এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর যে নিজেকে সুন্দর করে তুলে ধরতে চায় না। কিন্তু ইদানীং একেবারে নতুন একটা ট্রেন্ড তৈরি হয়েছে – অন্য কে কী বলবে তা না ভেবে অনেকেই নিজেদের মতামতকে বেশি গুরুত্ব দিতে আরম্ভ করেছেন। অস্বাভাবিক বিউটি স্ট্যান্ডার্ডের পিছনে না দৌড়ে নিজেদের স্বাভাবিক চেহারাতেই স্বচ্ছন্দ হওয়ার চেষ্টা করছেন এঁরা।
প্রথমেই আসা যাক কুশা কপিলার প্রসঙ্গে। কুশা অতি জনপ্রিয় ইনস্টা ইনফ্লুয়েন্সার। তাঁর পোস্টে করিনা কাপুর, করণ জোহররা লাইক দিয়ে যান। বলিউডে এই কনটেন্ট ক্রিয়েটারের কথা ভেবে চরিত্র লেখা হয়। মনীশ মালহোত্রার মতো সেলেব্রিটি ডিজাইনারের পোশাকের মডেলিং করেন কুশা।
এঁর ইনস্টা পেজে নজর রাখলেই দেখবেন, দিল্লিনিবাসী এই তরুণ কনটেন্ট ক্রিয়েটার নিজের খুঁতগুলি নিয়ে কতটা স্বচ্ছন্দ। কুশার অ্যাডাল্ট অ্যাকনের সমস্যা আছে, মাঝে মাঝেই তাঁর মুখ ভরে যায় ব্রণর উৎপাতে। তাঁর ডিপ্রেশন হয় মাঝে মাঝে, রাতে না ঘুম হলে চোখের তলায় ব্যাগ হয়ে যায় – ঠিক আমার-আপনার মতোই। আর সে সব তাঁর ইনস্টা পোস্টে বা স্টোরিতে দেখাতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেন না কুশা।
তারকা হলেই যে তাঁকে মোমে মাজা ত্বক আর রেশম-কোমল চুলের মালিক হতে হবে তার কোনও মানে নেই! তাঁদের ছবিতে সারাক্ষণ ফোটোশপ করা হয়, তাতেই ঢাকা পড়ে সব খুঁত। তাই তাঁদের দেখে নিজের জন্য অবাস্তব কোনও লক্ষ্য স্থির করবেন না। সুস্থ থাকার চেষ্টা করুন, সেটাই আপনাকে সুন্দর রাখবে।
দ্বিতীয় যাঁর কথা না বললেই নয়, তিনি হলেন অভিনেত্রী সমীরা রেড্ডি। আমাদের বয়স হলে শরীরের গড়নে পরিবর্তন আসে। ত্বকে দাগ-ছোপ পড়ে। সন্তানের জন্মের পর পেটে মেদবাহুল্য বাড়ে। কিন্তু এই সত্যিগুলো মেনে নিতে খুব অসুবিধে হয়। বয়স লুকিয়ে রাখতে চুলে ডাই করতে হয় – কিন্তু ইদানীং বহু মহিলাই এই ধরাবাঁধা নিয়মের বাইরে বেরোতে চাইছেন। তাঁদেরি একজন সমীরা।
সমীরা তাঁর ইনস্টা পোস্টে লিখেছেন, একটা সময়ে সাদা চুল লুকোতে তিনি প্রতি ১৫ দিনে একবার হেয়ার ডাই লাগাতেন। এখন কেবল ইচ্ছে হলে তবেই লাগান। “আমার বাবা এত পাকাচুল দেখে রীতিমতো ঘাবড়ে গিয়েছিলেন, ওঁর ভয় ছিল, সমাজ আমার এই চেহারাটা দেখে মুখ ফিরিয়ে নেবে না তো? কিন্তু আমি বাবাকে বুঝিয়েছি, সমাজ কী ভাবছে বা বলছে তাতে আমার আর কিছুই যায় আসে না। আমি নিজের জন্য বাঁচি, আর এই কোনও কিছুতেই পাত্তা না দেওয়ার মধ্যে একটা স্বাধীনতা আছে।”
অন্যের ছকে নিজের জীবনকে ফেলার ভুলটা করবেন না। ইচ্ছে মতো বাঁচুন। যদি মনে হয় ঝকঝকে মসৃণ ত্বকের মালিক না হলে চলবে না, নিশ্চিতভাবেই তা পাওয়ার চেষ্টা করুন। কিন্তু ব্রণ বা মেচেতা থাকলেও আপনার স্বপ্ন সফল হওয়া আটকাবে না!