখন লেবু কিনবেন, পাতাসহ কিনবেন। বিশেষ করে গন্ধরাজ লেবুর। ব্যাপারটা খুঁজে বের করা মোটেই কঠিন নয়, অনেক বিক্রেতাই পাতা সমেত লেবু আনেন বাজারে, বাড়িতে এনে ধোওয়ার সময়েই আমরা সেগুলি ফেলে দিই। আসলে কিন্তু এই পাতার অনেক গুণ আছে। তবে কেনার সময় তাজা পাতা কিনবেন এবং অবশ্যই ভালো করে ধুয়ে নেবেন – না হলে গাছে ব্যবহৃত রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসতে হবে।
গন্ধরাজসহ যে কোনও লেবুর পাতাতেই এসেনশিয়াল অয়েলের ভান্ডার থাকে। আর কিছু হোক না হোক, স্নানের জলে এক মুঠো লেবুর পাতা ফেলে রাখুন কিছুক্ষণ – হালকা গরম জলে ফেললে আরও ভালো বুঝবেন। জলে এমন চনমনে গন্ধ হবে যে স্নানের মজা বেড়ে যাবে অনেকটাই। পোষ্যকে যেদিন স্নান করাবেন, সেদিন এই পদ্ধতি অবলম্বন করে দেখতে পারেন। অনেকদিন রোগে ভুগলেও এই জলে স্নান করা যায়।
ভাতের ফ্যান গালার আগে তার মধ্যে এক মুঠো লেবুর পাতা ফেলে দিন। তারপর ফ্যান গেলে ওভাবেই রেখে দিতে হবে। ভাতে চমৎকার গন্ধ হবে। পরিবেশনের আগে পাতা তুলে ফেলে দিন। অনেকে ঘি বানানোর সময়েও লেবুপাতা দিয়ে রাখেন – তাতেও দারুণ স্বাদ হয়! থাই স্যুপ বানানোর পর খুব সরু সরু কুচি করে এই পাতা কুচিয়ে স্যুপে দিয়ে দিলেই হল – চমৎকার লাগবে খেতে।
রেস্তোরাঁয় গিয়ে গন্ধরাজ মাটন, চিকেন বা মাছ অর্ডার করেন? বাড়িতে মাংস রাঁধার পর কয়েকটা লেবুর পাতা আর লেবুর খোসা কুরিয়ে নিয়ে উপর থেকে ছড়িয়ে দিন, তার পর রান্নাটা ঢেকে রাখুন। পরিবেশনের সময় পাতা ফেলে দেখুন তো কেমন লাগে খেতে! চিংড়ি, ভেটকির মতো মাছের স্বাদও পালটে দেবে স্রেফ পাতা আর খোসা কুরানো। কেক বা টার্ট বানালেও স্রেফ এই ছোট্ট একটি উপাদান ম্যাজিকের মতো কাজ করবে।
ইতালির আমালফি সৈকতের লেবু খুব বিখ্যাত, তার স্বাদ-গন্ধ অতুলনীয়। সেখানে লেবুর পাতায় মুড়ে মাছ বা মাংসের নানা পদ রাঁধার চল আছে। তাজা সি-ফুড, বেসিল, অলিভ অয়েল, অরিগ্যানোর সঙ্গে লেবুর পাতা আর খোসার দুর্দান্ত স্বাদ-সিমফনি গড়ে ওঠে। সেখানে তো বিয়ের কনের ফুলের বুকেতেও লেবু পাতার সজ্জা থাকে!
লেবুর পাতা ফোটানো জল আপনি ঘরোয়া এয়ার ফ্রেশনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। শুকনো করে গাছের গোড়ায় দিলে তা পোকামাকড় ঠেকিয়ে রাখবে প্রাকৃতিভাবেই।