গরমকালে এমনিতেই ঘাম হয়, মাথা ঘোরে, বেশিক্ষণ রোদে থাকতে বাধ্য হলে চোখে অন্ধকার দেখাও বিচিত্র নয়। কিন্তু হিট স্ট্রোক হয়েছে কিনা বুঝবেন কীভাবে? তার চেয়েও বড়ো কথা হচ্ছে, স্রেফ মানুষ নয়, পশুপাখিরাও অতিরিক্ত গরমে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারে। হিট স্ট্রোক খুব তাড়াতাড়ি মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস অংশকে প্রভাবিত করে, তাই তার চিকিৎসা হওয়া উচিত দ্রুত। তা হলে ক্ষতি কম হয়।
কীভাবে বুঝবেন যে গরম শরীরের ক্ষতি করতে আরম্ভ করেছে?
. শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে আরম্ভ করবে, নাক-মুখ দিয়ে মনে হবে হলকা বেরোচ্ছে। হিট স্ট্রোক হলে কিন্তু ঘাম হওয়া বন্ধ হয়ে যায়, শরীর উত্তরোত্তর গরম হতেই থাকে। ত্বকেও লালচেভাব দেখা দেবে।
. মাথা ঠিকমতো কাজ করবে না। সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না, ঝিমুনি আসবে, কথা জড়িয়ে যেতে পারে। এরকম হলেই ছায়ায় সরে আসার চেষ্টা করতে হবে।
. গা বমিভাব, বমি হওয়ায় হিট স্ট্রোকের অন্যতম লক্ষণ। যদি এই গরমে রাস্তায় অন্য কোনও মানুষ বা পশুকেও বমি করতে দেখেন, তা হলে এগিয়ে যান, সরিয়ে আনুন ছায়ায়, মুখে-চোখে জলের ঝাপটা দিন ভালো করে।
. মাথায় দপদপানি ব্যথা হতে পারে। বেশি গরমের দিনে অবশ্যই ছাতা বা টুপি ব্যবহার করুন – সরাসরি মাথায় রোদ লাগতে দেবেন না। পশু-পাখিকেও ছায়ায় সরিয়ে রাখতে হবে।
. জোরে জোরে শ্বাস নেওয়া বা বুক ধড়ফড়ানি হতে পারে হিট স্ট্রোকের আক্রান্ত হলে।
কোন কোন সাবধানতা মেনে চলা উচিত?
. সকাল দশটা থেকে তিনটে পর্যন্ত রোদের তেজ সবচাইতে বেশি থাকে, সে সময়টা ছায়ায় থাকতে পারলে সবচাইতে ভালো হয়। যদি রোদে কোনও কারণে অপেক্ষা করতেই হয়, তা হলে অল্প করে জল খান, মাথায় ছাতা দিন। মুখে-ঘাড়ে ভেজা তোয়ালে বুলিয়ে নিতে পারেন। পোষ্য বা রাস্তার কুকুর-বেড়ালকে রোদ থেকে সরিয়ে ছায়ায় রাখুন। নিয়মিত চান করিয়ে দেবেন।
. খালি পেটে রোদে বেরোবেন না, দুর্বল শরীর এই তীব্র দাবদাহ সইতে পারবে না। দই-চিড়ে জাতীয় হালকা খাবার খান। তরমুজ, শসা, আঙুর খাওয়াও খুব ভালো।
. যদি মনে হয় শরীর শুকনো আর গরম হয়ে যাচ্ছে, তা হলে ভালো করে ঠান্ডা জলে স্নান করুন – জ্বর হলে যেভাবে জলপটি দিয়ে বা জল ঢেলে শরীরের তাপ নামানো হয়, হিট স্ট্রোকের ক্ষেত্রেও ঠিক তেমনটাই করা উচিত। মাথা, ঘাড়, বগলে বরফ দিয়েও তাপ কমানো সম্ভব।
. যত শিগগির সম্ভব একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন, প্রয়োজনে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
. গরমে শরীর ঢেকে রাখুন। সুতি বা লিনেনগোছের মেটিরিয়ালের পোশাক পরা উচিত।