নতুন বছর শুরু হয়ে প্রায় দু’সপ্তাহ পেরিয়ে গেল! গত বছরটা আমাদের শিক্ষা দিয়ে গেছে অসময় কাকে বলে, অসময়ে হাতে একটু বাড়তি টাকা থাকলে কী কী সুবিধে হয়! সত্যি বলতে কোভিড অতিমারি যতটা আঘাত করেছে জনস্বাস্থ্যে, তার চেয়ে কোনও অংশে কম নয় অর্থনীতির ওপরে তার প্রভাব। বিশেষজ্ঞদের মতে বিশ্ব অর্থনীতির ওপর কোভিড যে আঘাত নামিয়ে এনেছে তার প্রভাব কাটতে এখনও অনেকটাই সময় লাগবে। তাই টাকা জমানোর কোনও বিকল্প নেই, আর নতুন বছরের প্রথম মাস থেকেই যদি সেটা শুরু করে দিতে পারেন তা হলে তো সোনায় সোহাগা!
নিশ্চিতভাবেই ভাবছেন সংসারের এতরকম খরচ বাঁচিয়ে টাকা জমাবেন কী করে! আসলে টাকা জমাতে হলে খুব বড় করে শুরু না করলেও চলে। ছোট ছোট কিছু পদক্ষেপ করলেই দেখবেন মাসের শেষে বেশ খানিকটা বাড়তি টাকা আপনার হাতে থেকে যাচ্ছে। আমাদের দেওয়া টিপসগুলো শুধু মাথায় রাখুন!
অব্যবহৃত সাবস্ক্রিপশন বাতিল করে দিন
অনেক সময়ই নানান ম্যাগাজিন, ওয়েব প্ল্যাটফর্মের সাবস্ক্রিপশন আমরা ঝোঁকের মাথায় নিয়ে নিই, তারপর সময়ের অভাবে ম্যাগাজিনও পড়া হয় না, ওয়েব সিরিজও দেখা হয় না। এরকম কোনও সাবস্ক্রিপশন নিয়ে ফেলে রেখেছেন কিনা দেখুন, থাকলে ক্যানসেল করে দিন। বাড়িতে কেবল টিভি থাকলে যে চ্যানেলগুলো নিয়মিত দেখেন, সেগুলো ছাড়া বাকি সব চ্যানেল ছেড়ে দিন। মাসের শেষে খানিকটা টাকা সাশ্রয় হবে।
মোবাইল ফোনের প্ল্যান যাচাই করে নিন
মোবাইল কতটা ব্যবহার করছেন, ফোন ইন্টারনেট বাবদ কত খরচ হচ্ছে, মিলিয়ে দেখুন। প্রয়োজনের চেয়ে বেশি দামের প্ল্যান নেওয়া আছে মনে হলে বদলে ফেলুন প্ল্যান।
নজর রাখুন সেলের দিকে
সেলের যেমন সুবিধে হল দরকারি জিনিস কম দামে পাওয়া যায়, তেমনি অসুবিধের দিকটা হল, সেলের লোভে পড়ে আমরা অনেকেই হামলে পড়ে প্রচুর জিনিসপত্র কিনে ফেলি যার আসলে কোনও দরকার নেই। তাই সেল দেখলেই ঝাঁপিয়ে পড়বেন না, যতটুকু দরকার ততটুকুই কিনুন।
অপ্রয়োজনীয় জিনিস বেচে দিন
বাড়িতে এমন অনেক জিনিস পড়ে থাকে যার কোনও দরকার নেই। সে সব জিনিস মোটামুটি ব্যবহারযোগ্য থাকলে অনলাইনে বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা করুন। আজকাল পুরনো জিনিস বিক্রির অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে। একটু সময় দিতে হবে আপনাকে, কিন্তু বিক্রি করে দিতে পারলে বাড়তি কিছু টাকা আসবে ঘরে।
খরচ কমান
খরচ কমানো বলতে সব কিছু। রেস্তোরাঁয় খাওয়া থেকে শুরু করে, জামাকাপড় কেনা থেকে শুরু করে মাসকাবারি জিনিসপত্র পর্যন্ত সব ক্ষেত্রে খরচের হাত কমাতে হবে। একটু প্র্যাকটিস করলেই ব্যাপারটা অভ্যেসে চলে আসবে, তখন আর অসুবিধে হবে না।
ছেড়ে দিন ক্রেডিট কার্ড
হাতে ক্রেডিট কার্ড থাকলে যেহেতু টাকাটা তক্ষুনি দিতে হচ্ছে না, তাই অনেক সময়ই বেহিসেবি খরচ হয়ে যায়। খরচ কমাতে আর সাশ্রয় করতে হলে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় একেবারেই ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার না করলে। অনলাইন সাইটে কেনাকাটার অভ্যেস থাকলে সেখান থেকে ক্রেডিট কার্ড ডিটেলস মুছে দিন।
মন খারাপ করবেন না
চেনা খরচের অভ্যেসে রাশ টানতে হলে মন খারাপ হওয়া স্বাভাবিক। নিজেকে বোঝান, এই ব্যবস্থা নিতান্তই সাময়িক। মাঝেমধ্যে দু’একদিন রেস্তোরাঁ বা কফিশপে গেলেও ক্ষতি নেই, তবে তা যেন নিয়ম না হয়ে দাঁড়ায়। এক সপ্তাহ করে টার্গেট সেট করুন নিজের সামনে, সেই সময়টা কড়া হাতে খরচ নিয়ন্ত্রণ করুন। মাসশেষে হাতে বাড়তি পয়সা থেকে গেছে দেখলে মন খারাপ উবে যেতেও বেশি সময় লাগবে না, গ্যারান্টি!