সংস্কৃতে একটা কথা আমরা মোটামুটি সবাই শুনেছি – মধুরেণ সমাপয়েৎ। অর্থাৎ, যে কোনও কাজের শেষটা মধুর হওয়া উচিত। তাই ভোজনের শেষে পরিবেষিত হয় মিষ্টান্ন। তখন পেটে বেশি জায়গা বাকি থাকার কথা নয়, চাইলেই আপনি পেট ঠেসে মিষ্টি খেয়ে ফেলতে পারবেন না।
কখনও বিশ্বের কোনও জাতির খাবারেই মূল পদ হিসেবে মিষ্টি পরিবেশিত হয় না। তাই যখনই খাবেন, খুব কম পরিমাণে মিষ্টি খান। সবচেয়ে ভালো হয় সপ্তাহে তিনবার অল্প পরিমাণ বরাদ্দ রাখতে পারলে।
মিষ্টি ফল
শেষপাতে মিষ্টি ছাড়া একেবারেই মন ওঠে না যাঁদের, তাঁদের প্রধান সহায় হতে পারে মিষ্টি ফল। যে কোনও তাজা মরশুমি ফলই মিষ্টি হয়, এবং নেহাত ডাক্তারের বারণ বা শারীরিক কোনও অসুবিধে না থাকলে দিনের যে কোনও সময়ে ইচ্ছেমতো খেতে পারেন প্রত্যেকেই।
আম, কলা,আপেল, সবেদা, আঙুর, কমলা, খেজুর, স্ট্রবেরি, কিউয়ির মধ্যে পছন্দমতো এক বা একাধিক ফল বেছে নিন। সবগুলি কুচিয়ে ঠান্ডা করে সামান্য নুন-লেবুর রস মেশালে চমৎকার ফ্রুট স্যালাড তৈরি হবে। সপ্তাহে এক-আধবার এর সঙ্গে এক স্কুপ বাড়িতে তৈরি ভ্যানিলা আইসক্রিম বা কেক নিতে পারেন। মেশানো যায় এক চাচামচ জেলি বা জ্যাম।
ডার্ক চকোলেট
ডার্ক চকোলেটের অনেক গুণ আছে – তার ফ্ল্যাভিনয়েড নামক অ্যান্টিঅক্সিডান্ট আপনাকে ভিতর থেকে শক্তপোক্ত করে তোলে, ঠেকিয়ে রাখে হৃদরোগের আশঙ্কা। তা নিয়ন্ত্রণ করে রক্তের ইনসুলিনের মাত্রাও – তবে বাজারচলতি সাধারণ মিল্ক চকোলেটে কিন্তু এই গুণগুলি মিলবে না।
মিল্ক চকোলেটে দুধ আর বাড়তি চিনি মেশানোর ফলে তার গুণ নষ্ট হয়। তবে এটাও ঠিক যে ডার্ক চকোলেটের স্বাদের সঙ্গে রাতারাতি অভ্যস্ত হওয়া যায় না। মোটামুটি 70 শতাংশ ডার্ক চকোলেটের সঙ্গে যদি টক-মিষ্টি স্বাদের বেরি বা লেবুজাতীয় ফল মেশানো হয়, তা হলে কিন্তু খেতে খুব ভালো লাগে।
ঘরে তৈরি ছানা আর মধু
বাড়িতে দুধ জ্বাল দিয়ে ছানা কাটিয়ে নিন। তার পর ছানাটা খুব মিহি করে মেখে তাতে মধু মিশিয়ে খেতে চমৎকার লাগবে। মধু, কিছু কিশমিশ, বাদাম বা শুকনো ফল মেশানো ছানা কলাপাতায় মুড়ে ভাপিয়ে নিলে আপনার প্রিয় ভাপা সন্দেশ তৈরি হয়ে যাবে!
নারকেলের মিষ্টি
ঘরে তৈরি ক্ষীর আর মিষ্টি নারকেল বাটা জ্বাল দিন। শেষে এক চিমটে ছোট এলাচের গুঁড়ো আর খুব অল্প চিনি মেশাতে পারেন। ঘি মাখানো থালায় ঢেলে ঠান্ডা করে নিয়ে বরফির আকারে কেটে নিন। উপর থেকে বাদামের কুচি ছড়িয়ে নিলেই আপনার নারকেল বরফি তৈরি! আর্টিফিশিয়াল সুইটনারের উপর ভরসা করার কোনও দরকার নেই – সপ্তাহে একবার এক টুকরো মিষ্টি খেলে তেমন কোনও অসুবিধে হবে না।
আমন্ড-খেজুরের মিষ্টি
ব্লেন্ডারে একসঙ্গে পিষে নিন আমন্ড বাদাম আর খেজুর। ক্লিং ফিল্মে খুব শক্ত করে মুড়ে রাখুন মিশ্রণটা। ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে নিয়ে ছোট ছোট টুকরোয় কেটে নেবেন, খেতে দারুণ লাগবে!