আমাদের মধ্যে অনেকেরই এই বদভ্যেসটি আছে। ডাক্তার বললেন, অমুক ওষুধ সকালে খেতে হবে, আমরা বিলকুল ভুলে তা লাঞ্চের পর খেলাম। বা তিনি বলেছেন তমুক ক্যাপসুল ১০টি খেতে হবে, আমরা ৫টির পর আর খাওয়ার উৎসাহ পেলাম না, কারণ তদ্দিনে রোগের লক্ষণগুলি নিয়ন্ত্রণে এসে গিয়েছে। কিন্তু এমনটা করলে আদতে ক্ষতি হয়, তার মাশুল চোকাতে হয় পরবর্তী অসুস্থতার সময়ে।
. মনে রাখবেন, ওষুধ আপনি টপ করে খেয়ে নিলেন আর সেটা ধাঁ করে কাজ করতে আরম্ভ করে দিল এমন হয় না। কিছু ওষুধ হয়তো খালি পাকস্থলীতে যে অ্যাসিড বা ক্ষার আছে, তার প্রভাবে কার্যকর হবে। সেটা আপনি ভরপেট খাওয়ার পর খেলে লাভ হবে না। যে ওষুধ সকালে খাওয়ার কথা, তার মধ্যে এমন কিছু থাকতে পারে যা সারা দিনের কাজের সময়ে আপনার রক্তে থাকবে। সেটা রাতে শোবার আগে খেলে হবে না।
. দরকারে মোবাইলে অ্যালার্ম সেট করে রেখে ওষুধ খান। ডাক্তারকে বার বার জিগ্যেস করে জেনে নিন কোন ওষুধ কখন খাবেন। সেটা খালি পেটে খেতে হবে, না ভরা পেটে। কোনওদিন ডোজ মিস করলে কী হবে, সেটাও আগেই জেনে রাখা দরকার। নির্দিষ্ট সময়ে ওষুধ খেলে আপনার রক্তে তার প্রবাহটা ঠিক থাকে – ডোজ মিস মানে সেই শৃঙ্খলটা ভেঙে যাওয়া।
. ধরুন, কোনও ট্যাবলেট সকাল ১০টা, বিকেল ৪টে আর রাত ১০টায় খাওয়ার কথা। সকালেরটা খেতে ভুলে গিয়েছিলেন, লাঞ্চের পর মনে পড়ায় দুপুর ২টোয় খেয়েছেন। তার পরের ডোজটা বিকেল ৪টেয় খাবেন কি? পেট খারাপ, জ্বরের ওষুধ কিন্তু অত কাছাকাছি সময়ে খেলে হিতে বিপরীত হতে পারে – রক্তে রাসায়নিকের পরিমাণ আচমকা বেড়ে যাওয়ার কোনও প্রতিক্রিয়া আছে কিনা জানুন।
. ডোজ পুরো করুন। যে ওষুধটা ৭দিন খাওয়ার কথা, সেটা মাঝে অসুখ কমে গেলেই বন্ধ করবেন না। ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে জেনে নিন রোগ নিয়ন্ত্রণে আসার কতদিন পর পর্যন্ত তা খেতে হবে। অনেকে ট্যাবলেট অর্ধেক করে খান, সেটা ভাঙার পর আদৌ কার্যকর থাকে কিনা জেনে নেওয়া দরকার।
. অনেকের মনে হয় যে ভিটামিন ই ক্যাপসুল কেটে তা মুখে, চুলে মাখলেই বুঝি ঝকমকে ত্বক-কেশরাশির মালিক হওয়া যায়। ব্যাপারটা একটু তলিয়ে ভেবে দেখুন। ক্যাপসুলটা এমন ফর্মুলায় তৈরি যা আপনার শরীরের ভিতরে গিয়ে রক্তে মিশে তবে কার্যকর হবে। সেটা মুখে মাখলে ত্বকে বা স্ক্যাল্পে রিঅ্যাকশনও হতে পারে। হয়তো অনেকেই বলবেন যে তাঁদের তেমন কোনও অসুবিধে হয়নি। তার মানে এই নয় যে তা আপনারও হবে না।
. কখনও, কোনও অবস্থাতেই অন্য কারও প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ খাবেন না, তার ফল হতে পারে মারাত্মক। আপনার অসুখের জন্য ডাক্তারের কাছে যান – কোনও ওষুধের ডোজ ঠিক করার আগে আপনার ওজন, লক্ষণ কত ইত্যাদি দেখে নিতে হবে। যেমন ইচ্ছে ওষুধ খেলে কিডনি বিকল হওয়ার আশঙ্কা রয়ে যায়।
. ওষুধ চলাকালীন মদ্যপান করবেন না। যাঁরা মাঝে সাঝে মদ্যপান করেন, তাঁরা আগেই ডাক্তারকে জানিয়ে রাখুন।