সারা দিন চার দেওয়ালের মধ্যে বন্দি জীবন কাটছে – এভাবে যে ঠিক ক’দিন আরও চালাতে হবে, তা জানা নেই কারও। বিশেষ করে বাচ্চা আর বয়স্কদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ, বন্দি জীবন কাটাতে তাঁরা হাঁফিয়ে উঠছেন। এই পরিস্থিতিতে অসহায় লাগারই কথা।
জানেন কি, খুব সহজ একটা উপায়ের মাধ্যমে আপনি বাড়ির পরিবেশে নিয়ে আসতে পারেন দারুণ পজিটিভিটি? উপায়টা হচ্ছে বাড়িতে গাছ লাগানো। ঘরের মধ্যে সারাক্ষণ থেকে যাঁরা বিরক্ত হয়ে যাচ্ছেন, তাঁরাও স্বচ্ছন্দে গাছের পরিচর্যা করতে পারবেন এবং তাতে মন ভালো থাকবে।
বাজার থেকে যে ফল, সবজি আসছে, তার খোসা, চাল ধোওয়া জল, চায়ের পাতা ইত্যাদি ফেলে দেবেন না — মুখ বন্ধ কোনও পাত্রে রেখে দিন। কয়েকদিনের মধ্যেই তা থেকে প্রাকৃতিক সার তৈরি হয়ে যাবে। গাছের গোড়া সামান্য আলগা করে অল্প সার দিয়ে দিন – গাছ বাড়বে তরতরিয়ে।
এবার প্রশ্ন, কোন গাছ লাগাবেন, কোথায়ই বা লাগাবেন? অনলাইনে পছন্দমতো গাছ কিনে নিতে পারেন। মোটামুটি সব হাইওয়ের আশেপাশেই ছোটো ছোটো নার্সারি থাকে, সেখান থেকেও গাছ কেনা সম্ভব। গাছের পরিচর্যা কীভাবে করা উচিত, সে সংক্রান্ত অনেক সাইট আছে, পারলে একটু পড়াশোনা করে নিন। অনেক গাছ আছে যেগুলি ঘরের মধ্যেই ভালো হয়।
তবে সেই সঙ্গে ভালো মানের মাটি জোগাড় করাও একইরকম জরুরি, তা না হলে প্রার্থিত ফল মিলবে না। নার্সারি থেকেই মাটি কিনে এনে গাছ লাগাতে পারেন। আশেপাশে কারও বাগান থাকলে সেখান থেকে মাটি আনা যায়। কোথাও রাস্তা খোঁড়া হতে দেখলেও মাটি চেয়ে নিতে পারেন।
যাঁরা একেবারেই বাইরে বেরোচ্ছেন না, তাঁরা কুমড়োর বীজ, উচ্ছের বীজ, লঙ্কার বীজ লাগান – পুরোনো রংয়ের বালতি বা বাতিল বেসিনগোছের কিছু থাকলে স্বচ্ছন্দে সেখানে আমের আঁটি বা পাতিলেবুর বীজ পুঁতেও দেখতে পারেন। খুব চড়া রোদ না লাগলেই গাছ বেরোবে। কুমড়ো বা লাউয়ের গাছ জানলার গ্রিলে লতিয়ে দিন – দেখতেও ভালো লাগবে। অর্কিডও রাখতে পারেন, চমৎকার ফুল ধরবে, খুব বেশি যত্নআত্তিও লাগবে না।
বাড়িতে অবহেলায় পড়ে থাকা ভাঙা কাচের কাপ, বাতিল বেসিন ইত্যাদিতে গাছ লাগাতে পারেন, অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তীর মতো সেই টবে বাহারি কারুকাজ এঁকে নিলেও দারুণ দেখাবে।
সামান্য সবুজের ছোঁয়ায় যে কোনও গৃহকোণের শোভা ঝলমলিয়ে ওঠে। গাছ থাকলে বাড়ে অক্সিজেনের জোগান, তা স্ট্রেস কমাতেও সাহায্য করে। ভুলে গেলে চলবে না যে সবুজ প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক চিরন্তন। তাই এ তথ্য বহুবার প্রমাণিত হয়েছে যে আশপাশে সবুজ গাছপালা থাকলে মানুষের মন ভালো থাকে।
ফোটো সৌজন্য: ইনস্টাগ্রাম