জোর চর্চা শুরু হয়েছে শিক্ষাক্ষেত্রে – ইউজিসি গত সপ্তাহেই ঘোষণা করেছে যে, এ বছর থেকে ইউজিসি পরিচালিত ও সাহায্যপ্রাপ্ত সমস্ত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক স্তরে ভর্তির ক্ষেত্রে মান্যতা পাবে কমন ইউনিভার্সিটি এন্ট্রান্স টেস্ট বা CUET স্কোর।
বারো ক্লাসের পরীক্ষায় যত নম্বরই পাক না কেন, কোনও ছাত্র বা ছাত্রীকে পছন্দের কলেজে ইচ্ছেমতো বিষয় নিয়ে পড়তে গেলে একটি কমন অ্যাডমিশন টেস্ট দিতেই হবে। বোর্ডের পরীক্ষায় ৯৯% নম্বর পেয়েও এই পরীক্ষার স্কোর ভালো না হলে অ্যাডমিশন মিলবে না। ইউজিসির আশা, আগামী দিনে রাজ্য পরিচালিত বা প্রাইভেট কলেজগুলিও CUET স্কোরকেই গুরুত্ব দেবে ভর্তির সময়ে।
কেন আচমকা এমন সিদ্ধান্ত নিল ইউজিসি? চেয়ারপার্সন জগদীশ কুমার মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলার সময়ে জানিয়েছেন, বিগত কয়েক বছর ধরেই বোর্ডের পরীক্ষায় ৯০%-এর বেশি নম্বর পাওয়ার জন্য ছাত্রছাত্রীরা পাগলের মতো প্রস্তুতি নিচ্ছে, কিন্তু আন্ডার গ্র্যাজুয়েট স্তরে বিশেষ কোনও একটি বিষয় নিয়ে পড়ার জন্য যে গভীর চিন্তাভাবনা করা দরকার, তার জন্য সময় নেই কারও। সেই ফাঁকটা কমাতে কমন এনট্রান্স টেস্ট নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে।
এমনিতেই দেশের প্রথম সারির বহু কলেজ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট স্তরে ভর্তির জন্য পরীক্ষা নেয় আলাদা করে। CUET চালু হয়ে গেলে বার বার পরীক্ষা দিতে হবে না – ফলে উপকৃত হবেন গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র ছাত্রছাত্রীরা, কারণ তাঁদের বার বার অ্যাডমিশন ফি দিয়ে পরীক্ষায় বসতে হবে না। কিন্তু ১২ ক্লাসের পরীক্ষা দেওয়ার পরে ফের পরীক্ষা দিয়ে যোগ্যতা প্রমাণ করাটাই বা কতটা যুক্তিপূর্ণ – সে প্রশ্নও উঠেছে। ইউজিসির বক্তব্য, এক এক রাজ্যের বোর্ড এক একভাবে পরীক্ষার্থীদের যোগ্যতাবিচার করে – সর্বভারতীয় স্তরে তাই নম্বরের সাযুজ্য থাকে না। কমন অ্যাডমিশন টেস্ট চালু হলে এই সংক্রান্ত সমস্যাও থাকবে না।
আপাতত ৪৫টি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় (যার মধ্যে পড়ে জেএনইউ, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্বভারতী, জামিয়া মিলিয়া ইত্যাদি) ছাড়াও মুম্বইয়ের টাটা ইনস্টিটিউট অফ সোশাল সায়েন্সেস, কলকাতার রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ এডুকেশনাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট CUET স্কোরকে মান্যতা দেবে বলা জানিয়েছে।
প্রথম পরীক্ষাটি হবে ২০২২-এর জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে, পরিচালনা করবে ন্যাশনাল টেস্ট এজেন্সি। আবেদন করতে হবে এপ্রিলের ২ তারিখ থেকে ৩০ তারিখের মধ্যে, পরীক্ষার আগে বিশদ তথ্য জানিয়ে দেবে ইউজিসি। সিবিএসই বোর্ডের ক্লাস ১২-এর সিলেবাসের উপর প্রশ্ন আসবে, তাই এনসিইআরটি পাঠ্যক্রম সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা বাঞ্ছনীয়। সাড়ে তিন ঘণ্টার পরীক্ষায় থাকবে মাল্টিপল চয়েজ প্রশ্ন।