লিভার এমন একটি অঙ্গ যা ঠিকভাবে কাজ না করলে খুব মুশকিল। লিভার আমাদের শরীরে জমে ওঠা টক্সিনের প্রাথমিক ফিল্টার। তাই লিভারে সমস্যা মানেই শরীরে বড়োসড়ো কোনও ঝামেলা বাধবে। যদি আপনি সচেতন হন, তা হলে যথাসময়ে সতর্ক হয়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে পারবেন – দ্রুত চিকিৎসা শুরু হলে কিন্তু লিভারের সমস্যায় রাশ টানা সম্ভব।
লিভারের সমস্যা জেনেটিক হতে পারে, ওবেসিটি বা লাইফস্টাইলের কারণেও হতে পারে। এর প্রথম লক্ষণ হচ্ছে ক্লান্তি, দ্বিতীয় – খিদের অনীহা। লিভারের সমস্যা দেখা দিলে খাবার হজমে সমস্যা হবে, বদলে যাবে মল ও মূত্রের স্বাভাবিক রং। পা ফুলবে। পেটে ব্যথা হতে পারে, চোখ আর ত্বক হলদেটে হয়ে আসবে। ত্বকে দেখা দেবে র্যাশ, চুলকানি, দাগ-ছোপ। এর কোনও লক্ষণে ভুগলে আপনার ডাক্তারকে জানান। হেপাটাইটিস হলে তার একরকম চিকিৎসা হবে, ফ্যাটি লিভার হলে আর একরকম।
যাঁদের এই সব সমস্যার কোনওটাই নেই, কিন্তু লিভার সুস্থ রাখতে চান – তাঁরা কয়েকটা নিয়ম মেনে চলুন। খুব সাধারণ কিছু পরিবর্তন আনুন লাইফস্টাইলে, তা হলেই হবে।
. যাঁরা মদ্যপান করেন নিয়মিত, তাঁরা সাবধান। সারা সপ্তাহে ৮-১০টির বেশি ড্রিঙ্ক শরীরে গেলেই কিন্তু আপনি বিপদসীমার খুব কাছে চলে যাবেন।
. আপনি ট্যাটু করাতে ভালোবাসেন? তা হলে প্রতিবার ট্যাটু করানোর আগে পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে একেবারে নিশ্চিত হয়ে নিন। সূচের মাধ্যমে কিন্তু হেপাটাইটিস ছড়াতে পারে।
. ভ্যাকসিনেশন করান। হেপাটাইটিসের টিকা যথেষ্ট সহজলভ্য, পুরো পরিবারের সবার নিয়ে নেওয়া উচিত।
. দুমদাম ওষুধ খাবেন না। ডাক্তারের পরামর্শ নিন। ওষুধ খেলে মদ্যপান সংক্রান্ত নিয়মকানুন মেনে চলুন।
. বাতাবিলেবু কিন্তু লিভারের জন্য খুব ভালো – এর এমন কিছু অ্যান্টিঅক্সিডান্ট আছে যা লিভারকে সুরক্ষিত রাখে।
. আঙুর, ব্লুবেরি, ক্র্যানবেরি জাতীয় ফল লিভারের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। জানেন কি, পরিমিত মাত্রায় কফি আর চা খেলেও লিভারের ভালো হয়? বিশেষ করে ফ্যাটি লিভারের ক্ষেত্রে খুব ভালো গ্রিন টি। এক কাপ কালো কফি সকালের দিকে খেতে পারলেও সিরোসিসসহ নানা সমস্যা ঠেকিয়ে রাখা যায়।
. লিভারের সমস্যা থাকলে খাবার থেকে অতিরিক্ত ফ্যাট বাদ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় বটে, তৈলাক্ত মাছ, বাদাম কিন্তু খাওয়া যায়। খাবেন বিট আর সবুজ শাকপাতাও।
. চেষ্টা করুন ওবেসিটি নিয়ন্ত্রণে রাখার। দরকারে পুষ্টিবিদের সঙ্গে কথা বলে ডায়েট চার্ট বানিয়ে নিন। ভালো মানের তেলে রান্না করুন। লিভার সুস্থ থাকলে আপনার ত্বক আর চুলও ভালো থাকবে।
. বাড়তি চিনি খাবেন না, বেশি করে ফল-সবজি খান, জল খাওয়ার পরিমাণ বাড়ান।