অনেকেই আছেন, যাঁদের সারাদিন জল না খেয়ে থাকলেও কোনও অসুবিধে হয় না। এদিকে বাইরে তীব্র গরম, ঘাম হচ্ছে, আপনার পাশে বসা সহকর্মীটি বোতল দুয়েক জল শেষ করে ফেলেছে, কিন্তু আপনি মেরে-কেটে এক গেলাসের উপরে উঠতে পারেননি। কখনও মনে হয়েছে, কেন এমন হয়?
. একজন মানুষের শরীরে ঠিক কতটা জলের প্রয়োজন, সে বিষয়ে ডাক্তাররাও খুব নিশ্চিতভাবে কিছু বলতে পারবেন না। বলা হয়, একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৈনিক আট গ্লাস জল খাওয়া দরকার। কিন্তু ভারতীয় আয়ুর্বেদ শাস্ত্র বলে, এটা একেবারেই গড় হিসেব। মানুষের শরীরের আকার, আয়তন, শারীরিক শ্রম, ঘামের পরিমাণ ইত্যাদির উপর নির্ভর করে তার জলের প্রয়োজন পড়ে। যাঁদের পিত্তের ধাত, তাঁদের তেষ্টা পায় বেশি। তুলনায় কম তৃষ্ণার্ত বোধ করেন কফ বা বাতপ্রাবল্যের অধিকারীরা।
. আপনার কতটা জল দরকার কীভাবে বুঝবেন? মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস তৃষ্ণার বোধ চারিয়ে দেয়। বয়স হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই অঙ্গের সক্রিয়তা কমে, তাই বেশি বয়সে তেষ্টা পেলেও অনেক সময়ে বুঝতে অসুবিধে হয়, খুব ছোটো বাচ্চাদেরও এই বোধ পরিপক্ক হয়ে ওঠে না। তাই বাচ্চা ও বয়স্কদের তেষ্টা না পেলেও নিয়ম করে প্রতি দেড়-দু’ ঘণ্টায় খানিকটা জল খাওয়ানো উচিত। তবে তরল পানের ব্যাপারে বিধিনিষেধ থাকলে সেটা মেনে চলতে হবে।
. তেষ্টা পেলে বোঝা যায় শরীরে জলের প্রয়োজন তৈরি হয়েছে। তখন জলের জোগান না দিলে আপনার ডিহাইড্রেশন হয়ে যাবে। বমি, পায়খানা বা ঘাম হলে তেষ্টা না পেলেও জল বা কোনও তরল খাওয়া উচিত। কিন্তু যাঁদের তেষ্টা পায় না একেবারেই, তাঁরা কীভাবে বুঝবেন যে শরীরে জলের দরকার? ১. প্রস্রাবের রং দেখে। সুস্থ মানুষের প্রস্রাব হয় হালকা হলুদ, তাতে কড়া গন্ধ থাকে না। প্রস্রাব করতে গিয়ে জ্বালাভাবও হয় না। যদি প্রস্রাবের রং বা গন্ধে পরিবর্তন আসে, তা হলে তৃষ্ণা না থাকলে ও জল খেতে হবে। ২. ঠোঁট বা ত্বক শুকিয়ে গেলেও জল খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে।
. জল খান চুমুক দিয়ে, অল্প অল্প করে। ঢকঢকিয়ে খেলে শরীরে আতার যথাযথ আত্তীকরণ হয় না। খুব ভালো হয় হালকা গরম জল খেতে পারলে। ঠান্ডা জল হজমের পক্ষে সহায়ক নয় – এমনটা বলা হয় আয়ুর্বেদে।
. খাবার খাওয়ার ঠিক আগে বা পরে অনেকটা জল খেয়ে ফেলবেন না, তাতে হজমের সমস্যা হয়। আধ ঘণ্টা আগে বা পরে অবশ্য জল খাওয়া যায়।
. জলে জিরে, জোয়ান, মৌরি, মেথির মতো মশলা বা লেবু, পুদিনা ভিজিয়ে রেখে খান অনেকে। তার নানা উপকার আছে।